ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

নতুন করে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয় লাখের বেশি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
নতুন করে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয় লাখের বেশি নদী পথে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা, ছবি: বাংলানিউজ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অব্যাহত গণহত্যা, গণধর্ষণের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয় লাখের কাছাকাছি।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছে, পাঁচ লাখ ৮২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা গত ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা আরও লাখ খানেক বেশি।

এছাড়া আগে থেকেই চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে থাকেন। সর্বমোট ১০ লাখ ছাড়িয়েছে।

সংস্থাটির তথ্যে জানা যায়, গত এক সপ্তাহেই ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। যা নতুন করে রোহিঙ্গা ঢলের সমান। এটি না থামলে পরিস্থিতি আরও আশঙ্কাজনকে রূপ নেবে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র আন্দ্রেই মাহেসিচ (Andrej Mahecic) বলেছেন, এটি একটি গভীর উদ্বেগের। নতুন করে বহু মানুষ আসছেন। তারা সীমান্তে এবং জিরো পয়েন্টে আশ্রয় নিচ্ছেন। সীমান্তে এখনও অপেক্ষমান অন্তত ১৫ হাজার।

আরও পড়ুন: গ্রামের পর গ্রাম জ্বালানোর প্রমাণ দিলো এইচআরডব্লিউ
 
এদিকে রাখাইনের উত্তর অংশের ২৮৮ গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রমাণ দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এসব গ্রামে ২৫ আগস্টের আগে বসতভিটা ছিল, ছিল সাজানো-গোছানো সংসার; যার সবই এখন অতীত। মঙ্গলবার নতুন করে প্রকাশিত স্যাটেলাইট চিত্র বিবৃতিতে পাঠিয়ে এইচআরডব্লিউ এ প্রমাণ দিয়েছে। এর আগে মধ্য সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাজ্যর রোহিঙ্গা-গ্রামগুলোতে সহিংসতার স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে। সেখানেও ফুটে ওঠে ধ্বংসযজ্ঞ।

এইচআরডব্লিউ’র ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন বলেন, এই চিত্রই প্রমাণ করে কেন মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে স্রোতের মতো বাংলাদেশে ঢুকেছে। বার্মিজ সেনারা গণহত্যা, ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী নানা কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, এতে মানুষ আসলে বাধ্য হয়েছে।

আগামী সোমবার (২৩ অক্টোবর) সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে হতে যাচ্ছে ‘প্লেজিং কনফারেন্স’। যার উদ্যোগ নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও কুয়েত সরকার।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট। ওই তারিখের দিনগত রাতে রাখাইনে পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, জাতিগত দ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে দেশটির উত্তর-পূর্ব রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। সহিংসতার শিকার হয়ে গত বছরের অক্টোবরেও প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।