ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

সেনাবাহিনী গণধর্ষণ করেছে রোহিঙ্গাদের, মিললো প্রমাণ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭
সেনাবাহিনী গণধর্ষণ করেছে রোহিঙ্গাদের, মিললো প্রমাণ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নারী, ছবি: সোহেল সরওয়ার, বাংলানিউজ

শামিলা নামের এক নারী বলছিলেন তার সন্তানদের সামনেই তাকে গণধর্ষণ করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা। শুধু সেনারাই নয়, এই তালিকায় আছে স্থানীয় মগরাও।

শামিলা তার ছদ্মনাম। তার মতো কাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর প্রত্যেক ছাউনি ছাউনিতে।

কক্সবাজারে জাতিসংঘের মেডিকেল টিম রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, গণধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছে। একবার নয়, একাধিকবারও অনেকে এই পাশবিকতার শিকার।

কেবল গণহত্যাই নয়, সন্তানের সামনে মাকে; মায়ের সামনে মেয়েকে ধর্ষণের মতো করুণ ও ঘৃণ্য কাজ করেছে মিয়ানমার সেনাদল।

মেডিকেল ক্যাম্পে এমনও অনেক নারী এসেছেন যারা এই পাশবিকতার শিকার হয়ে অসুস্থ, তাদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প, ছবি: বাংলানিউজতবে অভিযোগ প্রসঙ্গে রীতিমতো ভিন্ন সুর দেশটির প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র জ হাতয়ের ভাষায়। দিয়েছেন এ বিষয়ক গৎবাঁধা উত্তর। তিনি বলেন, নারীরা যারা ধর্ষণের শিকার হয়েছেন তারা আমাদের কাছে আসতে পারেন। আমরা তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা দেবো। পাশাপাশি অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।

জাতিসংঘের হয়ে কাজ করা চিকিৎসক তাসনুভা নওরীন বলেন, নারীদের জবরদস্ত করে আক্রমণ চালানো হয়েছে। এমন অনেক নারীর শরীরেই আঘাতের বহু চিহ্ন পাওয়া গেছে।

তবে অনেকেই ক্যাম্পে এসে লজ্জা-সংকোচবোধে তাদের ওপর চরম অমানবিক নির্যাতনের কথা লুকিয়ে রাখছেন বলে জানান তিনি। এতে ঠিক কত নারী ধর্ষণের শিকার হয়ে পালিয়ে এসেছেন তার সঠিক তথ্য নেই কারো কাছে। শিশুরা যেমন সহিংসতা দেখে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ঠিক তেমনি নারীরা সহিংসতার পাশাপাশি ধর্ষণের মতো অভিজ্ঞতার শিকার হয়ে আরও বেশি ভেঙে পড়েছেন। তাদের জন্য উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন; মানসিক ও শারীরিক দুভাবেই।  

সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।

জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি (যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বিষয়ক) প্রমিলা প্যাটেন বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে নারীদের ওপর যা হয়েছে তা গুরুতর উদ্বেগের।

ত্রাণকর্মীরা বলছেন, শুধু হত্যা-গণহত্যাই নয়, ধর্ষণও রাখাইনের অনেক বড় অপরাধ। এজন্যও বহু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। এখনও আসছেন।

জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) বলছে, সহিংসতার শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সাড়ে চার লাখ। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়িয়েছে। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই।

ঘটনাসূত্র আরও জানতে পড়ুন:
রোহিঙ্গারাই বোমা ফাটাচ্ছে, ফের দোষারোপ সেনাপ্রধানের
জাতিসংঘ মহাসচিবের পাবলিক ব্রিফ চায় অর্ধ নিরাপত্তা পরিষদ
রাখাইনে এখনো পোড়ানো হচ্ছে রোহিঙ্গাদের গ্রাম
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া শুরু হতে পারে: সু চি
যা আছে আনান কমিশনের সুপারিশে

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৪
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad