ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

কূটনীতিক প্রবেশে বাধা না দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
কূটনীতিক প্রবেশে বাধা না দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আহ্বান রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, ছবি: দীপু মালাকার

যুক্তরাষ্ট্রের পর এবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে কূটনীতিক পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা।

আরও পড়ুন: খাদ্যের অভাবে রোহিঙ্গা শিশুদের মৃত্যুর আশঙ্কা

জানা গেছে, পশ্চিমা আরও কয়েকটি দেশ সেখানে তাদের প্রতিনিধি পাঠানোর বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে।

রোহিঙ্গাদের সমর্থনে কানাডার টরন্টোতে এক সভায় দেশটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাখাইনে কূটনীতিক অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়া সাজে না, ওই স্থানটি এখনই উন্মুক্ত করতে হবে।

‘রোহিঙ্গাদের হত্যা বন্ধ করুন, সু চি নীরবতা ভাঙুন’

শুধু কূটনীতিকই নয়, সেখানে সেনাবাহিনী সাংবাদিক অনুপ্রবেশও বাধা দিচ্ছে। প্রতিদিনই অভিযানের নামে কত মানুষকে যে হত্যা করা হচ্ছে তার সঠিক চিত্র তুলে আনা যাচ্ছে না। তিন হাজার মৃত্যুর খবর গত সপ্তাহ খানেক ধরে একই আছে। এরপর আর নতুন তথ্য মেলেনি। যদিও বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা ১০ হাজার পার করেছে।

পাশাপাশি সহিংসতার জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। তাদের বর্ণনাতেও উঠে আসছে নৃশংসতা।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের উপ-সহকারী মন্ত্রী প্যাট্রিক মারফিকে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা পরিদর্শনে যেতে দেবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে মিয়ানমার। সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে পেট্রিকের আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে মিয়ানমার যাওয়ার কথা। সফরকালে তিনি মানবিক সহায়তা সংস্থা ও সংবাদকর্মীদের রাখাইনের সংঘাতময় এলাকায় যেতে দেওয়ার অনুরোধ জানাবেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের কথা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন।  

জানা যায়, রাজ্যের রাজধানী সিটওয়েতে সফর করতে অনুমতি পেতে পারে তিনি। সেখানে রাজ্য গভর্নরের সঙ্গে হতে পারে সাক্ষাৎ। কিন্তু ২৪ আগস্টের পর সেনা অভিযান চলা উত্তরাঞ্চলের মংডু জেলা পরিদর্শনের যাওয়ার অনুমতি তিনি পাবেন না। মংডুতে ত্রাণ কর্মীদের যাওয়াও এক রকম নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের চাপেও কোনো কাজ হচ্ছে না। যদিও সরকার এটিকে ‘নিরাপত্তাজনিত’ বলে আখ্যা দিচ্ছে। অন্যদিকে সরকার এও বলছে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নয়। তারা ‘বাঙালি সন্ত্রাসী’।

এর আগে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিকে ফোন দিয়েছিলেন। সেসময় তিনি গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে সেনা অভিযান বন্ধেরও আহ্বান জানান। কিন্তু কাজ হয়নি।

কানাডিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড ওই এলাকায় সহিংসতার চিত্র পুরোপুরি তুলে আনার বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, সেখানে আমাদের রাষ্ট্রদূত যাওয়ার অনুমতি চেয়েছেন। যাতে করে আমরা নির্ণয় করতে পারি সেখানে কী রকম সংঘাত ঘটছে বা ঘটেছে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘের অধিবেশনে তিনি এবং তার দেশের প্রধানমন্ত্রী কথা বলবেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সংস্থাটির ৭২তম এই অধিবেশন শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর)।

ফ্রিল্যান্ড বলেন, রোহিঙ্গাদের বিপর্যয় আমাদের ছুঁয়ে গেছে। এটি একটি বড় ইস্যু। যার সমাধানে আলোচনা করা অতি প্রয়োজন। রাখাইনে যা ঘটে চলেছে এতে আমরা গভীরভাবে নিন্দা জানাচ্ছি, এ ব্যাপারে সু চির সঙ্গেও কথা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।

তিনি উল্লেখ করেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি ইতোমধ্যে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের সঙ্গেও কথা বলেছেন। কারণ সমাধান অচিরেই দরকার।

রোহিঙ্গা নিধন বন্ধের এটাই শেষ সুযোগ, সু চিকে জাতিসংঘ

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।