ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

টিউমারেই জীবন বরবাদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৮ ঘণ্টা, জুন ৮, ২০১৭
টিউমারেই জীবন বরবাদ টিউমারেই জীবন বরবাদ

শারীরিক কোনো ত্রুটি ছাড়াই জন্ম নিয়েছিলেন ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভার ওয়ানাকার্তা গ্রামের হেরদি ফেরমান্সিয়াহ।কিন্তু  বয়স যখন তিনমাস তখনই ঘটল বিপত্তি।

ডানচোখের চোখের উপর জন্ম নিল এক টিউমার। ডাক্তাররা তা অস্ত্রোপচার করে ফেলেও দেন।

কিন্তু আজও, এই ৩৪ বছর বয়সেও, হেরদি ফেরমান্সিয়াহকে রেহাই দেয়নি সেই বেয়াড়া টিউমার। বরং মূর্তিমান আপদ হয়ে এটি তার গোটা অস্তিত্বকেই গ্রাস করতে চাইছে। বড় হতে হতে এটি তার একটি চোখ পুরো ঢেকে দিয়েছে। দেখতে হাতির শুঁড়ের মতো এই টিউমার ভারী হয়ে ঝুলছে চোখের অনেক নিচ পর্যন্ত। ঢাউস আকারের ঝুলন্ত টিউমারটিকে ধরে ঘোরাতে হয় বা নাড়াতে হয়।  

হেরদি ফেরমান্সিয়াহর বয়স বাড়ার সাথে সাথে টিউমারটিও বড় হতে হতে প্রায় গলা পর্যন্ত ঝুলে পড়ে আর ডান চোখের পুরোটাই ঢেকে দ্যায়।

এমনকি এ অবস্থার কারণেই হেদরিকে ছোটবেলায় স্কুলে ভর্তি করা গেলেও স্কুল ছাড়তে হয় তাকে। টিউমার নিয়ে গোটা স্কুলের বাচ্চাদের টিটকারি-মস্করায় জীবন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছিল তার। এরপর আর কোনো স্কুলে ভর্তি হওয়ার ভাগ্য হয়নি তার। অথবা কোনো স্কুলই তাকে ভর্তি করতে চায়নি।    

টিউমারটিকে এ নিয়ে মোট পাঁচবার অপরেশন করে ফেলে দেয়া হয়। কিন্তু তবু এটি প্রতিবারই গজিয়েছে আরও নতুন করে, আরো বীভৎস আকার নিয়ে। এখন তার সারা গায়ে ছড়িয়ে পড়েছে টিউমার। নতুন করে ছোট ছোট আকারে। তার হাত, পেট, পিঠ আর পায়ে।

হেরদির আত্মীয়রা এখন তার জীবন নিয়েই শঙ্কিত। তারা মনে করছেন এই টিউমারটিই তার মৃত্যুর কারণ হবে। আর এলাকার লোকজন তাকে দেখলেই ভয় পায়। তাই তাকে এড়িয়ে চলে। এজন্য ঘরের বাইরে বের হতে পারেন না হেরদি। এক প্রকার গৃহবন্দি জীবন কাটাতে হয় তাকে। এমনকি বাচ্চাদের যখন আদর করেন তখন বাচ্চারাও ভয়ে সিঁটিয়ে যায়। সব মিলিয়ে তার জীবনটাই বরবাদ করে দিয়েছে এই টিউমার নামের আপদ।

হেদরির বাবা এস সুগন্দা(৮২) বলেন, “ওর চিকিৎসা করাতে গিয়েই আমরা এখন ফতুর হয়ে গেছি। আমাদের একটা বাড়িও বেচতে হয়েছে। এখন আমরা সরকারের কাছে সাহায্য চাইছি, নয়তো বাঁচাটা কঠিন হয়ে যাবে।

সরকার সহযোগিতা করে উন্নত চিকিৎসার ব্যাবস্থা করে দিলে হয়তো হেদরির সুন্দর ভবিষ্যৎ দেখতে পাবে বলে আশা করে তার বাবার।

হেদরির মা মারিয়া(৭৭) জানান, “ও সুস্থ বাচ্চা হিসেবেই জন্মগ্রহণ করেছিল। কিন্তু তিন মাস বয়স থেকেই এ সমস্যা ৫বার অপারেশন করেও সুস্থ করা সম্ভব হয়নি বরং আরও বেড়েছে সমস্যা। এটার জন্য স্কুলেও উপহাস করে তাড়িয়ে দেয়া হত। ”

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৮ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৭
এমএ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।