ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

ভুয়া খবর ধরতে একাট্টা ইউরোপের মিডিয়া

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪০৪ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
ভুয়া খবর ধরতে একাট্টা ইউরোপের মিডিয়া ভূয়া খবর ধরতে একাট্টা ইউরোপের মিডিয়া

বয়সে মোটে তিন সপ্তাহ এরই মধে্য ফ্যাক্টচেকিং বিষয়ক ইউরোপীয় জোট ‘ক্রস-চেক’ তার গতি পেয়েছে। ইউরোপের ৩৭ প্রকাশক সংস্থা এই মতে উপনীত হয়ে কাজ শুরু করেছে যে, তারা ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকবে।

প্রকাশকদের অধিকাংশই ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের। আর সংবাদ মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে বিবিসি, চ্যানেল-৪ নিউজ, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইম, ব্লুমবার্গ, লেমন্ড, লা লাইব্রেরিয়ান, লেস-একোস, এএফপি।

পরস্পরের দীর্ঘ প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ভুলে এ বিষয়ে সবাই একযোগে কাজ করছে। একজন ভুয়া খবর ধরতে পারলে তার সুবিধা সবাই পাচ্ছে।   

প্রতিটি নিউজরুম সন্দেহজনক কিছু পেলে অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করছে। আর প্রত্যেকে ব্যবহার করছে ভিন্ন ভিন্ন কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)। যা দিচ্ছে বাড়তি সুবিধা।  

এতে কোনটা সত্য খবর আর কোনটা ভুয়া তা ধরা পড়ে যাচ্ছে। সত্যিকারের খবরটি নিশ্চিত করতে এবং সামাজিক মাধ্যমের যেসব পোস্ট অবলম্বনে খবর করার আগে অনুসন্ধান প্রয়োজন, সেগুলোকে সামনে আনতেও সাহায্য করছে এই পদ্ধতি।  

অন্তত ১৫০ জন সাংবাদিক এসব সিএমএস ব্যবহার শুরু করছেন। আর এ সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।  

ফ্রান্সে নির্বাচনের প্রথম ধাপ সামনে রেখে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আগামী ২৩ এপ্রিল নির্বাচন শুরু হবে। সুতরাং যখনই কোনও ভুয়া খবর চিহ্নিত করা যাচ্ছে, তাতে নিশান তুলে দেওয়া হচ্ছে। আর এ পর্যন্ত যতগুলো খবরকে ভুয়া বলে চিহ্নিত করে নিশান তোলা হয়েছে তার সবক'টিই এই নির্বাচন সংক্রান্ত।  

তবে ফরাসি সাংবাদিকরা মনে করছেন, কেবল নির্বাচনই নয়, এর পরেও এই ব্যবস্থা চালু রাখতে হবে, যাতে ভুয়া খবর ছড়িয়ে সাংবাদিকতা জগৎকে কলুষিত করার অপচেষ্টা প্রতিহত করা সম্ভব হয়।  

এ পর্যন্ত ২০টি খবরের ওপর অনুসন্ধান হয়েছে। এসবের মধ্যে যেগুলো সত্য তাতে ‘সত্য’ আর যেগুলো ভুয়া তাতে ‘মিথ্যা’ ট্যাগ লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও কোনও খবরে ‘সতর্কতা’ সূচক ট্যাগ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখবরগুলোর ব্যাপারে বলা হয়েছে, হতে পারে খবরটি পুরোপুরি মিথ্যা নয়, তবে এতে অসত্য তথ্যের ব্যবহার রয়েছে।  

ফার্স্ট ড্রাফট নিউজতো চতুর্থ আরেকটি ক্যাটেগরিতেও ফেলছে খবরগুলোকে। এটি হচ্ছে- 'দৃষ্টি আকর্ষণ'।  এ খবরগুলো হয়তো মিথ্যা নয়, তবে তাতে তথ্য পূর্ণাঙ্গ নয়।  

অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে- ভিন্ন ভিন্ন দেশের নিউজরুমকে এক প্ল্যাটফর্মে এনে কাজ করার পদ্ধতিকে। বিশেষ করে যখন লাইভ বা ডেভেলপিং খবর প্রচার করা হয় তখন বিষয়টি অনেকাংশেই কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ও ভিন্ন ভিন্ন সিস্টেমের ব্যবহারও রয়েছে। তবে এরই মধ্যে প্রক্রিয়াটি ফল দিতে শুরু করেছে।

বিবিসি নিউজে তো এ নিয়ে খবরও প্রকাশিত হয়েছে। তার শিরোনামটি এমন, ‘ভুয়া খবর: ফ্রান্সের নির্বাচন নিয়ে ৫টি খবর চিহ্নিত’। এতে আরও বলা হয়েছে, অনেকেই একযোগে কাজ করা ও পারস্পরিক সহযোগিতার কারণেই এমনটা সম্ভব হয়েছে।  

এই পদ্ধতিতে বিবিসির মতো বড় সংস্থাগুলো যেমন সুবিধা পাচ্ছে, তেমনি এর সুবিধা পাচ্ছে ছোট হাউজগুলোও।

আর সংবাদমাধ্যমগুলোর মধ্যে যে আজন্মকালের শত্রুতা, তাও কিছুটা ভুলে গেছেন সবাই। ভুয়া খবর থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারস্পরিক প্রতিযোগিতার ভাবনাটি আপনাকে পাশে সরিয়ে রাখতে হবে, আর তা সকলের জন্যই সত্য। এক্ষেত্রে সবাইকে একাট্টা হয়েই কাজ করতে হবে, বলেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ সময় ০৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭/আপডেট ১১২৬ ঘণ্টা
এমএমকে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।