ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

তথ্যপ্রযুক্তি

ফোর-জি’র লাইসেন্স পেতে ৫ অপারেটরের আবেদন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
ফোর-জি’র লাইসেন্স পেতে ৫ অপারেটরের আবেদন ফোর-জি নিয়ে রমনায় বিটিআরসি ভবনে সংবাদ সম্মেলন

ঢাকা: চতুর্থ প্রজন্মের (ফোর-জি) ইন্টারনেট সেবার জন্য পাঁচটি মোবাইল ফোন অপারেটর আবেদন করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
 

রোববার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে রমনায় বিটিআরসি ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ একথা জানান।
 
তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, আজকে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন জগতে একটি নতুন দিনের সূচনা হলো।

শেষ পর্যন্ত ফোর-জি বা এলটি সেবা শুরু করতে যাচ্ছি। লাইসেন্সের জন্য শেষ সময় (রোববার) বেলা ১২টা পর্যন্ত পাঁচটি অপারেটরের কাছ থেকে আবেদন পাওয়া গেছে।  
 
ফোর-জি সেবা দেওয়ার জন্য টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড, প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম (সিটিসেল) লি., বাংলালিংক, গ্রামীণফোন ও রবি আজিয়াটা লিমিটেড আবেদন জমা দিয়েছে। আর তরঙ্গ নিলামের জন্য বাংলালিংক, গ্রামীণফোন, রবি ও সিটিসেল আবেদন করেছে।

সিটিসেলের নিলামে অংশগ্রহণের বিষয়ে বিটিআরসি জানায়, বকেয়া বেশিরভাগ দিয়েছে। তরঙ্গ গ্রহণের পর তাদেরকে ফোর-জি লাইসেন্স নিতে হবে।
 
নিলামের জন্য বেস্ট প্রাইস হিসেবে ২১০০ মেগাহার্টজে প্রতি মেগাহার্টজের জন্য ধরা হয়েছে ২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ১৮০০ ও ৯০০ মেগাহার্টজের জন্য ধরা হয়েছে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখান থেকে নিলাম শুরু হবে।  
 
পৃথক কমিটি আবেদন মূল্যায়ন করে আগামী ২৩ জানুয়ারি কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করবে জানিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, সেই সুপারিশ পরবর্তীতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হবে।

তবে বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান চাইলে এখনও আবেদন করতে পারবে জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, দু’টি প্রতিষ্ঠান এসেছিলো, কিন্তু তার আর উত্তর পাওয়া যায়নি। আগামী মার্চের মধ্যে ফোর-জি সেবা চালু করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন চেয়ারম্যান।
 
তিন ধরনের তরঙ্গের জন্য নিলাম করা হবে জানিয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, ২১০০ মেগাহার্টজ, ১৮০০ মেগাহার্টজ এবং ৯০০ মেগাহার্টজের জন্য নিলাম হবে।
 
বর্তমানে টুজি সেবা ৯০০ মেগাহার্টজ ও ১৮০০ মেগাহার্টজে দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, থ্রিজি সেবা ২১০০ মেগাহার্টজে দেওয়া হয়। ২১০০ মেগাহার্টজে যে থ্রিজি সেবা দেওয়া হয় সেখানে প্রযুক্তি নিরপেক্ষতা দেওয়া আছে। অর্থাৎ এই তরঙ্গে ফোরজি, টুজি সেবাও দিতে পারবে।
 
সেবা বাড়াতে অপারেটররা আরো তরঙ্গ কিনবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিটিআরসি প্রধান।
 
ফোরজি লাইসেন্সিং গাইডলাইন এবং তরঙ্গ নিলামের জন্য আবেদন আহ্বান করে ৪ ডিসেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিটিআরসি।
 
বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আগামী ২৫ জানুয়ারি যোগ্য আবেদনকারীর তালিকা প্রকাশের পর ১৩ ফেব্রুয়ারি নিলাম এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি নিলামে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে বিটিআরসি।
 
গত বছরের ২৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুই গাইডলাইনের অনুমোদন দেন। তবে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো বেশকিছু বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলো। সেগুলো সমাধান করে নিলাম প্রক্রিয়া চলছে।
 
ফোরজি লাইসেন্স আবেদন ফি আগে ছিল ৫ লাখ টাকা, এখনও তাই আছে। লাইসেন্স এক্যুইজেশন ফি ১৫ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ১০ কোটি টাকা, বার্ষিক লাইসেন্স ফি সাড়ে ৭ কোটি পাকা থেকে কমিয়ে ৫ কোটি টাকা, রেভিনিউ শেয়ারিং ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫.৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। আর ব্যাংক গ্যারান্টি ১৫০ কোটি টাকাই রয়েছে।
 
কনভার্সন ফি ১৮০০ ও ৯০০ মেগাহার্টজে তরঙ্গ এক ধাপে রূপান্তর করলে ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। আংশিক রূপান্তর করলে পড়বে ৭.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
 
প্রাথমিকভাবে ফোর-জি’র ডাটা স্পিড ২০ এমবি (মেগাবাইটস পার সেকেন্ড) রাখা হয়েছে। বিটিআরসি সময়ে সময়ে স্পিড পরিবর্তন করতে পারবে।
 
তবে গত ১১ জানুয়ারি বাংলা-লায়ন কমিউনিকেশন্সের পক্ষে রিট আবেদন করা হলে ফোর-জি লাইসেন্সিং গাইডলাইন এবং তরঙ্গ নিলামের বিজ্ঞপ্তি স্থগিত করেন হাইকোর্ট। তবে রোববারই হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত রাখেন আপিল বিভাগ। এর ফলে ফোর-জি লাইসেন্সিংয়ের নিলাম কার্যক্রমে আর বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।