ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

ভারতের দূষণমুক্ত, নির্মল দ্বীপ-জেলা মাজুলী!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৫৪ ঘণ্টা, জুন ১, ২০১৭
ভারতের দূষণমুক্ত, নির্মল দ্বীপ-জেলা মাজুলী! নির্মল দ্বীপ-জেলা মাজুলী

মাজুলী( আসাম) থেকে ফিরে: ৯শ' বর্গকিমি এলাকাজুড়ে থাকা ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ নদ-দ্বীপে মোট ১৪৪টি গ্রাম রয়েছে।  ২০১১ সালের ভারত সরকারের সর্বশেষ জনগণনা অনুসারে জলাশয় ও জলাভূমিঘেরা গ্রামগুলিতে মোট ৩২ হাজার ২শ' ৩৬ পরিবারে প্রায় ১লাখ ৬৭ হাজার ৩শ' ৪জন মানুষের বসবাস।

এতো লোকের বসবাস হলেও এখানে নেই কোনো কলকারখানা। দ্বীপটির যে দিকে তাকানো যায় সেই দিকেই প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য।

প্রায় সব দিকেই দিগন্তবিস্তৃত অবারিত সবুজ মাঠ আর জলাশয়। এই সকল মাঠ-জলাশয়ে রয়েছে নানা প্রজাতির কীটপতঙ্গ, লতাগুল্ম, শৈবাল, শাপলা আর পদ্মফুল। সেই সঙ্গে রয়েছে নির্মল বাতাস ও বিশুদ্ধ অক্সিজেন।

সবুজে ঘেরা এই দ্বীপটিতে প্রতিবছর প্রচুর সংখ্যক দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন। কিন্তু তুলনামূলকভাবে এর রাস্তাঘাট ও  অবকাঠামোর সঠিক উন্নয়ন হয়নি। এর সঠিক ও নিবিচ্ছিন্ন উন্নয়নের জন্য মাজুলীবাসী দীর্ঘদিন ধরে যোরহাট থেকে আলাদা করে একে নতুন জেলা ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। অবশেষে ২০১৬সালে ২৭ জুন বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল মাজুলীকে নতুন জেলা হিসেবে ঘোষণা করেন। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে মাজুলীর ঝুলিতে আরো একটি রেকর্ড সংযোজিত হয়,আর সেটি হল মাজুলীই ভারতের প্রথম দ্বীপ-জেলা। সর্বানন্দ সনোয়াল আবার মাজুলী থেকে নির্বাচিত বিধায়কও।

মাজুলীকে জেলা ঘোষণার পাশাপাশি একে আসাম তথা সারাদেশে প্রথম দূষণমুক্ত জেলা হিসেবেও ঘোষণা দেন তিনি। কারণ এর চারদিক নদীবেষ্টিত ও সবুজে ঘেরা ১শ' ৪৪টি গ্রামের এই দ্বীপে নেই কোনো ছোটবড় কলকারখানা। যানবাহনও নিদৃষ্ট সংখ্যক। তাছাড়া বর্ষাকালে নিচু জমি যখন পানিতে ভরে থাকে তখন গ্রামীণ জনপদের মানুষ এই জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে নৌকা ব্যবহার করেন। পাশাপাশি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ, এমনকি মহিলারাও নিজেদের কাজের জন্য এখানে ওখানে যেতে নৌকাই ব্যবহার করেন। তাই আক্ষরিক অর্থেই দ্বীপটি দূষণমুক্ত। এসকল কারণে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা বারবার ছুটে যান মাজুলীতে। নির্মল দ্বীপ-জেলা মাজুলীএতো কিছুর পর প্রদীপের তলার অন্ধকারের মত মাজুলীর কমলাবাড়ী এলাকায় জনবসতিপূর্ণ স্থানে গড়ে উঠেছে একটি ইট ভাটা। এটি মাজুলীর সকল গৌরব ও নির্মল পরিবেশে কালো দাগের মতো। এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মাজুলী, আসামসহ দেশের পরিবেশপ্রেমীরা। তারা দাবি জানাচ্ছেন, অবিলম্বে এই ইট ভাটা যেন বন্ধ করে দেওয়া হয়।

মাজুলীর পরিবেশপ্রেমী সাংবাদিক প্রদীপ বোরা বাংলানিজকে জানান এই ইট ভাটার নেই কোনো লাইসেন্স। নেই কোনো পরিবেশ দূষন নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র। তারপরও সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে চলছে এটি। বলতে গেলে সব কিছুকে উপেক্ষা করে গায়ের জোরে চলছে এটি।

বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন তারা। প্রদীপ বোরার আশা, দ্রুত বন্ধ হয়ে যাবে বেআইনি এই ইট ভাটা।

তবেই আক্ষরিক অর্থে সার্থক হবে মাজুলীকে দেশের মধ্যে একমাত্র দূষণমুক্ত জেলা ঘোষণার বিষয়টি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টায়, জুন ০১, ২০১৭
এসসিএন/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।