ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিএনপি

জনগণের ওপর সরকারের আস্থা নেই: মোশাররফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
জনগণের ওপর সরকারের আস্থা নেই: মোশাররফ নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ বক্তব্য রাখছেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন /ছবি: শাকিল

নয়াপল্টন থেকে: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, তাই জনগণের ওপর তাদের আস্থা নাই। তারা আবারও ৫ জানুয়ারি মার্কা একটি প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। সেজন্য অন্যায়ভাবে খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছে।

শুক্রবার (২০ জুলাই) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা’র দাবিতে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।  

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ড. মোশাররফ বলেন, এ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে দেশের তিনটি প্রধান স্তম্ভ নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও সংসদ কে ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা দেশের প্রধান বিচারপতিকে জোর করে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে।  

তিনি বলেন, দেশের জনগণ আর এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। যতই ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। খালেদা জিয়া মুক্ত না হলে এ দেশে কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না।  

তিনি বলেন, আসন্ন ৩ সিটির নির্বাচনে জনগণ ভোট কারচুপির নির্বাচন হতে দেবে না। আর একাদশ জাতীয় নির্বাচন শেখ হাসিনার অধীনে হবে না। কারণ এরই মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে জনগণ দেখেছে হাসিনার অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না।  

ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ দলীয় নেতাকর্মীদের বলেন, স্লোগান দিয়ে কাজ হবে না। কাজ করতে হবে, রাজপথে আন্দোলন করতে হবে। সবাইকে মাঠের আন্দোলনের জন্য তৈরি থাকতে হবে। সময় আসছে।  

তিনি বলেন, আজকে একটি বিনা ভোটের সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করে বন্দুকের জোরে ক্ষমতা দখল করে দেশ চালাচ্ছে। তাই দেশের জনগণের জন্য এ সরকারের অপসারণ করতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর এসব করতে হলে আমাদের যা করতে হবে তা হচ্ছে সবার আগে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ায় না হলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে।  

মওদুদ আরও বলেন, যদি দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চান তাহলে সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে। কারণ এক দলের নেত্রী জেলে থাকবেন আর একজন সরকারি খরচে সভা সমাবেশ করে ভোট চাইবেন, তা হবে না।  

তিনি বলেন, আমাদের সভা করতে মাসের পর মাস অনুমতির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু সামনে আমরা আর অনুমতি চাইবো না। সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে পুলিশকে জানিয়ে দেব আমরা অমুক দিন অমুক জায়গায় সভা করবো।  

মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা খালেদা জিয়াকে নিয়ে নির্বাচন যাবে। কেউ যদি মনে করেন ফাঁকা মাঠে গোল দেবেন, তাহলে ভুল করবেন। আমরা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচনে যাবো। এ ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।  

তিনি বলেন, এদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবস্থা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা বুঝতে বাকী নেই। কারণ ঢাকা মহানগরের এক নেতা বরিশালের পুলিশ কমিশনারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়েছে। তাহলে দেশের অবস্থা কি আপনারা বুঝেন।  

তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, যারা নির্যাতন করছে তারা কেউ মাফ পায় নি। তাই জনগণকে নির্যাতন করবেন না। আমরা এটা স্পষ্ট করে বলতে চাই খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবো। এর বাইরে কোনো নির্বাচন হবে না। আর ভোটের আগে নির্বাচন কমিশন অবশ্যই পুনর্গঠন করতে হবে।  

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে আর কোনো নির্বাচন নয়। এ সরকার বৈধ সরকার নয়। তাই তাদের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না।  

ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব মানে এ দেশের জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব নয়। তাই বন্ধুত্ব করতে হলে জনগণের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে হবে। বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা হবে এদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দিয়ে। অন্য দেশের কারো সমর্থন নিয়ে নয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাবেন না। এদেশের মানুষ সহ্য করবে না।  

স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
এমএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।