ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

ভোট ডাকাতির বদনাম নেবে না আ’লীগ

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮
ভোট ডাকাতির বদনাম নেবে না আ’লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি: পিআইডি

ঢাকা: আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের জনগণের মন জয় করেই নির্বাচনে জেতার প্রস্তুতি নেওয়ারআহ্বান জানিয়ে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোট চুরি, ভোট ডাকাতি করে কেউ জিততে পারবে না। আওয়ামী লীগ এ বদনাম নেবে না।

শনিবার (২৩ জুন) দুপুরে গণভবনে আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।
 
সভায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য, দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি), মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানসহ চার হাজারের বেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।


 
দলের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখার পাশাপাশি ত্যাগের মনোভাব নিয়ে নেতা-কর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে। ওই ভোট চুরি, ভোটডাকাতি; যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি-সেভাবে কেউ জিততে পারবেন না। জনগণ স্বতস্ফুর্ত হয়ে আপনাকে আপনার কাজে খুশি হয়ে ভোট দেবে।
 
‘আমরা এই বদনাম নিতে চাই না। জনগণের মন জয় করেই নির্বাচনে জিততে হবে, ক্ষমতায় আসতে হবে। ক্ষমতায় আসতে হবে এজন্য আমরা যেনো জনগণকে ক্ষুধা দারিদ্র্যমুক্ত করে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার কাজ করছি সে লক্ষ্য পূরণ করতে। ’
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ কিন্তু ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। আমরা নির্বাচনের স্বচ্ছতার জন্য স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা-যা করেছি আমরাই, আমাদের প্রস্তাবে হয়েছে।
 
‘নির্বাচন যেন স্বচ্ছ হয়, নির্বাচন নিয়ে যেন কেউ কোনো কথা বলতে না পারে,’ বলেন তিনি।  
 
শেখ হাসিনা বলেন, ’৯৬ সালে বিএনপি ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন করেছে, যেহেতু ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দেয়নি। যার কারণে আন্দোলনের মুখে ৩০ মার্চে খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিলেন। ভোট চুরির অপরাধে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিলো।
 
স্বপ্রণোদিত প্রার্থীদের সর্তক করলেন শেখ হাসিনা 
নৌকা প্রতীকে স্বপ্রণোদিত প্রার্থী হয়ে যারা প্রচারণা চালাচ্ছেন তাদের সর্তক করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রার্থী হয়ে যান। প্রার্থী হয়ে তারা বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মের কথা বলেন না। আমাদের উন্নয়নের কথা জনগণের কাছে বলেন না। তারা আমাদের সংসদ সদস্য, আমাদের দলের বিরুদ্ধে কথা বলেন।
 
‘তারা চিন্তা করেন দলের বদনাম হলে তিনি নিজেও ভোট পাবেন না। পরিষ্কার বলছি, দলের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, দলের বদনাম করে তারা মনোনয়ন পাবে না। ’
 
জনপ্রিয়তা দেখে, তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কে কতটুকু মূল্যায়ন করেছে সেসব বিষয় দেখে মনোনয়ন দেওয়ার কথা জানান শেখ হাসিনা।
 
এমপিদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের বলবো জনগণ হিসাবি, তারা মনে রাখে। টাকা দিয়ে কাজ করলে পরে ভোট চাইতে গেলে তারা বলবে টাকা দিয়ে কাজ করেছে ভোট দেবো কেনো?
 
এরা মধু খেতে আসে, দ্রুত বিদায় করেন
গ্রুপ ভারী করতে যারা দলে অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে তাদের সর্তক করে শেখ হাসিনা বলেন, যারা এদের প্রশ্রয় দিয়েছেন তাড়াতাড়ি বিদায় করেন।
 
‘দল যেহেতু ক্ষমতায়, অনেকে দলে ভিড়তে চায়। এরা মধু খেতে আসে। এদের বিদায় করতে হবে। ’
 
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেকে গ্রুপ ভারী করতে বাছ-বিচার না করে এদের দলে ভেড়ান। মনে রাখবেন এরা কখনো আপন হবে না। এদের কাছে টানবেন না। এরা দলে এসে খুন খারাবি করবে, বলবে দলের লোক খুন করেছে।
 
নৌকা ভোট না পেলে দায় আপনাদের       
সরকারের উন্নয়নের কথা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি বিএনপি জামায়াতের অপকর্মের কথা বলতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
 
তিনি বলেন, যে উন্নয়ন করেছি, যা কাজ করেছি তারপরও যদি জনগণ ভোট না দেয় তাহলে দায়ী থাকবেন আপনারা। তার মানে হবে, আপনারা জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়নের কথা বলেননি, বিএনপির অপকর্মের কথা তাদের কানে পৌঁছাতে পারেননি। নইলে তারা (বিএনপি) ভোট পাবে কেনো?
 
শেখ হাসিনা বলেন, এক এক করে প্রতিটি মানুষের কাছে গিয়ে উন্নয়নের কথা বলুন। ভোটের রাজনীতিতে এ কথাগুলো মানুষকে জানাতে হবে।
 
‘আমরা দেশের ও জনগণের উন্নয়ন করছি। কিন্তু উন্নয়ন করে ছেড়ে দিলে হবে না। মানুষকে জানাতে হবে আমরা তাদের জন্য কি করছি। জনগণকে বলতে হবে আওয়ামী লীগ যে কথা দেয় তা রাখে,’ যোগ করেন তিনি।  
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জামায়াতের দুর্নীতি, সন্ত্রাসের কথা মানুষকে বলতে হবে। তাদের অপকর্মের কথা মানুষকে জানাতে হবে।
 
মহাজোট থাকবে, আমরা বন্ধু হারাবো না
শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা মহাজোট করেছি নির্বাচনের স্বার্থে। আগামীতেও করবো। আমরা বন্ধু হারাবো না।
 
তিনি বলেন, যাকে নৌকা মার্কায় মনোনয়ন দেওয়া হবে তার জন্য কাজ করবেন। সবাই মিলে নৌকা মার্কার জন্য কাজ করবেন।
 
আগামী নির্বাচনকে ঘিরে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব সময় মাথায় রাখতে হবে নির্বাচন মানে চ্যালেঞ্জ।
 
দলীয়ভাবে দুর্নীতিকে গ্রহণ করেছে বিএনপি
 
বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধ ক্ষমতা দখল করে গঠিত দল জনগণকে কী দিতে পারে? কিছুই না। তারা চুরি করতে পারে।
 
‘তাদের নেত্রী এখন এতিমের টাকা চুরির অপরাধে জেলে। তার অবর্তমানে দলটির চেয়ারপারসন করা হলো এমন একজনকে যে কিনা দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত, পলাতক। ’
 
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তাদের গঠনতন্ত্রে ছিলো কেউ দুর্নীতির সাজা পেলে তিনি চেয়ারপারসন হওয়ার অযোগ্য হবেন। কিন্তু তারা গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে দল হিসেবে দুর্নীতিগ্রস্ত দলে পরিণত হয়েছে।
 
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৮/আপডেট: ১৭১৩ ঘণ্টা
এমইউএম/এসকে/এসএইচ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।