ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

‘সভাপতির পদ পেতে সঞ্জয় শাওনকে হত্যা করে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
‘সভাপতির পদ পেতে সঞ্জয় শাওনকে হত্যা করে’ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন নিহত ছাত্রলীগ সাবেক সহ-সভাপতি আশফাক আল রাফি শাওনের বাবা এমএ কুদ্দুস

ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটির সভাপতি পদ পেতেই পরিকল্পিতভাবে শাওনকে গুলি করে হত্যা করে সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় দত্ত –এমন দাবি করেছেন নিহতের বাবা এমএ কুদ্দুস। 

বৃহস্পতিবার (২২ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে ছাত্রলীগ সাবেক সহ-সভাপতি আশফাক আল রাফি শাওন হত্যার বিচার দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।  

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- নিহত শাওনের মা নিলুফা সুলতানা পপি, একমাত্র বোন ফৌজিয়া আক্তার ফ্লোরা, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, এফবিসিসিআই’র সাবেক ৩ বারের পরিচালক ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল হক শামীম, অ্যাডভোকেট পিযুষ কান্তি সরকার, শওকত জাহান মুকুল, হুমায়ূন কবির হিমেল, শামসুল আলম প্রমুখ।

 

ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও নিহত শাওনের বাবা এমএ কুদ্দুস বলেন, জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে শাওন ও সঞ্জয় দু’জনেই সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলো। মূলত পথের কাঁটা হিসেবে শাওনকে সরিয়ে দিতে তার অনুসারীদের নিয়ে সঞ্জয় গুলি করে তাকে হত্যা করে।

তিনি বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে কাজ করেছি। কোনোদিন আমি কারও কোনো ক্ষতি করি নাই। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহযোগিতা কামনা করছি। যারা আমার একমাত্র ছেলে শাওনকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক এটাই আমার দাবি। ’

ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনে প্রসংঙ্গে শাওনের বাবা বলেন, ‘ছেলের শোকে আমি আমার স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলাম। নিহত সন্তানের মরদেহ কাটাছেড়া হোক এটা আমি ও আমার পরিবারের কারোই কাম্য ছিলো না। তাই কর্তৃপক্ষের অনুমতিতে ছেলের মরদেহ দাফন করি। অনেকের সঙ্গে পরামর্শ ও হত্যাকারীদের তথ্য এবং মূল রহস্য উদঘাটন করে মামলাটি দায়ের করতে দেরি হয়েছে। ’

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দিনগত মধ্যরাতে রহস্যজনকভাবে গুলিবিদ্ধ হন জেলা ছাত্রলীগ নেতা আশফাক আল রাফি শাওন। প্রথমে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরবর্তীতে তাকে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। টানা ১১ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে যান শাওন।  

পরবর্তীতে শাওনের বাবা মামলা দায়ের না করায় বিনা ময়নাতদন্তে পরদিন ৯ মার্চ শাওনের নিজ গ্রাম ফুলবাড়িয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।  

এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে রাজনৈতিকভাবে অনেক জলঘোলা হওয়ার পর গত বুধবার (১৪ মার্চ) রাতে কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।  

পরে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গত বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) দুপুরে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সঞ্জয় দত্ত, এসএম আরিফুল হক ওরফে পিচ্চি আরিফ ও আমিনুল ইসলাম হিমেল আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।

এ সময় কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পলাশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। রোববার (১৮ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহের ১ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদুল হক তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

পরে আদালতের নির্দেশে গত ১৯ মার্চ দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য শাওনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।

পুলিশের মামলার সাতদিন পর গত বুধবার (২১ মার্চ) সকালে ময়মনসিংহ সদর আদালতে মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম.এ.কুদ্দুস।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৮
এমএএএম/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।