ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

‘তাদের ভ্রুণে এখনো পাকিস্তানি মনোভাব’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৮
‘তাদের ভ্রুণে এখনো পাকিস্তানি মনোভাব’ বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ছবি: পিআইডি

ঢাকা: দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের বিষয়ে জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করছে, উসকানি দিচ্ছে তাদের রক্তের সূত্রটা কোথায়? সুযোগসন্ধানীরা দেশের উন্নয়ন-গণতন্ত্র চায় না। তাদের কারণে দেশকে বারবার বিপদে পড়তে হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা চক্রান্ত করে যাচ্ছে, বংশ পরম্পরায় চক্রান্ত করে যাচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণকে বলবো তাদের সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তারা জনগণের ভালো চায় না, তারা নিজেরা ভালো থাকতে চায়। তাদের অর্থ, তাদের সম্পদ কোথা থেকে আসে।

‘গণতন্ত্র থাকুক, দেশের উন্নয়ন হোক এগুলো তাদের মাথায় নেই। অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসলে তারা পতাকা পাবে, সুযোগ-সুবিধা পাবে। এরাই সুযোগসন্ধানী। এদের কারণে বাংলাদেশের মানুষকে বারবার বিপদে পড়তে হয়েছে। ’

শেখ হাসিনা বলেন, এরা এখনো তাদের পূর্ব প্রভুদের ভুলতে পারেনি। এখনো তাদের ভ্রুণে তোষামোদী, খোষামোদী, চাটুকারী মনোভাব রয়ে গেছে। পাকিস্তানিদের পদলেহন করা, তাদের পা চেটে খাওয়াই তাদের চরিত্র। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের মানুষ ভালো আছে, তাই তাদের মন খারাপ। এজন্য তারা চক্রান্ত করছে।

কয়েকটি গণমাধ্যমের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু পত্রিকা আওয়ামী লীগ যেন জনপ্রিয়তা হারায় সেটাই তাদের একমাত্র কর্তব্য। কেনো? যখন বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সরকার থাকে না তখন অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের কাছে তাদের খুব মূল্য হয়।

তাদের রক্তের সূত্রটা কোথায়?
সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রছাত্রীরা রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিল। কারা তাদের উসকানি দিয়েছিল। ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করে দিয়েছি, সে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে, মিডিয়া ব্যবহার করে তারা উসকানি দিয়ে, মিথ্যা কথা বলে, দেশে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তারা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল।

তিনি বলেন, যারা এসব করেছে তাদের ভেতরে অনেকে নামিদামি জ্ঞানী অনেক কিছু তারা। অনেক বড় ইন্টেলেকচুয়াল। তাদের রক্তের সূত্রটা কোথায়? বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি সবুর খান। তার বোনের ছেলে ওই ধরনের যারা পাকিস্তানি চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাসী। তাদের বংশধর থেকে শুরু করে অনেকেই এর মধ্যে জড়িত। আবার তাদের ধরলে দেখি আন্তর্জাতিকভাবে খুব হইচই। কেনো?

শেখ হাসিনা বলেন, যে যত বড়ই হোক না, কেউ যদি অন্যায় করে, কেউ যদি উসকানি দেয় ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ব্যবহার করতে চায়, তাদের কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য।  

তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করেন খুব নামি-দামি লেখক, সাংবাদিক, পণ্ডিত হলেই তাদের অপরাধ আর অপরাধ না। তাদের অপরাধ সব ধুয়ে মুছে যাবে, তারা প্রটেকশন পাবে। কিন্তু কেনো?

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, অনেকেই না জেনে লিখতে পারেন, খুব ভালো কথা। পত্রিকাও আছে। আর আমাদের সরকারের সময় তো সবাই বাক-স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা– পর্যাপ্ত স্বাধীনতা ভোগ করে যাচ্ছেন। কি অন্যায়টা তারা করতে যাচ্ছিল, দেশটাকে কোন দিকে নিতে চাচ্ছিল সেটা কি তারা উপলব্ধি করেন? তারা অনেক জ্ঞানী, বুদ্ধিমান, জনপ্রিয় হতে পারেন কিন্তু তাদের ভেতর কি দেশ ও জাতির প্রতি এতোটুকু দায়িত্ববোধ থাকবে না!

শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি শিশুদের ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় তাদের কি বাহবা দিতে হবে। আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই সেটা কি অন্যায় হয়ে যাবে। দেশকে রক্ষা করা, দেশের মানুষকে রক্ষা করা এটাতো আমাদের কর্তব্য।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তৃতীয়পক্ষ ঢুকেছিল একথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম ২/৩ দিন শিশুরা রাস্তায়। আপনারা দেখেছেন ধৈর্য দেখিয়েছে সবাই, পুলিশ বলেন, বিজিবি বলেন, আমাদের রাজনৈতিক নেতা বলেন বরং সব রকম সহযোগিতা করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, আমাদের বুদ্ধিজীবীরা কি সেগুলো চোখ খুলে দেখবেন না। উসকানিদাতাকে গ্রেফতারের সঙ্গে সঙ্গে আর্টিকেল লিখতে পারেন, এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখতে পারেন না। কলমের কালি বুঝি ফুরিয়ে গেলো।

সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ, মোহাম্মদ নাসিম, সাহারা খাতুন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, শ ম রেজাউল করিম, কার্যনির্বাহী সদস্য সিমিন হোসেন রিমি ও আনোয়ার হোসেন।

সঞ্চালনা করেন প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। একটি কবিতা আবৃত্তি করেন আহকামউল্লাহ।

১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে খালেদা জিয়াও জড়িত
বাংলাদেশ সময়: ২১২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৮
এমইউএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।