ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বায়তুল মোকাররমে বিনামূল্যে ৪ হাজার মুসল্লির ইফতার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪০ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
বায়তুল মোকাররমে বিনামূল্যে ৪ হাজার মুসল্লির ইফতার বায়তুল মোকাররমে বিনামূল্যে ৪ হাজার মুসল্লির ইফতার

ঢাকা: জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম। রমজান আসা মানেই অন্য এক আবহের সৃষ্টি এখানে। প্রতিবছর এসময় মুসল্লিদের জন্য বিনামূল্যে ইফতারের আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা)। এ মসজিদের ইফতারে ধনী, দরিদ্র, ফকির, মিসকিন যেনো মিলেমিশে একাকার। আর তাই প্রতিদিন চারহাজার মসুল্লি এক সঙ্গে ইফতার করেন এখানে।

শনিবার (১৯ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, আসরের নামাজের একটু পরই মুসল্লিরা মসজিদের পূর্ব পাশের ফাঁকা স্থানে (শাহানে) বসতে শুরু করেন। একজন অন্যজনকে একটু একটু করে জায়গা করে দিচ্ছেন বসার জন্য।

নিজে বসছেন আবার অন্যকেও সুযোগ করে দিচ্ছেন। সবাই বসে ইসলামিক আলোচনাও শুনছেন।
 
এর ঠিক কিছুক্ষণ পরই সারিবদ্ধ হয়ে বসার অনুরোধ করলেন মসজিদের স্বেচ্ছাসেবকরা। একদিকে শাহানের মূল মঞ্চে চলছে কুরআন তেলাওয়াত ও দোয়ার অনুষ্ঠান। অন্যদিকে চলছে মুসল্লিদের মধ্যে ইফতার বিতরণ।  

প্রথমদিনের মতো আজও ইফতারে ছিল ছোলা, মুড়ি, আলুর চপ, বেগুনী, শসা, খেজুর, শরবত, জিলাপিসহ ১০ পদ খাবার।

এছাড়াও তাবলিগ জামাতের পক্ষ থেকে মসজিদের শাহানের উত্তর পাশে প্রায় ২০০ মানুষের ইফতারের আয়োজন করা হয়। আর হাবিবুর রহমান নামে এক মধু বিক্রেতাও প্রায় ৫০ জনের ইফতারের আয়োজন করেন ব্যক্তি উদ্যোগে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও প্রথম রমজান থেকে রোজাদারদের ইফতারের উদ্যোগ নেয় ইফা। এবার প্রতিদিন চারহাজার মসুল্লির ইফতারের আয়োজন করে ইফা। যা গত বছর থেকে ৫০০ বেড়েছে। এ জন্য প্রতিদিন প্রায় ৯০ হাজার টাকার বাজেট রাখছে ইফা। গত বছর তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষের ইফতারের আয়োজন ছিল। এবার লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ইফতারের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
 
ইফতার করতে আসেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এখানে যেনো মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সবাই বসেছেন এক সঙ্গে। ইফতার করছেন মুখোমুখি হয়ে। নেই কোনো বৈষম্য বা হিংসা-বিদ্বেষ।
 
আরিফ হোসেন। থাকেন আশুলিয়ায়। পেশায় একজন ফল ব্যবসায়ী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সদরঘাটে ফল কিনতে এসে অনেক সময় চলে গেছে। ইফতারের সময় এসে যাচ্ছে, তাই বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসেছি ইফতার করতে। আরিফ হোসেনের মতো অনেক পথচারি, রিকশাচালক, ফেরিওয়ালা এসেছেন এখানে ইফতার করতে।

স্টেডিয়াম মার্কেটের টিভি-ফ্রিজ ব্যবসায়ী শরিফ বাংলানিউজকে বলেন, এখানে ধনী-ফকির নেই, সবাই মুসল্লি। আমরা সবাই মিলে এখানে এক হয়ে ইফতার করতে পারি। বড় ইফতারে বড় সওয়াব তাই এখানে প্রতিবছরই ইফতার করি। এ বছরও ইফতার করছি। তিনি বলেন, বিনামূল্যে ইফতার এটা কেউ দেখেন না। সবাই মিলে ইফতার করব এটা বড় বিষয়।

ইফতার আয়োজনের দায়িত্ব থাকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের ওপর। এ বিভাগই ইফতারের মেনু, সুষ্ঠুভাবে বণ্টন ও শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করে।

এ বিষয়ে মসজিদ ও মার্কেট বিভাগের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বাংলানউজকে বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিবছর মুসল্লিদের ইফতার করানোর জন্য একটা বাজেট রাখে। এবারও রেখেছে। সেখান থেকেই ইফতার বাবদ খরচ করা হয়।

ইফতার উপলক্ষে ইফা’র বাজেটের পরিমাণ কত এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এবার ২৬ লাখ টাকা ইফতারের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে ইফা।
 
রোজা উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) নানা উদ্যোগ নিয়েছে। ইফতার ছাড়াও তাদের আয়োজনের মধ্যে আছে- কুরআন তেলাওয়াত, বিনামূল্যে কুরআন বিতরণ, কুরআন শিক্ষা দেওয়া, ইসলামিক প্রদর্শনী, বিশেষ মূল্যে ইসলামিক বই বিক্রি, আলোচনা সভা ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৪ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।