ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ইফতারে প্রাণ জুড়াতে কদর বেড়েছে ‘মাঠা’র

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৮
ইফতারে প্রাণ জুড়াতে কদর বেড়েছে ‘মাঠা’র রমজানে রাজশাহীতে বিক্রি হচ্ছে মাঠা

রাজশাহী: সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারের তালিকায় ঠাণ্ডা কিছু-তো থাকবেই। আর জ্যৈষ্ঠের গরমে-তো বটেই। তাই শুক্রবার (১৮ মে) প্রথম রমজানেই তৃষ্ণার্ত রোজাদারদের প্রাণ জুড়াতে রাজশাহীর সড়কে বসেছে মাঠার (ঘোল) ভাসমান দোকান। সুস্বাদু পানীয় হিসেবে রোজাদারদের কাছে এর কোনো জুড়ি নেই। তাই স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ভেজালমুক্ত মাঠা।

সারাদিন রোজা রেখে প্রচণ্ড গরমে এক গ্লাস ঠাণ্ডা মাঠা প্রশান্তি দিতে পারে। স্বাস্থ্যকর মাঠা বানিয়ে ফেলতে পারেন নিজেই।

তবে যারা পারেন না তাদের জন্যই আয়োজন রয়েছে সড়কে।  

বাজারের মাঠা ফ্রিজে উঠতেই যোগ করছে প্রশান্তির পরশ। ইফতারে যোগ করছে ভিন্নমাত্রা। সারাদিন রোজা থাকার পরে ইফতারে মাঠার স্পর্শ এক অন্যরকম অনুভূতি ফিরিয়ে আনবে। তাই ইফতারের ভাজাপোড়া খাবারের বিপরীতে অনেকের কাছেই প্রতি বছর লোভনীয় হয়ে ওঠে ‘মাঠা’।  

রমজানে রাজশাহীতে বিক্রি হচ্ছে মাঠাদুগ্ধজাত এ পানীয় অত্যন্ত সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর। সচরাচর সারাবছরই রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্তে পাওয়া যায়। হেঁটে হেঁটেও ফেরি করেন অনেকে। তবে রমজান জুড়ে নির্দিষ্ট স্থানে থাকেই।

দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর সাহেববাজার ন্যাশনাল ব্যাংকের সামনে, জিরো পয়েন্টে ও কুমারপাড়া এলাকায় বিক্রি করতে দেখা যায় মাঠা। রাজশাহী মহানগরীর কুমার পাড়ার ঘোষ সম্প্রদায় মাঠা তৈরির জন্য বিখ্যাত। তাদের মাঠার প্রচলন রয়েছে আদিকাল থেকেই। এজন্যই কুমারপাড়ার ঘোষদের মাঠার কদর শহরজুড়েই।

ইফতারের জন্য মাঠা কিনতে আসা ফারুক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এই গ্রীষ্মে সারাদিন রোজা থাকার পরে রোজাদারদের শরীরে পানি ও লবণের স্বল্পতা দেখা দেয়। তাই ইফতারে যে কোনো কোমল পানীয় বা শরবতের বদলে মাঠা অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।

এ জন্য রমজানে তিনি রোজ মাঠা কিনে নিয়ে যান বাড়িতে। পরিবারের সবাই অন্য সময় না খেলেও এই রমজানে তৃষ্ণা মেটাতে মাঠা খান।

রাজশাহী মহানগরীর কুমারপাড়া এলাকার মৃত অনিল কুমার ঘোষের ছেলে গহুর ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, এক সময় বাবা মাঠা তৈরি ও বিক্রি করতেন। সুস্বাদু মাঠার জন্য তাকে সবাই এক নামেই চিনতেন। বাবা মারা যাওয়ার পরে থেকে আমি মাঠা তৈরি শুরু করি। বাবার কাছ থেকে শেখার পর ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাঠা তৈরি এবং বিক্রি করি। বছরের সব সময়ই মাঠা বিক্রি হয়। তবে শীতে একটু কম এবং রমজানে একটু বেশিই বিক্রি হয়।

জানতে চাইলে গহুর ঘোষ জানান, তার মাঠার দাম সব সময়ই এক থাকে। রমজানে সব খাবার ও ইফতার সামগ্রীর দাম বাড়লেও তার মাঠার দাম বাড়ে না। বরং রমজান উপলক্ষে স্পেশাল মাঠা তৈরি করেন, যা ৬০ টাকা লিটারে বিক্রি করেন। অন্যটা বিক্রি করেন ৪০ টাকা লিটার দরে। এছাড়া প্রতি গ্লাস মাঠা ১০/১৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়।

রমজান মাস উপলক্ষে এবার রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন ফাস্ট ফুড, নামিদামি মিষ্টির দোকান ও বিভিন্ন কনকেফকশনারির বিপণি বিতানেও মাঠা বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে। তবে তাদের মাঠার দাম লিটার প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা হারে বেশি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৬ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৮
এসএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।