ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আন্দোলনের মুখে অচল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৪ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৮
আন্দোলনের মুখে অচল বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি ন্যায় আদায়ের দাবিতে খনি শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। ছবি: বাংলানিউজ

দিনাজপুর: শ্রমিক-কর্মচারী ও স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীদের অনির্দিষ্টকালের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়েছে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি।

ইতোমধ্যে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে খনি কর্মকর্তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় খনি কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে পার্বতীপুর থানায় দু’টি মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে খনির অভ্যন্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন কর্মকর্তারা। অপরদিকে আন্দোলনকারীরা ন্যায্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

শুক্রবার (১৮ মে) আন্দোলনকারীরা ষষ্ঠ দিনের মতো নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

আন্দোলনকারীরা মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করায় খনি অভ্যন্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে থাকা বিদেশি নাগরিক ও কর্মকর্তাদের খাদ্য, ওষুধসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করতে পারছে না। তাই চরম অভাব দেখা দিয়েছে অভ্যন্তরে থাকাদের মধ্যে। যে কারণে খনির কার্যক্রমসহ সব অচল হয়ে পড়েছে।

রোববার (১৩ মে) সকালে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে সাপ্তাহিক ছুটি, বিভিন্ন উৎসবের ছুটিতে কাজ করলে প্রাপ্য মুজুরি, কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে একই সার্কুলারে কর্মচারী নিয়োগসহ আউট সোর্সিং শ্রমিকদের স্থায়ী নিয়োগ, প্রফিট ও অন্যান্য বোনাসসহ বৈশাখী ভাতা দেয়া, নিয়মানুযায়ী অভার টাইমের টাকা দেয়া, সব আন্ডার গ্রাউন্ড শ্রমিকদের ছয় ঘণ্টা ডিউটিসহ ১৩ দফা দাবি কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেন। এদিন থেকে দিনাজপুর বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকে সব প্রকার উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

অপরদিকে শ্রমিক-কর্মচারীদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে ছয় দফা দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে খনিতে কয়লা উত্তোলনের ফলে ২০ গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর সমন্বয় কমিটির নেতারা।

দিনাজপুর বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি বাংলানিউজকে জানান, ন্যায্য দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ভণ্ডুল করতে তাদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে। কর্মবিরতির তৃতীয় দিন মঙ্গলবার কর্মকর্তা ও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হামলায় তাদের ১০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

তিনি আরও জানান, খনির এক হাজার ৪১ জন শ্রমিকের দাবি আদায়ের আন্দোলন। যতদিন দাবি আদায় না হবে ততদিন অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এছাড়া আন্দোলন চলাকালীন তাদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহাম্মদ বাংলানিউজকে জানান, আন্দোলনকারীদের অনির্দিষ্টকালের আন্দোলনের মুখে খনিতে কর্মরত দেশি-বিদেশি কমকর্তা-কর্মচারী ও স্বপরিবারে প্রায় ৩শ’ নাগরিক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। অবরোধকারীরা খনি এলাকার ভেতরে কোনো প্রকার খাদ্য, ওষুধ ঢুকতে দিচ্ছে না। কেউ বাইরে যেতে চাইলেই শ্রমিকরা হামলা চালাচ্ছেন। শ্রমিকদের কর্মবিরতির তৃতীয় দিনে হামলায় খনির ১০ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। বহিরাগত একটি স্বার্থান্বেষী মহল শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করে নিজেদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে।

পার্বতীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল হক প্রধান বাংলানিউজকে জানান, খনি এলাকায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া কর্মবিরতির তৃতীয় দিন খনি কর্মকর্তাদের ওপর হামলার অভিযোগে খনির ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) সৈয়দ ইমাম হোসেন বাদী হয়ে ৩০/৩৫ জনের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা দায়ের করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৮
আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।