ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আইসিটি আইন নিয়ে বিএফইউজের ১০ দফা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৮
আইসিটি আইন নিয়ে বিএফইউজের ১০ দফা আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সাংবাদিক নেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: এক তরফাভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হলে এর অপপ্রয়োগ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলার আশঙ্কায় আইনমন্ত্রীর কাছে ১০ দফা সুপারিশ ও নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)।

সোমবার (২৩ এপ্রিল) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রীর হাতে এসব দাবি তুলে দেন সাংবাদিক নেতারা। এ সময় বিএফইউজের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, মহাসচিব ওমর ফারুক, কোষাধক্ষ্য মধুসুদন মন্ডল ও সদস্য সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা উপস্থিত ছিলেন।

 

১০ দফা দাবির বাইরে বিএফইউজে আইসিটি আইন সংশোধনের একটি সুনিদিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাবটি হলো-এই আইনের কোন ধারা সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের প্রতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা থাকতে হবে। কোনো সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের ব্যবহারের ক্ষেত্রে তা তাৎক্ষণিক প্রয়োগ করা যাবে না।  

‘বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে এ বিষয়ে একটি সেল থাকবে, সেই সেলে অভিযোগ যাবে। সেলের অনুমোদন সাপেক্ষেই কেবল কোন সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করা যাবে। এই সেলের অনুমোদন ছাড়া সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের বেলায় এই আইন প্রয়োগ করা যাবে না। ’

মনজুরুল আহসান বুলবুল সাংবাদিকদের বলেন, ৫৭ ধারা নিয়ে যখন ব্যাপক অপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠে, তখন সরকারের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। এ ধারা সাংবাদিক বা গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে চাইলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। সেই ধারণা থেকেই এই প্রস্তাবনা দিয়েছি।

‘এই আইন গণমাধ্যম কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে যদি প্রয়োগ করা হয়। তাহলে প্রাথমিকভাবে প্রেস কাউন্সিলে যাবে। প্রেস কাউন্সিল একটি ছোট কমিটির মাধ্যমে যে কমিটির সদস্যরা (সম্পাদক পরিষদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন, সংসদ সদস্য, সরকারের প্রতিনিধি) যাচাই করে দেখবেন আইনটি গণমাধ্যম কর্মী বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যায় কি-না। এটি করা হলে প্রেস কাউন্সিল শক্তিশালী হবে। আমরাও পুলিশ কর্মকর্তার কাছে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে চাই না। ’
 
বিএফইউজে সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে বিভিন্ন উদ্বেগের কথা জানিয়েছি, বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলেছি। আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব থাকলে সেটা জমা দিতে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে। জমা দিলে সংসদীয় কমিটির পদ্ধতি অনুসরণ করে তারা বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন।

আরও পড়ুন>>
** 
আইসিটি আইন নিয়ে গণমাধ্যম নেতাদের সঙ্গে বৈঠক মে মাসে

‘এই আইনের বিভিন্ন ধারায় যেসব উদ্বেগ রয়েছে সেগুলো আমরা প্রকাশ করেছি। আমরা একটি প্রস্তাবনা দিয়েছি সেই ধারাগুলো সংশোধন করার জন্য। পাশাপাশি আমরা বলেছি, আইনটি পাস হওয়ার পর প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সেফটিনেট সাংবাদিকদের ও গণমাধ্যমের জন্য থাকা উচিত। ’

তিনি বলেন, সেই প্রেক্ষিতে আমাদের লিখিত মতামত আইনমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেছি। সেখানে বিভিন্ন ধারা সর্ম্পকে আমাদের ১০টি পর্যবেক্ষণ ও একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আছে। গতকাল (রোববার) স্পিকারের কাছেও একই প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছি। তিনি আমাদের আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার প্রস্তাব দিয়েছেন।  

‘আইনমন্ত্রীও বলেছেন, বিএফইউজের প্রস্তাব ছাড়া আরও দুয়েকটি সংগঠন থেকে পাওয়া গেলে তখন সেটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে বিস্তারিত আলোচনা করে নিশ্চয়ই একটি ভালো সুফল পাওয়া যাবে,’ যোগ করেন এই সাংবাদিক নেতা।  

বৈঠকে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৮
এসই/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।