ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আত্মসমর্পণকারী ১৩২ দস্যুকে অনুদান দিচ্ছে সরকার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
আত্মসমর্পণকারী ১৩২ দস্যুকে অনুদান দিচ্ছে সরকার আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, (বাংলানিউজ ফাইল ছবি)

বাগেরহাট: গত এক বছরে সুন্দরবনের দস্যু জীবন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা ১৩২ জনকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অনুদান তুলে দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

বুধবার (২৩ আগস্ট) সকালে বাগেরহাটের হেলাল উদ্দিন স্টেডিয়ামে এ অনুদান দেওয়া হবে। এ সময় ১৩২ জনের প্রত্যেককে নগদ ৫০ হাজার টাকা, এক লাখ টাকার চেক, একটি মোবাইল ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপহার সামগ্রী দেওয়া হবে।

২০১৬ সালের ৩১ মে থেকে ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সুন্দরবনের ১২টি দস্যুবাহিনীর ১৩২ জন সদস্য সরকারের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। এ সময় তারা ২৪৭টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১২ হাজার ৪৯০ রাউন্ড গুলি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে দিয়ে ক্ষমা চান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এইসব দস্যুদের নতুন জীবনে ফিরে আসার জন্য যা যা করা লাগবে, তার ঘোষণা দেন। তার নির্দেশেই বুধবার অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

আত্মসমর্পণ করা প্রথম বনদস্যুবাহিনী হচ্ছে মাস্টার বাহিনী। এ বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাস্টার (৪৮)। সহযোগী নয়জন হলেন, মো. সোহাগ আকন্দ (৩৮), মো. সোলায়মান শেখ (২৮), মো. সুলতান খাঁ (৫৮), মো. ফজলু শেখ (৩৫), মো. শাহীন শেখ (২৮), সুমন সরদার (৩৪), আরিফ বিল্লাহ (৩০), হারুন (২৯) ও কোকিল (২৫)।

একই বছরের ১৪ জুলাই মজনু ও ইলিয়াস বাহিনীর ১১ সদস্য ২৫টি দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও ১ হাজার ২০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করে। তারা হলেন, মো. মজনু গাজী (৪৩), মো. রবিউল ইসলাম (২৮), মো. ইসমাইল গাজী (৫০), মো. এনামুল সরদার (২৭), মো. ইদ্রিস আলী (২৮), মো. আবুল কালাম আজাদ (২০), মো. মনজু শেখ (৪৩) মো. জাহাঙ্গীর মোড়ল (২২), মো. বাবুল হাসান (৩০), মো. ইলিয়াস গাজী (২৭) ও মো. নাছির উদ্দিন (৩৩)।

০৭ সেপ্টেম্বর আলম ও শান্ত বাহিনীর ১৪ দস্যু আত্মসমর্পণ করেন। তারা হলেন, মো. আব্দুল বারেক তালুকদার শান্ত (৪৮), মো. মনির হাওলাদার (৪৫), মো. দুলাল মোল্লা ভান্ডারী (৪০), মো. ফরিদ হাওলাদার (২৬), মো. আনিছুর রহমান মোল্লা (৩৫), মো. বশির আহমেদ শেখ (৪৭), মো. ফরিদ গাজী (৩৮), মো. মোস্তফা শেখ (৪৬), মো. নুরুল ইসলাম (৪৪), মো. খোরশেদ শেখ (৫২), আলম সরদার (৩৪), হালিম গাজী (২৬), আবু বক্কর সিদ্দিক (২৭) ও আছাদুজ্জামান (১৮)।

১৯ অক্টোবর সাগর বাহিনীর ১৩ দস্যু আত্মসমর্পণ করেন। তারা হলেন, বাহিনী প্রধান আলমগীর শেখ ওরফে সাগর (৩৫), কামরুল ফকির (২৭), আব্দুল মালেক (৩৮), আব্দুল কাদের শেখ (৩৮), কাবির সরদার (৩৪), দেলোয়ার শেখ (২৮), নান্না ফকির (২৯), হাসান সরদার (২২), তৌহিদুল ইসলাম (৪৩), রাজু শেখ (২৮), লিটন হাওলাদার (৩২) ও তারিকুল গাজী (২৯)।

২৭ নভেম্বর খোকা বাবু বাহিনীর ১৩ দস্যু ২২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৩০০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করে। তারা হলেন, মো. আলমগীর শেখ ওরফে সাগর (৩৫), মো. কামরুল ফকির (২৭) মো. আব্দুল মালেক (৩৮), মো. কাদের শেখ (৩৮), মো. হাফিজুর রহমান শেখ (৪৬), মো. কাবীর সরদার (৩৪), মো. দেলোয়ার শেখ (৩৮), মো. হাসান সরদার (২২), মো. নান্না ফকির (২৯), মো. তৌহিদুল ইসলাম (৪৩), মো. রাজু শেখ (২৮), মো. লিটন হাওলাদার (৩৪) ও মো. তারিকুল গাজী (৩২)।

পরে ২০১৭ সালের ৬ জানুয়ারি নোয়া বাহিনীর ১২ দস্যু, ২৫টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ১০৫টি গুলিসহ আত্মসমর্পণ করে। তারা হলেন, মো. বাকি বিল্লাহ ওরফে নোয়া মিয়া (৩৭), মো. মনিরুল শেখ (৩৮), মো. মানজুর মোল্লা ওরফে রাঙ্গা (৪২), মো. মুক্ত শেখ (৩৭), মো. তরিকুল শেখ (৬০), মো. আকবর শেখ (৪২), মো. কিবরিয়া মোড়ল (৪০), মো. জাহাঙ্গীর শেখ ওরফে মেজ ভাই (৪৮), মো. আল আমিন শিকদার (৫০) মো. ইউনুচ শেখ ওরফে দুলাল ঠাকুর (৪০), মো. মিলাদুল মোল্লা ওরফে কালু ডাকাত (২৮) ও মো. মোশারফ হোসেন (৩৭)।

২৯ জানুয়ারি জাহাঙ্গীর বাহিনীর ২০ দস্যু ৩১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ৫০৭ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করে। তারা হলেন, মো. জাহাঙ্গীর শিকারী (৩৮), মো. শেখ ফরিদ (৩৮), মো. মারুফ শেখ (৪১), মো. আকরাম শেখ (৩৫), মো. মোস্তাহার শেখ (৫০),  মো. এরশাদ খান (৩৫), মো. গাজী তরিকুল ইসলাম (৩৫), মো. কামারুল শেখ (২২), মো. কামরুল হাসান (৩৮), মো. হায়দার শেখ (২৯), মো. হারুন শেখ (৫৫), মো. আইয়ুব আলী শেখ (৫২), মো. মাফিকুল গাজী (৩৮), মো. কবির গাজী (৩২), মো. পলাশ হোসেন (৩৫), মো. বাছের শিকদার (২৬), মো. আব্দুল হান্নান সরদার (২৩) মো. ইজাজ মোল্লা (৪১), মো. মহসিন মোড়ল (৩৯) ও মো. ইয়াকুব সরদার (২৯)।

৩০ মার্চ ছোট রাজু বাহিনীর ১৫ দস্যু ২১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১ হাজার ২ ৩৭ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করে। তারা হলেন, মো. রাজু মোল্লা ওরফে ছোট রাজু (৪৮), মো. মনিরুল ইসলাম (৩৫), মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী (২৯), মো. আফজাল হোসেন (২৫), মো. হারুন সরদার (৩৮), মো. বিল্লাল গাজী ওরফে ম্যাজিক বিল্লাল (৩৬), মো. খতিব গাজী ওরফে খতিব (৩৭), মো. মিকাইল গাজী (৩৭), মো. কামরুল সরদার (৩৯), মো. ফরহাদ সরদার (২৬), মো. সালাম গাজী (৩৭), মো. মিলন শেখ (২৫), মো. ফরহাদ গাজী (৩২), মো. সাব্বির শেখ (৪২) ও মো. মনিরুল গাজী মনি (২৭)।

সর্বশেষ ২৯ এপ্রিল আলিফ ও কবিরাজ বাহিনীর ২৫ দস্যু আত্মসমর্পণ করে। তারা হলেন, আলিফ বাহিনীর প্রধান মো. আলিফ মোল্লা ওরফে দয়াল (৪২), রেজাউল শেখ ওরফে ছোট (২৮), সফিনুর রহমান সফি (২০), আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে আবদুল্লা (৪০), হযরত আলী বরকন্দাজ ওরফে জামাই গুটি (৩৮), শাহিনুর আলম ওরফে শাহীন (২৯), জমির আলী জমু (৪৬), আল আমীন মোল্লা (৩৫), তাইজেল ওরফে বড় ভাই (২৭), সিরাজুল ইসলাম ওরফে সুমন (৪১), আলমগীর গাজী (২৬), কামাল শেখ (৩৮), হোসেন আলী ওরফে ভাগ্নে (২৮), সেলিম মোড়ল (৩৯), হযরত আলী গাইন ওরফে আঙুল কাটা হযরত (৩৯), পিয়ার আলী (৩৭), মো. লিটন বিশ্বাস ওরফে দেওয়ান (৩২), হাবিবুর রহমান ওরফে বাছা (২৭), মো. এনামুল গাজী ওরফে এনা (৩৫), ইউনুচ আলী শেখ ওরফে কবিরাজ (৩০), নাজিম শেখ (৩৮), আলতাব উদ্দিন ফকির (৩৩), আবু শেখ (৪৬), সেলিম হাওলাদার (৩০) ও মো. আশরাফ হোসেন ওরফে রাজু (৩৭)।

এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ আব্দুল আজীজ বাংলানিউজকে বলেন, আমি সুন্দরবন নিয়ে বেশ কয়েক বছর ধরে গবেষণা করছি। ২০১৫ সালের একটি গবেষণায় আমি ৬টি বিষয়ে মতামত দিয়েছিলাম তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি ছিল সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে বনদস্যুদের বের করতে হবে। সরকার এখন পদক্ষেপ নিয়েছে।  

পদক্ষেপ অব্যাহত থাকলে সুন্দরবনে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০১২২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০১৭
টিএ/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।