ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রথম সভা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ৯, ২০১৭
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রথম সভা

ঢাকা: বিচারপতিদের অপসারণে সংসদের ক্ষমতা সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর প্রথম সভা করেছেন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে গত ০৬ আগস্ট সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ২০১৭ সালের সভায় ছয় মাসের মধ্যে রায়/আদেশের নথিতে বিচারকদের স্বাক্ষর সংক্রান্ত বিষয়ে এবং বেঞ্চ অফিসার ও সহকারী বেঞ্চ অফিসারদের বদলির আদেশ জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভার সিদ্ধান্ত উভয় বিভাগের বিচারপতিদের জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের দফতর থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।


 
গত ০১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশিত হয়।
 
রায়ের আদেশ অংশে বলা হয়েছে, ‘সর্বসম্মতভাবে খারিজ করা হলো আপিল (ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল)। হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে যে মন্তব্য ছিল তা প্রত্যাহার করা হলো। সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের (২), (৩), (৪), (৫), (৬) ও (৭) নম্বর ক্লজ পুনর্বহাল করা হলো। সেইসঙ্গে অনুমোদন করা হলো আচরণবিধি, যা মূল রায়ে উল্লেখ রয়েছে’।

রায়ে বলা হয়েছে, ‘এ রায় ঘোষণার পর শূন্যতা সৃষ্টি হওয়ার অবকাশ নেই। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা বলবৎ হবে’।
 
ওই রায়ে বিচারপতিদের জন্য ৩৯ দফা নির্দেশনা দেওয়া  হয়। যে ৩৯ দফা আচরণবিধি না মানলে অসদাচরণ করেছেন বলে গণ্য হবে।
 
আর যদি কোনো বিচারকের অসদাচরণ বা বিচারকাজের অযোগ্যতা সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে বা অন্য কোনো সূত্রে প্রধান বিচারপতি জানতে পারেন- সে অভিযোগ তদন্তে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের তার পরবর্তী দু’জন জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে নিয়ে কমিটি করবেন।
 
চূড়ান্ত তদন্ত হওয়ার পর প্রধান বিচারপতি অভিযুক্ত বিচারপতিকে অপসারণে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবেন।
 
এটিই মূলত বিচারক অপসারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা।

ওই আচরণবিধির একটি হলো- ‘ঘোষিত রায় বা আদেশ প্রকাশ করতে অযাচিত বিলম্ব করা উচিৎ নয়। দ্রুত নিষ্পত্তি করা উচিৎ। একটি রায় ঘোষণার পর ছয় মাসের বেশি সময় পর স্বাক্ষর করা ঠিক নয়। তার আগেই স্বাক্ষর করতে হবে’।
 
০৬ আগস্টের কাউন্সিলের সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্‌হাব মিঞা ও বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
 
সভার সিদ্ধান্তে বলা হয়, ‘রায়/আদেশ ঘোষণার পর ছয়  মাস অতিক্রান্ত হয়েছে- এমন সকল মামলার রায়/আদেশ স্বাক্ষর করে নথিগুলো আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকদেরকে নির্দেশনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়’।
 
সভায় ‘আগামী ০৪ অক্টোবরের পর সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন বেঞ্চে কর্মরত বেঞ্চ অফিসার ও সহকারী বেঞ্চ অফিসারদের বদলির আদেশ জারিরও সিদ্ধান্ত হয়’।
 
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হওয়ার আগেই সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা আপনা-আপনিই বলবৎ হবে কি-না- সে নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। এ বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ কোনো কোনো আইন বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছিলেন যে, আপনা আপনিই এটি বলবৎ হবে না। এজন্য জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, নতুন আইন বাতিল হলে আগের আইন কার্যকর হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ০৯, ২০১৭
ইএস/আরআর/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।