ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৩)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৮
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৮৩) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
অন্যেরাও ব্যস্ত। সবকিছু পাহাড়ের পাশে গুহায় নিয়ে মজুদ করে রাখা হয়। সময়মতো মুরগি পুরে নিয়ে আসবার জন্য নোরা মুরগির উঠানের কাছে একটি বস্তা এনে রাখে।

উঠানের কাছে সে সামান্য বালিও স্তূপ করে রাখে। বেড়া তুলে ফেলার পর মাইক যাতে তা ছিটিয়ে দিতে পারে তাই তৈরি রাখা।

নোরা আর আগের মতো সেই বেখেয়ালি ছোট্ট মেয়েটি নেই। এখন সে অলসও নয়। সে শিখে গেছে যখন সে বাজেভাবে কাজ করবে তখন ওর জন্য সবাইকে কমবেশি ভুগতে হবে। তাই এবার সে যথাসাধ্য চেষ্টা করে এবং সেরা হতে পারাটাও ভালো একটা গুণ।  

কিছুক্ষণ বাদে মাইকের জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবার জন্য জ্যাক পাহাড়ে যায়। মাইক নৌকা ডোবানোর কাজ শুরু করে। নৌকাটা শিগগিরই কাঁটা ঝোপের নিচে পানির নিচে ডুবে যাবে। মাইক নিশ্চিত হয় যে এখানটায় রয়েছে তা কেউ কখনও জানতে পারবে না।

পেগি চারদিকে এমন সবকিছু খুঁজে বেড়াতে থাকে যা ওদের উপস্থিতি জানান দিতে সক্ষম। এ ধরনের জিনিস সে খুব বেশি খুঁজে পায় না, কারণ খাবার বা যে কোনো খেলার পরপরই শিশুরা সবাই মিলে জায়গাটা পরিপাটি করে রাখে। ভাঙা ডিমের খোসা পেলেই মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয়, খাওয়া হয়নি এমন অতিরিক্ত খাবার মুরগিদের দিয়ে দেওয়া হয় এবং কেবল উল বা সুতোর টুকরোর মতো জিনিসই বাতাসে দূরে কোথাও উড়ে চলে যাওয়া সম্ভব বলে তা খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।

এরপর পেগি পাহারায় যায় এবং তারপর নোরা। কাজটা খুবই একঘেঁয়ে ধরনের, পাহাড়ের ওপর বসে কেবল একটানা তাকিয়ে থাকা আর কিছু নয়। নোরা তাই তার পেন্সিল আর ড্রয়িং-বুক বের করে এবং সামনে যা যা দেখতে পায় সবকিছু এঁকে ফেলে। তাতে করে খুব দ্রুত সময় গড়ায়। পেগি সেলাই করে। তার হাতে সব সময় ফুটা-ফাঁটা সারাবার মতো প্রচুর সেলাইয়ের কাজ পড়ে থাকে, কারণ কাঁটা ঝোপে আটকে প্রতিদিনই কারো না কারো কাপড় ছিঁড়ছে। প্রতিটা সেলাইয়ের পর পেগি লেকের সামনে পেছনে তাকায়, কিন্তু কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না।

সেদিন সন্ধ্যায় মাইক পাহারায় ছিল এবং সবে রাতের খাবার খেতে নেমে আসবে, তখনই দূরে কিছু একটা দেখতে পায়। সে খুব খুঁটিয়ে দেখে। ওটা কি একটা নৌকা হবে? সে জ্যাককে ডাকে।  

জ্যাক! শিগগিরই এসো! আমি কিছু একটা দেখতে পাচ্ছি। ওটা কি একটা নৌকা, তোমার কী ধারণা?
সবাই পাহাড়ের দিকে ছুটে। জ্যাক স্থির চোখে তাকায়। ঠিক আছে, ওটা যদি কোনো নৌকা হয় তাহলে খুব ছোটই হবে, সে বলে।

কালো কিছু একটা, নোরা বলে। ওটা কী হতে পারে? ওহ্, আমি আশা করছি এখনই কেউ এখানে আসছে না।

বাচ্চারা একটানা তাকিয়ে থাকতে থাকতে তাদের চোখ জোড়া লাল করে ফেলে। আর যেটাকে এতক্ষণ ওরা ছোট্ট একটা নৌকা বলে ভাবছিল হঠাৎই সেটা আকাশে উড়তে শুরু করে দেয়!

ওটা সেই কালো রাজহাঁসটা না! যেটাকে আমরা আরেকদিন দেখেছিলাম! অট্টহাসি হেসে, জ্যাক বলে। আমাদের ভীষণ ভড়কে দিয়েছিল! দেখো, ব্যাটা এদিকে আসছে! খুব সুন্দর না?

বাচ্চারা চেয়ে দেখে, আকষর্ণীয় সেই কালো রাজহাঁসটা খুব ধীরে উড়ে উড়ে তাদের দিকে এগিয়ে আসছে, তখন ওর ডানা জোড়া থেকে অবাক করা এক গুনগুন শব্দ সৃষ্টি হয়। নোরার মুখটা রক্তিম হয়ে আসে, কারণ তখনই ওর মনে পড়ে। প্রথমবার দ্বীপের ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া একটা রাজহাঁসের ডানা ঝাঁপটানোর শব্দ শুনতে পেয়ে কী ভীষণ ভয় পেয়েছিল সে-কিন্তু এনিয়ে কেউ আর তাকে উত্যক্ত করে না। একটা নৌকা না হয়ে কেবল একটা রাজহাঁস হওয়াতে সবাই খুব কৃতজ্ঞবোধ করে।  

চলবে….

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৮
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।