ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

আন্তর্জাতিক

সূর্য যেনো ‘হীরার আংটি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
সূর্য যেনো ‘হীরার আংটি’ আমেরিকায় পূর্ণ সূর্যগ্রহণ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: স্থানীয় সময় মাঝ দুপুরে সন্ধ্যার আঁধার নেমে আসে মার্কিন মুল্লুকে। দেশটির বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে দিনের আলো গ্রাস করে নেয় পূর্ণ সূর্যগ্রহণ। আশপাশের অঞ্চল থেকেও দেখা যায় আংশিক গ্রহণ। 

তবে গ্রহণের সময় রাত হওয়ায় এই পূর্ণগ্রহণ থেকে বাদ পড়েছে বাংলাদেশের মানুষ। ঘরের বাইরে এসে উৎসবমুখর পরিবেশে মার্কিনিরা দেখেছেন পৃথিবী ও সূর্যের এই লীলা! গ্রহণ অবলোকন করেছেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পও।

 

পৃথিবী আর সূর্যের মাঝখানে চাঁদ এসে পড়লে সূর্যগ্রহণ ঘটে। পূর্ণ সূর্যগ্রহণে চাঁদের ব্যাস সূর্যের ব্যাসের তুলনায় বড় দেখায়। এতে একটি পৃথিবীর বড় অংশজুড়ে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে না।  

সূর্য গ্রহণ দেখছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মেলানিয়া ট্রাম্প।

এবারের সূর্যগ্রহণ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ শোরগোল হয়েছে কিছুদিন ধরে। কারণ এ অঞ্চলে সর্বশেষ পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল ১৯১৮ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে ১৯৭৯ সালের পর আর কোনো সূর্যগ্রহণ দেখা যায়নি। তাই হয়তো সবার মধ্যেই একটা আলাদা উত্তেজনা কাজ করছিল।  

চোখে প্রতিরক্ষা চশমা দিয়ে সূর্য ও পৃথিবীর এ অপরূপ লীলা দেখতে লাখ লাখ মানুষ ভিড় করেন।  স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ১৬ মিনিটে সূর্যগ্রহণ শুরু হয়।  

দুই মিনিটের মধ্যে চাঁদকে সম্পূর্ণভাবে অস্পষ্ট করে সূর্যের চারদিকে একত্রিত হয়। এ সময় সম্পূর্ণ সূর্যকে একটি ‘ডায়মন্ডের রিং’য়ের (হীরার আংটি) তো দেখায়। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঙ্গরাজ্য অরিগন, আইওয়া, মন্টানা, উইওমিং, নেব্রাস্কা, মিসৌরির কানসাস, ইলিনয়স, কেন্টাকি, টেনিসি, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, সাউথ ক্যারোলিনার বিভিন্ন এলাকায় দাঁড়িয়ে লাখ লাখ মানুষ সূর্যগ্রহণ অবলোকন করেছেন। এ অবস্থান ছিল প্রায় ৯০ মিনিট। এ সময় বিভিন্ন শহরে অন্ধকারাছন্ন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

ম্যাপ, বিবিসি থেকে নেওয়া

ইলিনয় শহরের কারবনডালে সূর্য-পৃথিবীর এ মিলন দেখার জন্যে আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হয়। অতিরিক্ত লোকজনের প্রায় ৬০ হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।  

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, গত ৫০০ বছরের মধ্যে আটলান্টিক মহাসাগরের দুই পাশে মোট আটটি সূর্যগ্রহণ হয়েছে। ২০৯০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ধরনের আরেকটি সূর্যগ্রহণ হবে না। কেননা সূর্যগ্রহণ খুব সহসা আসে না ।  

এর কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চাঁদ পরিভ্রমণ করে। কিন্তু পৃথিবী এবং সূর্যের তুলনায় চাঁদের কক্ষপথ কিছুটা ঝুঁকে থাকায় চাঁদ হয়তো খুব উপরে নয়তো খুব নিচে অবস্থান করে। সেজন্য প্রতি ১৮ মাসে চাঁদ একবার পৃথিবী ও সূর্যের সমান্তরালে আসে। তখন সূর্যকে ঢেকে দিয়ে পৃথিবীতে চাঁদের ছায়া পড়ে।

চাঁদের তুলনায় সূর্য ৪০০ গুন বেশি বড়। কিন্তু সূর্যের তুলনায় চাঁদ পৃথিবীর কাছাকাছি অবস্থান করে। সেজন্য পৃথিবী থেকে দেখতে চাঁদ ও সূর্যকে অনেকটা একই রকম মনে হয়।

পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখছেন লাখ লাখ মানুষ।  চাঁদ সবসময় একই কক্ষপথে সুচারুভাবে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে না। ফলে সূর্যগ্রহণ সবসময় দেখতে একই রকম হয় না। প্রতিটি সূর্যগ্রহণ সবসময় পৃথিবীর যে কোনো জায়গা থেকে দেখাও যায় না।

প্রতি ৩৭৫ বছর পর সূর্যগ্রহণ মোটামুটি পৃথিবীর সব জায়গা থেকে দেখা যায়। যদি আপনি আরেকটি সূর্যগ্রহণ দেখতে চান তাহলে পৃথিবীর অন্য জায়গায় যেতে হবে।  

আগামী ২০১৯ সালের ২ জুলাই দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল, চিলি ও আর্জেন্টিনায় পরবর্তী পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা দেবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৫২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।