ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

প্রশ্নফাঁসে চিহ্নিত ৩০০ মোবাইল নম্বর, অভিযানে পুলিশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮
প্রশ্নফাঁসে চিহ্নিত  ৩০০ মোবাইল নম্বর, অভিযানে পুলিশ কমিটির বৈঠক

ঢাকা: চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের অভিযোগের সঙ্গে জড়িত ৩০০ মোবাইল ও টেলিফোন নম্বর সনাক্ত করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। জড়িতদের মধ্যে শিক্ষার্থী ছাড়াও রয়েছেন অভিভাবক এবং অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। নম্বরগুলো ধরে গ্রেফতার অভিযানে নেমেছে পুলিশ। 
 

প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই বাছাই কমিটির প্রথম সভায় এসব তথ্য উঠে এসেছে আলোচনায়। সভায় বিভিন্ন মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে পর্যালোচনা করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কমিটির প্রধান এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর সভায় সভাপতিত্ব করেন।
 
সভা শেষে মো. আলমগীর বলেন, আমাদের দায়িত্ব প্রশ্নফাঁস নিয়ে যে অভিযোগ এসেছে সেগুলো নিয়ে কাজ করা। এ পর্যন্ত ৩০০ মোবাইল নম্বর চিহ্নিত করে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুক, টেলিফোনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর আওতায় চলে এসেছে তারা।
 
তিনি বলেন, এই নম্বরধারীদের অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রী, যারা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ে। এদের অভিভাবকরাও আছেন।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ওই নম্বরগুলোর মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নম্বরও পাওয়া গেছে।
 
অভিযোগে জড়িতদের মোবাইল নম্বরগুলো বন্ধ করা হচ্ছে জানিয়ে মো. আলমগীর বলেন, অনেকে বলছে তাদের নম্বর বন্ধ হলো, বলা হচ্ছে যে এই অপরাধে।
 
‘এদের বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযানে নেমেছে, ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। আরো গ্রেফতার করা হবে। শুধু গ্রেফতার নয়, এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
 
এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আরো বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারের খবর এসেছে।
 
সচিব মো. আলমগীর বলেন, টেলিফোন নম্বর যাদের পাওয়া যাবে সে অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক হোক, সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাবলিক পরীক্ষা আইন এবং সাইবার অপরাধ আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমনও হতে পারে তারা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন সেখানে তারা বহিষ্কার হবেন।
 
সভায় উপস্থিত পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, এ পর্যন্ত চারটি মামলা হয়েছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
 
চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের মধ্যে গত ৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জাতীয় মনিটরিং এবং আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির জরুরি সভায় ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ ও বিটিআরসি প্রতিনিধি, আট সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি এবং মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি কমিটি রয়েছে।
 
মো. আলমগীর বলেন, প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে কি-না, মিডিয়ায় যেসব তথ্য-প্রমাণ এসেছে কমিটি সেগুলো দেখে পর্যালোচনা করবে। সভায় তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেওয়া হয়েছে।
 
‘আসলেই ফাঁস হয়েছে কি-না, কতোক্ষণ আগে ফাঁস হয়েছে, তার প্রভাবটা কী, কতজন ছাত্রছাত্রী এর মধ্য দিয়ে প্রভাবিত হয়েছে, পরীক্ষা বাতিল করা হবে কি-না, বাতিল করা হলে কতোজন ক্ষতিগ্রস্ত হবে-এগুলো পর্যালোচনা করে সুপারিশ করবো’।
 
সচিব বলেন, দেখা যাচ্ছে যে প্রশ্ন পেয়েছে ৫-১০ মিনিট আগে। ওই প্রশ্ন পেয়ে তো বেশি প্রভাবের সুযোগ নেই। আবার দেখা গেছে বেশ আগে ফাঁস হলেও ৫ বা ১০ হাজার ছেলেমেয়ে পেয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা দিয়েছে ২০ লাখ। এমন বিষয়গুলো হিসাব-নিকাশ করবো।
 
আগামী রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দ্বিতীয় সভায় এসব বিষয় পর্যালোচনা করে কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ জানাবো। কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮
এমআইএইচ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।