ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

কৃষি

অবহেলিত সাভারের মেহেদী চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৮ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৮
অবহেলিত সাভারের মেহেদী চাষিরা সাভারের মেহেদী ক্ষেত। ছবি: বাংলানিউজ

সাভার (ঢাকা): প্রাচীনকাল থেকে ত্বক, চুল, নখ, পশুর চামড়া ও পশম রঙিন করার কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মেহেদী। বাংলাদেশে ঈদ ও বিয়ে উপলক্ষে এর ব্যবহার অনেকটা বেশি। সেইসঙ্গে মেহেদীর রয়েছে নানা প্রকার ওষুধি গুণাগুণও।
 

সাভারের উপজেলার রাজাশন, হেমায়েতপুর, ভার্কুতা, সালমাসি, ভরারীপাড়া, লুটেরচর, বাহেরচর, মাওয়ালীপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামে দিন দিন বেড়েই চলেছে মেহেদী পাতার চাষ। খাদ্যশস্য ফলানোর পাশাপাশি কৃষকেরা নানা প্রজাতির ফুল ও লাভজনক ফসলের চাষে নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছেন।

 
 
ব্যবসায় লাভ হচ্ছে দেখে অত্র উপজেলায় মাত্র ৮/১০ বছরের ব্যবধানে মেহেদী চাষির সংখ্যাও বাড়তে শুরু করে। কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে মেহেদী পাতার চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব রয়েছে বলে কৃষকের দাবি। জীবনকে রঙিন করে তুলতে যারা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে তারাই যেন আজ অবহেলিত।

এই উদ্ভিদের পাতার সঙ্গে বিভিন্ন দ্রব্য মিশিয়ে যে আধা-কৃত্রিম পদার্থ তৈরি হয়, সেটাও বাজারে মেহেদী নামেই পরিচিত। বাজারে কেমিক্যাল মিশ্রিত মেহেদী থেকে চাষের মেহেদীর গুনাগুণ বেশি থাকলেও প্রতিযোগিতার বাজারে তাদের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

মলুমিয়া নামের একজন মেহেদী চাষি অভিযোগ করে বাংলানিউজকে জানান, কৃষি কর্মকর্তারা কখনও তাদের খোঁজ রাখে না। খুব বেশি সমস্যার সম্মুখীন হলে নিজেরাই দ্বারস্থ হন কর্মকর্তাদের নিকট। কিন্তু তাদের পরামর্শ ঠিক মতো কাজ না হলে নিজেদের মনোমতো জমিতে সার ও কীটনাশক প্রদান করেন।

মোহাম্মদ আলাউদ্দীন নামের আরও একজন কৃষক আক্ষেপ করে বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে প্রতিমাসে খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকার মতো। সপ্তাতে অন্তত ২ বার ঔষধ প্রয়োগ করতে হয়। আমরা কষ্ট করে মেহেদী চাষ করি কিন্তু বাজারে বিভিন্ন বিদেশি টিউব মেহেদীর কারণে আমরা বাজার পাই না। ব্যবহার করা ঝামেলা লাগে, তাই সহজে কেউ নিতে চায় না।

আবার এ মেহেদী পাতা সংরক্ষণের নেই কোন সু-ব্যবস্থা। পাতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয়ে স্বল্প বা তুলনামূলক ভাবে কম দামে তা অনেক সময় বিক্রি করে দিতে হয়। গুনতে হয় লোকসান।

সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে মেহেদী চাষ করা হয়। কৃষকদের চাষ সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে বিভিন্ন আর্থিক সহায়তাও দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফখরুল আলম সমর বলেন, প্রশাসনের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের কর্মশালার মাধ্যমে মেহেদী চাষে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে উৎপাদিত মেহেদী রপ্তানি করার চিন্তা করা হচ্ছে।

কৃষকের দাবি সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা পেলে এখানকার উৎপাদিত মেহেদী বহির্বিশ্বে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad