ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজার থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কমছেই

মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৮
পুঁজিবাজার থেকে সরকারের রাজস্ব আয় কমছেই

ঢাকা: চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে সরকার ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে। মন্দা পুঁজিবাজারে লেনদেন কম হওয়ায় সরকার এই টাকা রাজস্ব হারালো। এর ফলে জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে ক্রমাগতভাবে সরকারের রাজস্ব কমেছে।

এদিকে সরকারে পাশাপাশি একই কারণে ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউজ মালিকদের লোকসান বেড়েছেই চলছে। এমন অবস্থা হয়েছে যে প্রতিমাসে প্রথম সারির ১০টি ব্রোকারেজ হাউজের লোকসান হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা করে।

এরপরের ৯০টি ব্রোকারেজ হাউজের লোকসান হয়েছে অন্তত ১ থেকে ১০ কোটি টাকার করে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় মার্চ মাসে আরো বেশি দরপতন হওয়ায় বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি কমেছে। ফলে সরকার জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে সাড়ে ৫ কোটি আর ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে দেড় কোটি টাকার রাজস্ব হারালো।

ডিএসইর তথ্য অনুসারে, মার্চ মাসে মোট ২০ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। এইদিনগুলোতে লেনদেন ৩৩৫ কোটি ৭৪ লাখ টাকা করে মোট লেনদনে হয়েছে ৬ হাজার ৭১৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এর আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয়েছিলো ১৯ কার্যদিবস। প্রতিদিনে ৪০৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা করে মোট লেনদেন হয়েছিলো ৭ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

ফলে ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় মার্চে লেনদেন কমে দাঁড়ায় ৯৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। যা শতাংশের হিসেবে ১৭ শতাংশ। আর সে কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের তুলনায় মার্চ মাসে ডিএসই থেকে সরকার রাজস্ব আয় বঞ্চিত হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৩ হাজার ৯৮৫ টাকা।

ডিএসই বলছে, দুই প্রকার রাজস্ব আয়ের মধ্যে মার্চ মাসে ডিএসই থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ২১ হাজার ৪৭৯ টাকা। এর মধ্যে ডিএসইর আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৫৩ বিবিবি ধারা অনুযায়ী ব্রোকারেজ কোম্পানি থেকে উৎসে কর বাবদ আয় হয়েছে ৬ কোটি ৭১ লাখ ৪৫ হাজার ৪১১টাকা।

অপরদিকে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৫৩ এম ধারা অনুযায়ী স্পন্সর ও প্লেসমেন্ট সিকিউরিটিজ বিক্রি বাবদ আয় হয়েছে ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৭৬ হজার ৬৮ টাকা।

একইভাবে এর আগের মাস ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারের আয় হয়েছিলো ১১ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার ৪৬৪ টাকার। এর মধ্যে ব্রোকারেজ কোম্পানি থেকে উৎসে কর বাবদ আয় হয়েছিলো ৭ কোটি ৬৭ লাখ ৯৪ হাজার ৫৭৩ টাকা। উদ্যোক্তাদের শেয়ার বিক্রি বাবদ আয় হয়েছিলো ৪ কোটি ৩১ লাখ ৩০ হাজার ৮৯১ টাকা।

এর আগের মাস জানুয়ারিতে দুই প্রকার লেনেদেন থেকে সরকারের আয় হয়েছিলো ১৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৯ হাজার ৮৩০ টাকা। সেই সময় মোট ২৩ কার্যদিবসে ১০ হাজার ৭২ কোটি ১৬ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছিলো। সেখান থেকেই এই টাকার রাজস্ব আয় হয়েছিলো।  

একই অবস্থা দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)।

এ বিষয়ে নাম না প্রকাশের শর্ত ডিএসই এক ব্রোকারেজ হাউজের এমডি বাংলানিউজকে বলেন, আমার দুটি অফিস। এই দুটি অফিস চালাতে গিয়ে গত মাসে লোকসান দিতে হয়েছে ৫ কোটি টাকা। মার্চ মাসে লোকসানের পরিমাণ আরো বেড়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের খরচ মেটাতে দিনে অন্তত ৫ কোটি টাকা লেনদেন হওয়ার প্রয়োজন সেখানে লেনেদেন হচ্ছে ১ থেকে ২ কোটি, কোনো কোনো দিন ৩ কোটি টাকা করে। এই মার্কেটে যাদের শাখা বেশি, যত বেশি লোকবল, তাদের ক্ষতি বেশি হচ্ছে। দ্রুত এই অবস্থা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৮
এমএফআই/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।