ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রাত জেগে চিকিৎসাসেবা দেন তারা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৮
রাত জেগে চিকিৎসাসেবা দেন তারা রাত জেগে চিকিৎসাসেবা দেন তারা । ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় থাকেন দিনমজুর আব্দুস সাত্তার। ফুড পয়জনিং থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন শুক্রবার (২৫ মে) সকালে। সন্ধ্যা নামতেই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে তার। উপায় না দেখে রাত ১০টা ৫২ মিনিটে সাত্তারকে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন স্বজনরা।

রাত ১২টা ০৭ মিনিটে হাসপাতালের সামনে দেখা মিললো বাশঁখালীর অটোরিকশাচালক হাসান মিয়ার। প্রসব বেদনায় কাতর স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে এসেছেন তিনি।

তার স্ত্রীকেও জরুরি বিভাগের প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে ভর্তি করা হলো হাসপাতালে।

সাত্তার কিংবা জেসমিন আক্তারের মতো নিম্নবিত্ত মানুষের চিকিৎসাসেবা দিতে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তখন দায়িত্ব পালন করছিলেন ডাক্তার সুস্মিতা বিশ্বাস, স্টাফ নার্স জামিল উদ্দিন আহমেদসহ আরও দুই নার্স।

ঘড়ির কাঁটা ১২টা পেরিয়ে গভীর রাতের ইঙ্গিত দিলেও তাদের চোখে ঘুমের চিহ্ন মাত্র নেই! একনাগাড়ে ক্লান্তিহীনভাবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা।

রাত জেগে চিকিৎসাসেবা দেন তারা ।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

শুক্রবার (২৫ মে) শেষ এক ঘণ্টায় কতজন রোগীকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে জেনারেল হাসপাতালের স্টাফ নার্স জামিল উদ্দিন আহমেদ বাংলানিউজকে জানান, সারাদিনে ৪৩ জন রোগী আমাদের কাছ থেকে জরুরি চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন। এর মধ্যে রাত ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সময়ে ৭ জন রোগী চিকিৎসা নেন।

তিনি বলেন, সেবা নেওয়া রোগীদের মধ্যে কুকুরে কামড়ানো, ডায়রিয়া, জ্বর এবং সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর সংখ্যা বেশি।

ডাক্তার সুস্মিতা বিশ্বাস বাংলানিউজকে জানান, জেনারেল হাসপাতালে সেবা নিতে আসা অধিকাংশ রোগী নিম্নবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির। মাত্র ১০ টাকায় টিকেট সংগ্রহ করে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা যে কেউ সহজেই এখান থেকে সেবা নিতে পারেন। আমরাও আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।

তবে হাসপাতালে আইসিইউ এবং সিসিইউ না থাকায় অনেক রোগীকে চিকিৎসাসেবা না নিয়ে ফেরত যেতে হয়।

সেবা ছাড়া কাউকে ফেরত দিতে হলে খারাপ লাগে, কষ্ট হয়। বলেন সুস্মিতা বিশ্বাস।

নার্স-ডাক্তারদের সেবায় সন্তুষ্ট রোগী ও তাদের স্বজনরাও। রোগী আব্দুস সাত্তারের বড় ভাই খোকন বাংলানিউজকে বলেন, সাত্তারের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে রাতে তাকে নিয়ে এখানে এসেছি। ডাক্তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এখন হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের মতো নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের চিকিৎসাসেবায় বড় ভরসা জেনারেল হাসপাতাল। এখানে রাতেও নার্স-ডাক্তারা যেভাবে ‍আন্তরিকতার সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।

বাংলাদেশ সময়: ০২০২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮

এমআর/এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।