ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভিক্ষা করে ৪ সন্তানকে পড়াচ্ছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ তৈয়ব

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৮ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৮
ভিক্ষা করে ৪ সন্তানকে পড়াচ্ছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ তৈয়ব ভিক্ষা করে ৪ সন্তানকে পড়াচ্ছেন ৭০ বছরের বৃদ্ধ তৈয়ব। ছবি: সোহেল সরওয়ার

চট্টগ্রাম: শাহসুফি আমানত শাহ (র.) মাজারের প্রবেশ পথের শেষের দিকে বসেন তিনি। প্রতিদিন রোজগার প্রায় ৪০০ টাকা। ভাত, নাশতাও ফ্রি। থাকেন ফুটপাতে।

বলছিলাম, ৭০ বছরের বয়সী তৈয়ব দুলাল মাইজভাণ্ডারির কথা। আমানত শাহ মাজারে ভিক্ষা করে চার সন্তানকে পড়াচ্ছেন তিনি।

বাড়ি কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নে। এখানে ভিক্ষা করছেন প্রায় ১০ বছর ধরে।

তার মতো ওইখানে ভিক্ষুক আছেন প্রায় ২০০। কারও বাড়িঘর নেই, এ জন্য ভিক্ষা করছেন। আর কেউ সন্তান টাকা দেয় না, এ জন্য বাধ্য হয়ে ভিক্ষুক পেশায় যুক্ত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৫ মে) রাত ১০টায় নগরের শাহ আমানত শাহের (র.) মাজার কথা হয় তার সঙ্গে।

তৈয়ব দুলাল প্রতিদিন সকালে খালি হাতে বসেন ভিক্ষা করতে। রাত শেষে কোনো সময়ে ৪০০ টাকা। কোনো সমযে ৫০০ টাকাও হয় তার।

তবে সব দিন যে এক রকম যায় তা নয়, মাসের ২০ দিনই মোটামুটি কিছু না কিছু অবশ্যই হয়। সবার ব্যবসায় লস আছে, কিন্তু তার ব্যবসায় নাকি কোনো লস নেই।

তৈয়ব দুলাল বাংলানিউজকে জানান, তার বয়স প্রায় ৭০ বছর। শরীরে  কোনো রোগ-বালাই নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাজারে ভিক্ষ‍া করেন। রাতে ঘুমোনোর আগে যে টাকা পান তা পাশের দোকানদারের কাছে জমা রাখেন। এভাবে প্রতিদিন হিসেবে করে এক মাস জমা রাখেন। পরে মাস শেষে সেই টাকা নিয়ে বাড়ি চলে যান।

 শাহসুফি আমানত শাহ (র.) মাজারে ‘মাজারে প্রায় ২০০ ভিক্ষুকে ইফতার-সেহেরি খাওয়ানো হয় ।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

তিনি আরও জানান, বাড়িতে তার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে সন্তান রয়েছেন। তিন মেয়েই ডুলাহাজারায় পড়ালেখা করেন। দুই ছেলের মধ্যে বড়টার বয়স ১৭ বছর। সে কৃষিকাজ করলেও ছোট ছেলেটা পড়ালেখায় আছেন।

১০ বছর ধরে ভিক্ষা করছেন জানিয়ে তৈয়ব দুলাল জানান, ভিক্ষা করে সংসার কোনো রকমে চলে। ভিক্ষা করলে সাধারণ মানুষ দুঃখের কথা শুনে নগদ টাকা বা খাবার দেন। এ কারণেই ব্যবসাটা ছাড়তে পারছেন না বলে জানান দুলাল।

শাহজাদা মারুফ খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘মাজারে প্রায় ২০০ ভিক্ষুকে ইফতার-সেহেরি খাওয়ানো হয়। এছাড়া ৪০-৫০ জন হাফেজ-মাওলানা, ৪০-৫০ জন খাদেমকে প্রতিদিন মাজারের পক্ষ থেকে খাওয়ানো হয়। ’

বাংলাদেশ সময়: ০০২৮ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।