ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ছয় দফা আন্দোলনের ছবি তোলায় পুলিশ ধরে নিয়ে যায়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮
ছয় দফা আন্দোলনের ছবি তোলায় পুলিশ ধরে নিয়ে যায় প্রবাসী আলোকচিত্র-সাংবাদিক তাপস বড়ুয়ার প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন দৈনিক আজাদী সম্পাদক এমএ মালেক। ছবি: সোহেল সরওয়ার, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: ষাটের দশকে প্রচুর ছবি তুলেছেন জানিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এমএ মালেক বলেছেন, আমি ছয় দফা আন্দোলনের ছবি তুলতে গেলে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। আমি আর ছবি তুলতে পারিনি। একসময় মনে হতো দামি ক্যামেরায় ছবি তুললে ছবি ভালো হয়। পরে জাপানে গিয়ে একটি দামি ক্যামেরা কিনেছিলাম।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির গ্যালারিতে প্রবাসী আলোকচিত্র-সাংবাদিক তাপস বড়ুয়ার পঞ্চম একক আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এমএ মালেক বলেন, তাপসের ভালো ছবি হয়।

তার দৃষ্টি আমার নেই। ও থাকে বোস্টনে।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি এবং এমআইটি সেখানে। বিশ্বের সেরা মানুষগুলো সেখানকার সৃষ্টি। আমি দেখেছি বিদেশিরা হার্ভার্ডের ভাস্কর্যের জুতোর অংশে সালাম করে। জুতোর অংশটা সোনার মতো ঝকঝক করে। আমিও সালাম করে ফেলেছিলাম। তাপসের ছবি লাইফ ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছে। আমাদের গর্ব সেই ছবি প্রথমে আজাদী ছেপেছিল।

তিনি বলেন, আশির দশকে যখন তাপস আজাদীতে ছিল তখন একজনকেই সব করতে হতো। এখন তিনজন কাজ করছে। এখন পরিধি অনেক বড় হয়ে গেছে। তাপসের রক্তে, ব্রেনে ফটোগ্রাফি। শোয়েব ফারুকী, মইনুল আলমরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার নিয়ে আসছে। এটা আমাদের গর্বের। তারা চট্টগ্রামকে বিশ্বে পরিচিত করছেন, চট্টগ্রামে ভালো ফটোগ্রাফি হয় সেটি জানান দিচ্ছেন। তাপসের ছবি থেকে তরুণ আলোকচিত্রীদের অনেক শেখার আছে, জানার আছে। ডিজিটাল ফটোগ্রাফির অনেক গুণ। ডিজিটাল আসার আগে বলা হতো, ছবি মিথ্যা বলে না। এখন ডিজিটাল এসে তা মিথ্যে হয়ে গেছে।   

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আলোকচিত্রী মইনুল আলম, শোয়েব ফারুকী, দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহেদ মালেক, সমাজসেবক সীমান্ত তালুকদার প্রমুখ। অনুভূতি জানান তাপস বড়ুয়া।

উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নাজিমুদ্দীন শ্যামল, সাবেক সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক রূপম চক্রবর্তী, ডিজাইনার আইভী হাসান প্রমুখ। উদ্বোধন পর্ব শেষে প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন অতিথিরা।

তাপস বড়ুয়া বাংলানিউজকে জানান, বোস্টনের ঋতু পরিবর্তনের অপরূপ কিছু দৃশ্য আমি ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। একবার সাত ইঞ্চি তুষারপাত হয়েছিল। দরজা খুলতে পারছিলাম না আমরা। অনেক কষ্টে ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলেছি। দু’টি বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয় বোস্টনে। বহুজাতিক মিলনমেলা। কালারফুল সব উৎসব। সেখানে যে পার্ক আছে, সেখানে অনেক কাঠবেড়ালি। আমাদের সঙ্গে তফাৎ হচ্ছে সেই প্রাণিগুলো আপনি হাত বাড়ালে কাছে চলে আসবে। মানুষের ভালোবাসায় তাদের সংকোচ, ভয় কেটে গেছে। এ রকম প্রতিটি ছবিতে একেকটি গল্প আছে। আর ৭২টি গল্প দিয়ে সাজিয়েছি এ প্রদর্শনী। যাতে আমার প্রিয় শহর চট্টগ্রামের মানুষকে ছবিতে বোস্টন দেখাতে পারি।

ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান নকশার সিইও ইসমাইল চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, অনাথ শিশু ও দুস্থদের কল্যাণে প্রদর্শনীর ছবি বিক্রির অর্থ ব্যয় করা হবে। প্রতিটি ছবি সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকায় সংগ্রহ করতে পারবেন আগ্রহীরা।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

মানুষের ছবি তুলতেই বেশি পছন্দ তাপস বড়ুয়ার 

বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭

এআর/টিসি

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।