ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জীবন বাঁচাবে তরুণ উদ্ভাবকদের ড্রোনটি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৮
জীবন বাঁচাবে তরুণ উদ্ভাবকদের ড্রোনটি জীবন বাঁচাবে তরুণ উদ্ভাবকদের ড্রোনটি। ছবি: সোহেল সরওয়ার, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: পানিতে ডুবে যাচ্ছেন বা কোনো কারখানায় আগুন লাগায় আটকে আছেন? চিন্তার কোনো কারণ নেই। চট্টগ্রামের খুদে উদ্ভাবকেরা এমন একটি ড্রোন উদ্ভাবন করেছে, যেটির মাধ্যমে আপনাকে বাঁচাতে সাহায্য করবে।

জেলা প্রশাসনের আয়োজিত ডিজিটার উদ্ভাবনী মেলায় চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা এমন একটি ড্রোন উদ্ভাবন করলেন। ড্রোনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘লাইফ সেভিং ড্রোন’।

তৈরি পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা প্রায় ঘটে৷ এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে৷ আগুন নেভাতে ছুটে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা৷ এ ছাড়া নদীর মাঝখানে বা সাগরে যাত্রীবাহী কোনো জা‍হাজ হঠা্ৎ ডুবে গেল। যাত্রীরা পানিতে ডুবু ডুবু অবস্থা।

 ওই মুহূর্তে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে যোগ দেবে ড্রোন৷ শুধু তাই নয়, ড্রোনটি বিভিন্ন জঙ্গি নির্মূলেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

যেভাবে কাজ করবে ড্রোনটি

ড্রোনটি উদ্ভাবনে কাজ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তানভিরুল হাসান, ফাহিম জাওয়াদ ও জাহিদ হোসাইন নোবেল।

বাংলানিউজকে তারা জানান, এটি সচরাচর কোনো ড্রোন নয়। সাধারণ ড্রোন ১ থেকে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ করে। কিন্তু এটিতে হাই পাওয়ার দিলে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ করতে পারবে। এ ছাড়া এই ড্রোনের মাধ্যমে প্রায় ৫ কেজি ওজনের যেকোনো কিছু বহন করা যাবে।

সাগরে ডুবে যাচ্ছে এমন কোনো ব্যক্তির কাছে ড্রোনটির মাধ্যমে লাইফ জ্যাকেট পাঠিয়ে তার প্রাণ বাঁচানো যেতে পারে৷ জ্যামে আটকে পড়ে আছে কোনো মুমূর্ষু রোগী। আশপাশের হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় মেডিসিন নিয়ে ড্রোনটির মাধ্যমে ওই রোগীকে সরবরাহ করা যাবে।

এছাড়া কোনো জঙ্গির আস্তানা রেকি করতে ড্রোনটি সাহায্য করতে পারবে। যেটি রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে চালানো যাবে।

তানভিরুল হাসান বলেন, ‘এটি বাংলাদেশে এই প্রথম। যেটির মাধ্যমে চারকোনায় ক্যামেরা সেট করা যাবে। এটি প্রায় ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত কাজ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ড্রোনটি সাহায্য করতে পারবে। ধরুন, কোনো জায়গায় ঘাপটি মেরে বসে আছে জঙ্গিরা তাহলে এটির মাধ্যমে ওই জায়গা রেকি করা যাবে। মাইন পুঁতে রাখছে কিনা তা সার্চ করা সম্ভব হবে। ’

‘অটোমেটিক ডাস্ট সেপারেটিং সিস্টেম’

শুধু ড্রোন নয়, ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় আরও চমৎকার কিছু উদ্ভাবন চোখে পড়বে।  যেমন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের আরেকটি উদ্ভাবন হলো ‘অটোমেটিক ডাস্ট সেপারেটিং সিস্টেম ফর সিটি করপোরেশন’। এটি ময়লা আবর্জনাগুলো সম্পদে রুপ দেবে।

অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী আসাদ ইশতিয়াক বাংলানিউজকে জানান, শুধু ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রচুর ময়লা জমে। সিটি করপোরশন ময়লাগুলো সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে ফেললেও অনেক ময়লা রয়ে যায়। ফলে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে নিয়মিত।

আসাদ ইশতিয়াক জানান, ময়লায় তিন ধরেনর উপাদান থাকে। জৈব পদার্থ, প্লাস্টিক ও লৌহ পদার্থ। উদ্ভাবন করা এই মেশিনের মাধ্যমে ময়লাগুলো যথাযথ ব্যবহার হবে। মেশিনে তিনটি অংশ আছে। যখন ময়লাগুলো ফেলা হবে তখন যেগুলো জৈব পদার্থ সেগুলো জৈব পদার্থ অংশে আর যেগুলো প্লাস্টিক সেগুলো প্লাস্টিক অংশে এবং যেগুলো লৌহ সেগুলো লৌহ অংশে জমা হবে।

উদ্ভাবনটি বাস্তবে রূপ নিলে দিনে দেড় লাখ টাকা আয় করা সম্ভব বলে জানান ইশতিয়াক।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩,২০১৮

জেইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।