ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টল বীর মহিউদ্দিনকে শেষ শ্রদ্ধা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
চট্টল বীর মহিউদ্দিনকে শেষ শ্রদ্ধা মৃত্যুর খবর পেয়ে সাবেক মেয়রের বাড়িতে ভিড় করেন হাজারো মানুষ। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম: চট্টল বীর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিময় স্থান নগরীর দারুল ফজল মার্কেটের দলীয় কার্যালয়ের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখানে প্রাণের নেতা মহিউদ্দিনকে শেষ শ্রদ্ধা জানান চট্টগ্রামবাসী।  

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ২টার পর ষোলশহরের চশমা হিলের বাসভবন থেকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মরদেহ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেওয়া হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ তাকে একনজর দেখতে সেখানে ভিড় জমান।

 

আরও পড়ুন>>
** 
বিকেলে লালদিঘী ময়দানে জানাজা, পারিবারিক কবরস্থানে দাফন
** চট্টল বীরের জীবনাবসান

মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল সাংবাদিকদের বলেন, জুমার নামাজের পর বাবার দীর্ঘদিনের স্মৃতি বিজরতি দারুল ফজল মার্কেটে নেওয়া হয়েছে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে নেওয়া হবে লালদীঘির ময়দানে।

 

‘চট্টগ্রামের জনমানুষের নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরী লালদীঘি ময়দানে অনেক জনসভা করেছেন। সেই লালদীঘির ময়দানেই শুক্রবার বাদ আসর তার জানাজা হবে। ’


এদিকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামে গেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনসহ আরও অনেকে।  

এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটি সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, সংসদ সদস্য ডা. আফসারুল আমীন, নজরুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ ছালাম, সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরীসহ আরও অনেক নেতাকর্মীও মহিউদ্দিনকে শেষবার দেখতে যান।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে বন্দরনগরীর মেহেদিবাগে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এবিএম মহিউদ্দিন।  

১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার গহিরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী।  

ছাত্র জীবনেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া মহিউদ্দিন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং যুদ্ধের পর জড়িয়ে পড়েন শ্রমিক লীগের রাজনীতিতে। পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট জাতির জনককে হত্যার পর প্রতিশোধ নিতে পালিয়ে ভারতে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। দীর্ঘদিন পালিয়ে থেকে এরপর ১৯৭৮ সালে দেশে ফেরেন তিনি।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মহিউদ্দিন চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের শীর্ষত নেতা ছিলেন। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ছাড়াও নেতৃত্ব দিয়েছেন বন্দর রক্ষা আন্দোলন ও অসহযোগ আন্দোলনেও।  
দেশজুড়ে পরিচিতি পেলেও রাজনীতিতে চট্টগ্রামের গণ্ডিতেই নিজেকে ধরে রেখেছেন সব সময়। বারবার লোভনীয় আসনের আমন্ত্রণ পেয়েও থেকেছেন চট্টগ্রামের গণমানুষের নেতা হয়ে।  

পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।
২০০৫ সালের মেয়র নির্বাচনে তিনি ক্ষমতাসীন বিএনপির একজন মন্ত্রীকে পরাজিত করে তৃতীয়বারের মতো চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচিত হন।  

তার সময়ে পরিচ্ছন্নতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ‘অনন্য দৃষ্টান্ত’ স্থাপন করে। মৃত্যুর আগে তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।