ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

‘পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে আমরা ব্যর্থ’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৩ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৮
‘পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে আমরা ব্যর্থ’ গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ-ছবি- শাকিল

ঢাকা: পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেছেন, আমাদের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকার পানিতে লবণাক্ততা ও আর্সেনিক প্রবণতা রয়েছে। এটা শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই হয়নি। এজন্য আমরা অনেকটাই দায়ী।

রোববার (১১ মার্চ) রাজধানীর স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টারে দেশের ৮টি  দুর্যোগপ্রবণ জেলার ১২ উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় স্থানীয় জনগণের অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধি বিষয়ে একটি ভিত্তি জরিপ গবেষণাপত্র প্রকাশ করা হয়। বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন-এমজেএফ কর্তৃক গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. নুরুল কাদির, বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ’র নির্বাহী পরিচালক ড. আতিক রহমান এবং সুইডিশ সিডার প্রতিনিধি ইলভা সালসন্ট্রেন্ড।  

তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনাগুলো হতে হবে পরিবেশের ভারসাম্যকে ধরে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতি মোকাবেলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমার ব্যক্তিগত অভিমত হচ্ছে, জলবায়ুর নীরব পরিবর্তন হচ্ছে। এতে আমাদের কৃষিতে প্রভাব পড়েছে। যেমন আমাদের হাওর অঞ্চলে আগাম ফসলের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। এজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় অবশ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। তাই গবেষণাটি পুর্নর্বিবেচনার অনুরোধ করছি।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সাইক্লোন, জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা, তাপমাত্রার অস্বাভাবিক ওঠানামা এবং বৃষ্টিপাত দেশের বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলার উপকূলীয় এলাকা দক্ষিণ-পশ্চিম ও মধ্য উপকূলীয় এলাকা, গাইবান্ধার চরাঞ্চল এবং পাবর্ত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান ও রাঙামাটির মানুষের জীবনযাত্রা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু দেখা গেছে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পাহাড়ি এলাকার যে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে এ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক তথ্য-উপাত্তেরও অনেক অভাব রয়েছে। অর্থাৎ পার্বত্য জেলাগুলো গবেষকদের এবং সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে কম মনোযোগ পেয়েছে ।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঘটে যাওয়া দুর্যোগ দুর্বিপাকের মধ্যে ঝুঁকি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো নানা ধরনের সরকারি সুবিধা পেয়ে থাকে। যেমন জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, পরীক্ষার ফলাফল, কৃষি বিষয়ক তথ্য এবং সতর্কীকরণ বার্তা। এইসব এলাকার শতকরা ৬৩ ভাগ মানুষ কৃষিজীবী।  

গবেষণায় কয়েকটি সুপারিশ উঠে এসেছে। এগুলো হচ্ছে- আগাম যে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে এর ফলাফল কেমন হচ্ছে তা আবার খতিয়ে দেখতে হবে, যাতে ব্যাপক সংখ্যক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর অবস্থা যথেষ্ঠভাবে মনিটর করতে হবে। দুর্যোগ চলাকালে এবং পরে গৃহপালিত পশুপাখির জন্য পশু চিকিৎসক রাখতেই হবে। সেইসঙ্গে উন্নত করতে হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং অডিও ভিজুয়্যাল মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচারণা বাড়াতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৮
এসএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।