ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মনোকথা

কেবল মনোযোগহীনতাই এডিএইচডি নয়

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৫
কেবল মনোযোগহীনতাই এডিএইচডি নয়

ঢাকা: অনেকেই মনে করেন এডিএইচডি মানে মনোযোগহীনতা বা কম মনোযোগ। এডিএইচডি সম্পর্কে এটি একটি প্রচলিত ধারণা।

কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এডিএইচডি এর চেয়ে অনেক বেশি জটিল। এর সঙ্গে দৈনন্দিন জীবন-যাপনের পরিকল্পনার সম্পর্ক রয়েছে, যা ‘কগনিটিভ স্কিল’ নামে পরিচিত।

আচরণগত উন্নয়ন সংক্রান্ত শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ মার্ক বারটিন তার চমৎকার বই ‘মাইন্ডফুল প্যারেন্টিং ফর এডিএইচডি: এ গাইড টু কাল্টিভেটিং কাল্‌ম, রিডিউসিং স্ট্রেস অ্যান্ড হেলপিং চিল্ড্রেন থ্রাইভ’ এডিএইচডি’র সঙ্গে আইসবার্গের তুলনা করেছেন।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অভিভাবকদের ক্ষেত্রে ‘এডিএইচডি’ বুঝে ওঠা। কেবল অমনোযোগী বা মনোযোগহীনতাই একমাত্র উপসর্গ না।

মনোযোগ ব্যবস্থাপনা
এডিএইচডি’র অর্থ মনোযোগী হওয়ার ক্ষমতা নেই- এমন না। এ রোগে আক্রান্ত হলে কোনো কিছুর প্রতি মনোযোগী হওয়া কঠিন। বারটিনের মতে, এক্ষেত্রে চাহিদা অনুযায়ী মনোযোগ নিবিষ্ট করা ও পরিবর্তন করা কঠিন হয়ে যায়।

যে কারণে এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুরা হট্টগোলপূর্ণ এলাকায় কথা বলার সময় খেই হারিয়ে ফেলে।

কর্মকাণ্ড ব্যবস্থাপনা
এটি হলো নিজের কর্মকাণ্ড ও আচরণ পর্যবেক্ষণের ক্ষমতা। ভুল থেকে এগুলো শিখতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে।

দৈনন্দিন কাজ ব্যবস্থাপনা
এর মধ্যে রয়েছে আয়োজন করা, পরিকল্পনা করা, একাধিক কাজের মধ্যে গুরুত্ব বিবেচনা করা ও সময় ব্যবস্থাপনা। শিশু যখন ধীরে ধীরে বড় হয়, তখন অমনোযোগিতা সমস্যায় রূপ নেয়।

তথ্য ব্যবস্থাপনা
এডিএইচডি আক্রান্ত মানুষের কর্মস্মৃতি খুব কম হয়। যে কারণে দৈনন্দিন একাধিক কাজ ব্যবস্থাপনায় এরা অদক্ষ হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের অনেক কাজ একসঙ্গে দিলে তারা কথা শোনে না- মূলত তারা নির্দেশনা ভুলে যায়। এক্ষেত্রে কাগজে লিখে দিয়ে শিশুর এ সমস্যা দূর করা যেতে পারে।

আবেগ ব্যবস্থাপনা
এডিএইচডি আক্রন্ত শিশুরা আবেগপ্রবণ ও প্রতিক্রিয়াশীল হয়। তারা অন্য শিশুদের তুলনায় বেশি বিষণ্ন ও হতাশাগ্রস্ত হয়ে থ‍াকে। কারণ তাদের আবেগ ও প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকে না।

কর্মপ্রচেষ্টা ব্যবস্থাপনা
এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্থায়ী প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়। এর অর্থ তারা কাজের মূল্যায়ন করে না- এমন নয়। শিশুদের ক্ষেত্রে একই বিষয় দেখা যায়।
এসব শিশুদের জোর করা হলে ফলাফল বিপরীত আসে। বাহ্যিক চাপ তাদের ‘কগনিটিভ স্কিল’ কমিয়ে দেয়।

অন্য বিষয়
বইটিতে বারটিন আরও অন্তর্ভুক্ত করেছেন, এডিএইচডি আক্রান্ত ব্যক্তি এবং শিশু ‘রুটিন’ মেনে চলার আপ্রাণ চেষ্টা করে। এসব শিশুদের অভিভাবকদের উচিত সন্তানকে সহযোগিতা করা। এ জন্য অভিভাবকদের এডিএইচডি সম্পর্কে পড়ালেখা করা দরকার। সঠিকভাবে জানা গেলে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।