বাংলানিউজের মনোকথা পাঠকদের জন্য রইলো শুভেচ্ছা। প্রায়ই আমরা অনেকে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি নিজেদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা নিয়ে।
ঢাকা: নিক। পুরো নাম নিক ভুজিসিক। ১৯৮২ সালের ৪ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মেলবর্ন শহরে দুসকা ভুজিসিক ও বোরিস ভুজিসিকের ঘরে জন্ম হয় তার।
তবে টেট্রা-অ্যামেলিয়া সিন্ড্রোমের (অটোসোমাল রেসিসিভ টেট্রামেলিয়া নামেও পরিচিত) কারণে চার হাত-পা ছাড়াই পৃথিবীতে আসেন নিক।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে নিকের শারীরিক অক্ষমতার কারণ সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা নেই। এর মধ্যে তার নিতম্বের বাম পাশে একটি ছোট পা রয়েছে, যা তাকে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে।
এর সাহায্যেই তিনি টাইপ করতে পারেন। এমনকি ফুটবলে লাথিও দিতে পারেন।
অন্যকে উৎসাহিত করতে নিক অনুপ্রেরণাদায়ী বক্তা হয়ে উঠলেও প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবদি দাঁত মাজাসহ নানা যুদ্ধে তাকে টিকে থাকতে হয়।
নিক খুব আত্মবিশ্বাসী এমন নয়, তবে জীবনকে তিনি সব সময় ইতিবাচক দৃষ্টিতেই দেখেন। তবে শুরুতে এমন ছিল না। স্কুল জীবনে মাত্র ১০ বছর বয়সে নিক আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
সে যাত্রায় বাঁচার পরে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, “পালিয়ে যাওয়া নয়, ইতিবাচক দৃষ্টিতে জীবনকে দেখে লড়াই করতে হবে”।
উচ্চ বিদালয়ে পড়ার সময়ে ১৭ বছর বয়সে মঞ্চে বক্তব্য রাখেন নিক। এরপরই বক্তা হওয়ার আগ্রহ জাগে তার ভেতর।
নিকের সম্পর্কে তার বন্ধুরা বলেন, তিনি এমন একজন মানুষ যিনি আনন্দের জন্য রোমাঞ্চ অভিযান খুঁজে বেড়ান। যে কারণে নিয়মিত তিনি সাঁতার কাটতে এবং স্কাই ডাইভে যান।
তিনি বিশ্বাস করেন, তাকে নিয়ে ঈশ্বরের নিশ্চয়ই কোনো পরিকল্পনা রয়েছে।
ইতোমধ্যে ৫০টির বেশি দেশে ঘুরে এক হাজার বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
নিক বলেন, ‘ঈশ্বর আমাকে এভাবে জন্ম দিয়েছেন এবং আমার সঙ্গে যা যা হয়েছে, তার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো পরিকল্পনা রয়েছে। তুমি তোমার সাধ্য মতো চেষ্টা করে যাও এবং ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখো, তিনি তোমাকে ফেরাবেন না’।
গত ৩০ জুলাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তার পেইজে ‘ফেইলিয়র ইজ নট অ্যান অপশান’ শিরোনামে একটি লেকচার পোস্ট করেন।
তিনি বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন আমি সব জায়গায় ধাক্কা খাচ্ছিলাম। কিন্তু ব্যর্থতা আমাকে পরাজিত করতে পারেনি। আমি ঘুরে দাঁড়িয়েছি।
নিকের ‘হোয়াই মি, গড?’, ‘ডু দ্য রাইট থিং-ফর এ লং টাইম’, ‘হু ভ্যালিডেটস ইউ?’ ছাড়াও অসংখ্য লেকচার তার ফেসবুক পেইজে পাওয়া যায়।
পাশাপাশি ‘লাইফ উইদাউট লিমিট’, ‘আনস্টপেবল’, ‘স্ট্যান্ড স্ট্রং’, ‘লিমিটলেস’, ‘লাভ উইদাউট লিমিট’ ছাড়াও তার সর্বচ্চো বিক্রিত অনেক বই রয়েছে তার।
সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই নিক তার ফেসবুক পেইজে তার দ্বিতীয় সন্তানের বাবা হওয়ার ঘোষণা দেন নিক।
পোস্টে তিনি বলেন, “বন্ধুদের জন্য আমাদের কিছু প্রিয় মুহূর্তের ছবি পোস্ট করা হলো। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে”।
এতে ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন মানুষ “লাইক” দেন এবং ৮৩ হাজার জন শেয়ার করেন। একই সঙ্গে তার পরিবারের ছবি তুলে দেওয়ার জন্য আলোকচিত্রী নিকোলেতা দাসকালাকিসকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
বর্তমানে নিক স্ত্রী কানাই মিয়াহারা এবং দুই বছর বয়সী সন্তান কিওসি জেমস ভুজিসিককে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে বসবাস করেন।
প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। আপনারা জানাতে পারেন বাংলানিউজের ‘মনোকথা’ পাতায় আপনি কি ধরনের প্রতিবেদন দেখতে চান। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের।
আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।
সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।
এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।
আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ ও লেখা পাঠানোর জন্য আমাদের ইমেইল করুন- [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৫
এটি/এমএ
মনোকথা
নিক ভুজিসিক
‘ফেইলিয়র ইজ নট অ্যান অপশান’
মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।