ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

মনোকথা

আপনার সমস্যা, আমাদের সমাধান

অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার: পরিবারের বোঝা জরুরি

মনোকথা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৫
অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার: পরিবারের বোঝা জরুরি

ঢাকা: মনোকথা আপনাদের ‍পাতা। আপনার মনস্তাত্ত্বিক নানা সমস্যা সমাধানে আমরা রয়েছি আপনার পাশে।

সমস্যা জানিয়ে জেনে নিন সম্ভাব্য সমাধান। ময়মনসিংহ থেকে মনোকথার এক পাঠক জানিয়েছেন তার সমস্যার কথা, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সমাধান জানানো হলো।

আপনার সমস্যা
আমার নয় মাস আগে দুই পায়ে (রানে) চুলকানি হয়। এর দুই মাস পরে আমি পুরোপুরি ভালো হয়ে যাই। তবে এখনও আমার মনে হয়, আমি ভালো হইনি। আমার নাভি থেকে উরু পর্যন্ত অদৃশ্য কিছু লেগে আছে। মনে হয় এখনও চুলকায়। কিন্তু আমার কোনো চুলকানি নেই। এই চিন্তায় আমার রাতে ঘুম হয় না। চুলকানিটা এক রকম অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। চুলকিয়ে ঘা করে ফেলি। চিন্তায় মাঝে মাঝে ভারসাম্য হারিয়ে যায়। তবে আমার সিজোফ্রেনিয়া নেই। পরিবারের কেউ বিষয়টা জানে না। আমি এখন কী করব?

আমাদের সমাধান
আপনার রোগটির নাম ‘অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার’। এটি একটি মানসিক রোগ। এ রোগের প্রধান বৈশিষ্ট হলো-

কোনো একটা চিন্তা বারবার মাথায় বা মনে আসতে থাকে। আপনি জানেন চিন্তাটা যুক্তিযুক্ত নয়, চিন্তার কোনো দরকার নেই, তবুও বারবার চিন্তাটি আসে। চিন্তাটি মন থেকে সরিয়ে ফেলতে চাইলে বেশি করে আসে। নিজেকে তখন অসহায় মনে হয়। পাশাপাশি দৈনন্দিন কাজের ক্ষতি তো রয়েছেই।

আরেকটা বড় সমস্যা হলো, ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কেউ রোগের বিষয়টি বুঝতে চায় না। মনে করে, এমন চিন্তা না করলেইতো হয়। বাস্তবতা হলো, এমন চিন্তা কেউ করতে চায় না। ইচ্ছা করেও করে না। তবুও বারবার চলে আসে।

‘অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিজঅর্ডার’ কে বাংলায় বলা হয়, সুচিবায়ু। সাধারণত সুচিবায়ু বলতে অনেকে কেবল বারবার হাত ধোয়া বা ময়লা পরিষ্কার করাকে বুঝে থাকেন। যে কারণে এ রোগকে পাত্তা দিতে চান না অনেকে। এটি যে রোগ সেটা মানতেও অনেকে নারাজ।

আপনি যা করতে পারেন
আপনি শিগগিরই চিকিৎসার ব্যবস্থা নিন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ রোগের চিকিৎসা পাবেন। দীর্ঘ সময় নিয়ে এ রোগের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। তবে খরচ খুব বেশি না। ধৈর্য ধরে চিকিৎসা চালিয়ে য‍াওয়াটাই বড় বিষয়।

আপনি ঠিকেই বলেছেন, এটা সিজোফ্রেনিয়া না। মানসিক ভারসাম্য হারানোর কারণ হলো, বিনা কারণে আপনার মনে হচ্ছে চুলকাচ্ছে এবং আপনি চুলকাচ্ছেন। এতে আপনার ঘুম নষ্ট হচ্ছে। ফলে আপনি ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছেন।

আপনার পরিবারের সদস্যদের জানালে তারা যদি বিষয়টি বুঝতে পারেন তবে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে সুবিধা হবে।

আপাতত আপনি ট্যাবলেট- সেট্রা ৫০ মি. গ্রা. একটা করে সকালে নাস্তার পর খেতে পারেন। তবে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।

প্রিয় পাঠক, ‘মনোকথা’ আপনাদের পাতা। আপনারা জানাতে পারেন বাংলানিউজের ‘মনোকথা’ পাতায় আপনি কি ধরনের প্রতিবেদন দেখতে চান। মনোরোগ নিয়ে যে কোনো মতামত ও আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন আমাদের।

আমরা পর্যায়ক্রমে অভিজ্ঞ মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনাদের প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দেবো। আপনি চাইলে গোপন রাখা হবে আপনার নাম-পরিচয় এমনি কি ঠিকানাও।

সমস্যার কথা জানানোর সঙ্গে সমস্যার বিস্তারিত বিবরণ, আপনার নাম, বয়স, কোথায় থাকেন, পারিবারিক কাঠামো এবং এজন্য কোনো চিকিৎসা নিচ্ছেন কি না এ বিষয়ে বিস্তারিত আমাদের জানান। শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই সমস্যা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা জানানো সম্ভব হবে।

এছাড়া মানসিক সমস্যা সংক্রান্ত বা এ বিষয়ে বিশেষ যে কোনো লেখা যে কেউ পাঠিয়ে দিতে পারেন আমাদের।

আপনার সমস্যা, মতামত বা পরামর্শ ও লেখা পাঠানোর জন্য আমাদের ইমেইল করুন- [email protected]



ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব

সহযোগী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়


বাংলাদেশ সময়: ১৩১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৫
এটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।