ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রতিমা বিসর্জনে সম্পন্ন শ্যামাপূজা

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৪
প্রতিমা বিসর্জনে সম্পন্ন শ্যামাপূজা ছবি: ফাইল ফটো

ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটে কালীপ্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে চার দিনব্যাপী শ্রী শ্রী শ্যামাপূজার আনুষ্ঠানিকতা।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে রাজধানীর বনগ্রাম রোডের রাধাগোবিন্দ জিউ ঠাকুর মন্দিরসহ অন্যান্য মন্দিরের কালীপ্রতিমা বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটে বিসর্জন দেওয়া হয়।



প্রতি বছর কার্তিক মাসের অমাবস্যার রাতে কালীপূজা বা শ্যামাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। চলতি বছর গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অত্যন্ত জাঁক-জমকের সঙ্গে মা কালীর পূজা করেন। সে রাতে অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে শুভ শক্তির বিজয়ের লক্ষ্যে কালী মায়ের আরাধনা করেন ভক্তরা। সুখ, শান্তি, জ্ঞান ও সম্পদের জন্য এ উত্সবের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। মধ্যরাতে পূজার হোম, যজ্ঞ ও অঞ্জলি দেওয়া শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়।

এবারও ব্যাপক উত্সাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির, জগন্নাথ হল, রমনা কালীমন্দির, সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির, রাজারবাগের বরদেশ্বরী কালীমন্দির, পোস্তগোলা মহাশশ্মানঘাট, লালবাগ মহাশশ্মানঘাট, পুরান ঢাকার জয়কালী মন্দির রোডের রামসীতা মন্দির, ঠাঁটারিবাজার শিবমন্দির, সূত্রাপুরের গৌতম মন্দির, বিহারী লাল জিঁউ মন্দির, ঢাকেশ্বরী বাড়ি রামকৃষ্ণ মিশন, বনগ্রাম তরুণ সংসদ, উত্তর মসুন্দী মহাপ্রভুর আখড়া, তাঁতীবাজার, শাখারিবাজার, সূত্রাপুর, কোতোয়ালি, মতিঝিলসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে কালীপূজার আয়োজন করা হয়।

শ্যামাপূজার দিন পোস্তগোলা মহাশশ্মানে হাজারো ভক্তের সমাগম ঘটে। পোস্তগোলা মহাশশ্মান কমিটির সভাপতি নিতাই চন্দ্র ঘোষ এবং রাধাগোবিন্দ জিঁউ ঠাকুর মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় হিন্দু মৈত্রী পরিষদের সভাপতি অরুণ সরকার রানা সেখানে সমবেতদের দীপাবলি ও শ্যামাপূজার শুভেচ্ছা জানান।

হিন্দু সম্প্রদায় তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব কালীপূজার পাশাপাশি একই দিন দীপাবলি উৎসবও উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে উদযাপন করেন। এরপর থেকে গত চারদিন শ্যামাপূজার নানা উৎসব-আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরেই দীপাবলির আলোয় প্রত্যেক সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর মন্দির-বাড়ি-ঘর ভেসে ওঠে।

ইতিহাসে পাওয়া যায়, রামচন্দ্র অসুর শক্তি রাবনকে বধ করে এদিন অযোধ্যায় ফিরে আসেন। তার আগমন উপলক্ষ করে অযোধ্যাবাসী আলোর রোশনাই দিয়ে রামচন্দ্রের বিজয় উৎসব উদযাপন করেন।
  
হিন্দু সম্প্রদায় বাড়িতে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে স্বর্গীয় পিতা-মাতা, আত্মীয়-স্বজনের আত্মার শান্তি কামনা এবং শ্রী শ্রী শ্যামা মায়ের কাছে স্বামী-সন্তান ও স্বজনরা যাতে সুন্দর থাকতে পারেন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় প্রার্থনা করেন।

দীপাবলি অর্থ আলোর উত্সব। অশুভ ও অকল্যাণের প্রতীক অন্ধকারকে দূর করে শুভ ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় এ উত্সব উদযাপন করা হয়।

বহু প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী দীপাবলির সন্ধ্যায় তেল দিয়ে সহস্র  মাটির প্রদীপ জ্বালানো হয়। সন্ধ্যায় প্রতি গৃহে দীপ প্রজ্বলন ও সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পূজা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।

উৎসব দীর্ঘায়িত করা বাঙালির অভ্যাস। কালীপূজা এক রাতের জন্য হলেও উৎসব প্রিয় বাঙালি কয়েকদিন ধরে উদযাপন করেন। পরদিন জলাশয়ে বিসর্জন না দিয়ে  মন্দিরে মা কালীকে কয়েকদিন রেখে নানা উৎসবে মেতে ওঠেন তারা।

পূজা দেওয়ার পাশাপাশি পাড়ায় পাড়ায় মন্দিরে চলে ধূপ-ধুনো সহকারে আরতি প্রতিযোগিতা। ঘটা করে চলে সাংস্কৃতিক উৎসব।

সনাতন ছাড়াও শিখ ও জৈন ধর্মাবলম্বীরা শক্তির দেবী হিসেবে যুগ যুগ ধরে  কালীপূজার আয়োজন করে আসছেন।

 বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ