ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

রাণীশংকৈলের রামরায়দিঘি

মোঃ আব্দুল লতিফ লিটু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১০
রাণীশংকৈলের রামরায়দিঘি

ঐতিহাসিক রামরায় দিঘি এখন নেচার পার্ক ও পিকনিক স্পট হিসেবে গড়ে উঠেছে। এর অবস্থান ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈলে।

তবে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার অভাবে এটি এখনো পূর্ণতা পায়নি। তবে এই দিঘির ঐতিহ্য ধরে রাখা ও পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।

রামরায় দিঘিকে নেচার পার্কে রূপান্তরিত করতে দিঘির পাড়ের চারদিকে ৬-৭ বছর আগে ১ হাজার ২৬০টি লিচুগাছ লাগানো হয়, যা কয়েক বছর ধরে ফল দিচ্ছে। এর সৌন্দর্য বাড়াতে দিঘির পাড় ও পেছনে কয়েক হাজার বনজ ও ঔষধি গাছ রোপণ করে জেলা প্রশাসন। ফলে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ মনোরম হয়ে ওঠে। সাবেক জেলা প্রশাসক জালাল আহম্মেদ ব্যক্তিগত উদ্যোগে রামরায় দিঘিকে নেচার পার্ক হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন বলে জানা গেছে।

রামরায় দিঘি বরেন্দ্রভূমিতে প্রাচীন জলাশয়ের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয়। ৯০০ মিটার দীর্ঘ ও ৫৫০ মিটার প্রশস্ত এই দিঘির গড় গভীরতা ৮-৯ মিটার। ড. সেনের ‘দিনাজপুরের ইতিহাস’ বই থেকে জানা যায়, ১৮০০ সালের শেষ দিকে এ অঞ্চল ছিল মালদুয়ার পরগনার অন্তর্গত। তখন তার নাম ছিল রামগঞ্জ। সে সময় এ এলাকার জমিদারি ছিল নাথপন্থী দুই রানীর হাতে। রানীরা ছিলেন প্রজাবৎসল। প্রজাদের পানির কষ্ট নিবারণের জন্য তারা ৩৬০টি পুকুর খনন করেন। রামরায় দিঘি তার একটি।

রাণীশংকৈল উপজেলা শহরের ৩ কিলোমিটার দণি-পশ্চিমে হোসেনগাঁও ইউনিয়নের উত্তরগাঁও গ্রামে ৫২ দশমিক ২০ একর জমি জুড়ে এই রামরায় দিঘি । দিঘির চারপাশের পাড়ের উচ্চতা ২২ ফুট। ২০০২ সালের ১৮ জুলাই এখানে প্রথম গাছ লাগানো হয়। দিঘির নতুন নামকরণ হয় রানীসাগর। প্রাথমিকভাবে দিঘির চারদিকে ১২৬০টি লিচু, ৪০০ কাঁঠাল ও ৫০০০ বিভিন্ন জাতের ভেষজ ও বনজ গাছ লাগানো হয়। ইতিমধ্যে এখানে মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। দর্শনার্থীর কাছে আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে দিঘিতে নৌবিহারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

নেচার পার্কের এ দিঘিটি শীতকালে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে। দিঘির চারদিকে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি। দিঘিটি সংরণ ও আকর্ষণীয় করতে ২০০৪ সালে ৩ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। কিন্তু পরে আর এ ব্যাপারে কোনও অগ্রগতি হয়নি। তবে শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য দোলনা ও মাটিতে বাঁধানো চেয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিদিন স্থানীয় পর্যটকের কোলাহলে উত্তরগাঁও এখন ব্যস্ত এলাকা। দিঘির চারপাশে রাস্তা ও রেস্ট হাউস নির্মাণসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ করা হলে ঐতিহাসিক এ দিঘিটি নেচার পার্ক ও পিকনিক স্পট হিসেবে আরও গুরুত্ব পাবে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৮০০, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।