ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

কক্সবাজারে ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি’

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২, ২০১৯
কক্সবাজারে ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি’

কক্সবাজার: ‘শিউলী ঝরা শরতের মেঘশূন্য নীলাকাশ হেমন্তের কণক ধানের সোনালী সম্ভার প্রকৃতিকে করে প্রাণময়। বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতিতে শরতের রয়েছে উজ্জল উপস্থিতি। শরৎ নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস ও প্রবন্ধ। চর্যাপদের পদকর্তা থেকে শুরু করে আজকের তরুণতম কবির রচনায়ও শরৎ তার নান্দনিক ব্যঞ্জনা নিয়ে উদ্ভাসিত। কবিদের কবিতায়ও শরৎ পেয়েছে প্রাধান্য। তাইতো কবির পংক্তিমালা হয়েছে শরৎ সিক্ত।’ 

শরৎকে মহিমান্বিত করে উপস্থাপকের কণ্ঠে এভাবেই ভেসে আসছিল  শরৎ বন্দনা। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) রাতে পর্যটন শহর কক্সবাজারের শহীদ দৌলত ময়দানে ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি, ছড়িয়ে গেল ছাপিয়ে মোহন অঙ্গুলি’ শিরোনামে শরৎ সন্ধ্যার আয়োজন করে কক্সবাজার সত্যেন সেন শিল্পী গোষ্ঠী।

 

অনুষ্ঠান শুরু হয় ‘শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি’ সমবেত কণ্ঠে রবীন্দ্রনাথের এই গানটি দিয়ে। এরপর ‘তোমার খোলা হাওয়া’ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন সত্যেন সেন শিল্পী গোষ্ঠীর ক্ষুদে শিল্পীরা।  

ছিল সংগীত পরিবেশনাও।  ছবি: বাংলানিউজঅনুষ্ঠানের ফাঁকে চলে কথামালা। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কবি মানিক বৈরাগী। অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রবীন্দ্র সাহিত্যে শুধুমাত্র বারো হাজার ফুলের নাম আছে, কিন্তু আমরা কজনে কয়টা ফুলের নাম জানি।  তাই আমাদের বেঁচে থাকতে হলে রবীন্দ্রনাথকে জানতে হবে,পড়তে হবে, আর প্রকৃতিকে রক্ষা করতে হবে।

মানিক বৈরাগী বলেন, রবীন্দ্রনাথ তার সাহিত্য কর্মে বাংলার রূপ বৈচিত্র্য অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, প্রকৃতির লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যেপাধ্যায় প্রকৃতির রূপবৈচিত্র্য দেখেই সমৃদ্ধ সাহিত্য রচনা করেছেন।  

‘আগামী প্রজন্ম রবীন্দ্র, নজরুল, বিভূতি, জীবনানন্দের কবিতায় বাংলার এই প্রকৃতিকে খোঁজে পাবে না, যদি আমরা সবাই মিলে এই প্রকৃতিকে রক্ষা না করি। আসুন নতুন প্রজন্মের জন্যই আমরা প্রকৃতিকে রক্ষা করি, ধরিত্রীকে বাঁচাই। ’

কথামালার ফাঁকে একে এক চলে গান, নৃত্য আর আবৃত্তি। সেই সঙ্গে চলে শরৎ বন্দনা।  

‘বলো শাম শাম’ আর ‘খোলা হাওয়া’ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। ‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্র ছায়ায়’ আবৃত্তি করেন খোরশেদ আলম।  

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা।  অনুষ্ঠানে ‘শ্রাবণ ঝরে পড়ে’, ‘আমায় প্রশ্ন করে নীল ধ্রুব তারা’ একটা ছিলো সোনার কন্যা’, ‘এই যে তোমার প্রেম ওগো’, ‘মধু মালতী ডাকে আয়’, শোন গো দক্ষিণা হাওয়াসহ বেশ কটি গান গেয়ে শোনান সত্যেন সেন শিল্পী গোষ্ঠীর কচি-কাঁচা শিল্পীরা।  

আর যাদের কণ্ঠে সেই শরৎ বন্দনা বারবার ভেসে আসছিল, অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন কবি মনির মোবারক ও রিমঝিম ইসলাম।  

অনুষ্ঠানে অংশ নেন, নাট্যজন খোরশেদ আলম, চিত্রশিল্পী তানভীর সরওয়ার রানা, সায়ন্তী ভট্টাচার্য্য, নিলয় দাশ, অপি ভট্টচার্য্য ও নিলয় চৌধুরী।

সময় বয়স রাত প্রায় সোয়া নয়টা। উপস্থাপকের কণ্ঠে তখন সমাপনী সুর বেজে উঠলো ঠিক এভাবেই- ‘গোধূলী লগ্নে লালচে সূর্যের সঙ্গে কাশফুলের এই যে লুটোপুটি খেলা, প্রশান্তির দুয়ারে এ যেনো শরতেরই আশ্বাস-শুভ্রতার রঙে সেজে ওঠে পৃথিবী। প্রত্যাশার পালে লাগুক হাওয়া আর সেই সঙ্গে শরতের স্নিগ্ধতায় মলিন হোক সব কালিমা। সুখ আর সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক দেশ। ’  

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০১৯
এসবি/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।