ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

রানা প্লাজা: অতীত-বর্তমানের বোঝাপড়া ও প্রদর্শনী

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৯
রানা প্লাজা: অতীত-বর্তমানের বোঝাপড়া ও প্রদর্শনী রানা প্লাজা ধস: অতীত ও বর্তমানের বোঝাপড়া শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী

রানা প্লাজা ধসের ৬ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে সাভারের রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে ‘রানা প্লাজা ধস: অতীত ও বর্তমানের বোঝাপড়া’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রানা প্লাজা ধসের সময়ে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতারের তোলা ৭টি ছবি বড় বিলবোর্ডের আকারে ছাপিয়ে রানা প্লাজার যেসব জায়গায় ছবিগুলো তোলা হয়েছিলো সেসব জায়গায় স্থাপন করা হয়।  

ছবিগুলোর মাঝে তাসলিমা আখতারের সারা দুনিয়ায় পরিচিত এবং রানা প্লাজার শ্রমিক হত্যার আইকনিক ছবিটিও স্থান পায়।

ওই ছবিতে দুজন নারী-পুরুষ শ্রমিক জীবনের শেষ মুহূর্তে পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। ছবিটি সারা দুনিয়ায় রানা প্লাজাসহ শ্রমিকদের জীবনের দুর্বিসহ চিত্র যেমন সামনে এনেছে একইসাথে ছবিটি সামনে এনেছে শ্রমিকদের মানুষ হিসাবে স্বপ্ন এবং বেঁচে থাকার আকুতি।  

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে আয়োজিত ওই প্রদর্শনীতে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির গত ৬ বছরের কর্মসূচির কিছু ছবিও স্থান পায়।

ম্যাগনাম ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট এবং নিউইয়র্কে বসবাসরত আলোচকত্রী সুজান ম্যাসিলাসের নিকারাগুয়ার ওপর করা আলোককচিত্র ‘রিফ্রেমিং হিস্ট্রি’র মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে তাসলিমা আখতারের প্রদর্শনীটি আয়োজিত হয়।  

রানা প্লাজার হারিয়ে যাওয় স্মৃতি স্মরণে ছবিগুলো বড় করে প্রদর্শন করেন তাসলিমা আখতার।

২০১১ সালে ম্যাগনামের বৃত্তি পেয়ে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ফটোগ্রাফি কোর্সে এশিয়ার মধ্যে নির্বাচিত হন তাসলিমা আখতার। সেই সময় তার নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ম্যাগনামের যৌথ কোর্সে সরাসরি শিক্ষক সুজান ম্যাসিলাসকে পান তাসলিমা আখতার। সুজান ম্যাইসিলাসের নিকারাগুয়া নিয়ে করা ৪০ বছরের দীর্ঘ সময়ের কাজে সমোজা শাসনের পতনের ২৫ বছর পূর্তিতে ২০০৪ সালে তিনি নিকারাগুয়ার সংগ্রামের তোলা ১৮টি ছবি একইভাবে বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করেন যেসব জায়গায় ছবিগুলো তোলা হয়েছিলো।

রানা প্লাজা ধস: অতীত ও বর্তমানের বোঝাপড়া প্রদর্শনীর উদ্বোধন করে বক্তব্য রাখেন নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা খাতুন। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাস নাইন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল শামা, সাভারের সংগঠক শাহ আলম। আহত শ্রমিক রূপালী, নিহত শান্তনার বোন সেলিনা এবং রানা প্লাজার নিহত পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আহত শ্রমিকরা।

বক্তারা বলেন, দেখতে দেখতে রানা প্লাজা ধসের ৬ বছর পার হতে যাচ্ছে আসছে ২৪ এপ্রিল। ২০১৩ সালের ঐ দিনে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছে হাজারো তরুণ। এত বড় ঘটনার ৬ বছরেও শাস্তি হয়নি সোহেল রানাসহ দোষীদের।

বক্তারা অবিলম্বে সোহেল রানাসহ দোষীদের শাস্তি দাবি করে বলেন, সরকার মালিক কিংবা বায়ারের কাছে প্রাণ হারানো মানুষগুলো মেশিনের মতো কেবলই সংখ্যা। এদের স্মৃতি তাই বিস্মৃত করার চেষ্টা চলে। অথচ আমাদের কাছে এরা হাজারো প্রাণ হাজারো স্বপ্ন। ভুলতে নয়, এই স্মৃতিকে আমরা জিইয়ে রাখতে চাই। জিইয়ে রাখতে চাই সেই দুঃসহ অনুভূতিকে, যা থেকে সঞ্চারিত হবে লড়াইয়ের শক্তি।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৯
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।