ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

প্রাচীন ইনকাদের কার্নিয়াল সার্জারি

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৮
প্রাচীন ইনকাদের কার্নিয়াল সার্জারি প্রাচীন ইনকাদের কার্নিয়াল সার্জারি

ঢাকা: অ্যানেস্থেসিয়া ও উন্নত মেডিক্যাল সরঞ্জাম আবির্ভাবের অনেক আগে থেকেই মানুষ চিকিৎসার স্বার্থে জটিল সব সার্জারিতে সফলতা অর্জন করে। এরমধ্যে ‘ট্রিপ্যানাশন’ নামে সার্জারির চর্চাটা সম্ভবত সবচেয়ে ভয়ংকর।

ট্রিপ্যানাশন এক প্রকার কার্নিয়াল সার্জারি। প্রাচীন ইনকাদের মধ্যে এটি প্রচলিত ছিল।

এই সার্জারিতে ড্রিলের মাধ্যমে ছিদ্র করা হয় জীবিত মানুষের মাথার খুলি। মূলত কারও ওপর শয়তান বা দুষ্টু আত্মা ভর করেছে এমন সন্দেহ জাগলে তার এ সার্জারির করা হতো।  

সম্প্রতি পেরুতে পাওয়া যায় ছিদ্র বিশিষ্ট কয়েকশ মাথার খুলি। এগুলো আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪০০ সালের।  

প্রাচীনকালে কোনো রকম অ্যানেস্থেসিয়া ছাড়া এ ধরনের সার্জারি নিষ্ঠুর ও অত্যাচার মনে হতে পারে। তবে গবেষকরা বলছেন, ইনকা সভ্যতার নিউরোসার্জনরা ছিলেন এ কাজের জন্য বেশ দক্ষ। কারণ একই ধরনের সার্জারির ক্ষেত্রে আরও কয়েক শতাব্দী পরও বাকি বিশ্বের চিকিৎসকদের সফলতার হারের তুলনায় ইনকাদের সফলতা ছিল প্রায় দ্বিগুণ।

মায়ামি ইউনিভার্সিটির ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিটেশনের প্রফেসর ডেভিড এস কুশনার বলেন, আমরা ইনকাদের এই সার্জারি পদ্ধতি এবং এর মাধ্যমে যে রোগের চিকিৎসা করা হতো সেগুলো সম্পর্কে অনেক কিছুই এখনও জানি না। তবে এটা নিশ্চিত সার্জির ক্ষেত্রে ইনকাদের দক্ষতা ছিল আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। এ সার্জারি থেকে মৃত্যুর হার ইনকাদের সময় ছিল ১৭ থেকে ২৫ শতাংশ এবং আমেরিকান সিভিল ওয়ারের সময় ৪৬ থেকে ৫৬ শতাংশ। প্রাচীন ইনকাদের কার্নিয়াল সার্জারিপার্থক্যটা অনেক বেশি। গবেষকরা এটা ভেবে অবাক হচ্ছেন যে, কীভাবে প্রাচীন পেরুভিয়ান সার্জনরা ১৯ শতাব্দীর সার্জনদের থেকেও অনেক বেশি এগিয়ে গেলো।

‘ওয়ার্ল্ড নিউরোসার্জারি’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রটিতে প্রায় ৮০০ মাথার খুলির কথা উল্লেখ রয়েছে। এগুলো পাওয়া যায় পেরুর আন্দিন প্রদেশে। সবগুলো খুলিতেই ট্রিপ্যানাশনের আলামত পাওয়া যায়। কোনো কোনো খুলিতে একাধিক ছিদ্র চিহ্নিত করেন গবেষকরা।  

গবেষকদের মতে, কার্নিয়াল সার্জারিতে ইনকাদের এ সফলতা অর্জন সম্ভব হয়েছে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কারণে। এ সভ্যতার চিকিৎসকরা প্রায় ২০০০ বছর ধরে চর্চাটা চালিয়ে গেছেন এবং সেটাকে আরও উন্নত করেছেন।  

গবেষক কুশনার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমরা জানিনা কীভাবে প্রাচীন ইনকারা সার্জারির সময় ইনফেকশনের হাত থেকে রক্ষা পেত। তবে তারা যে পদ্ধতিটা ব্যবহার করতো সেটা বেশ কার্যকর। তাছাড়া ওই আমলে উন্নত অ্যানেস্থেসিয়া ছিল না। তারা খুব সম্ভবত কোকা পাতা ব্যবহার করতো।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।