ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ফিচার

বহুরূপী মাহবুব উল আলম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
বহুরূপী মাহবুব উল আলম বহুরূপী মাহবুব উল আলম

কখনো দরবেশ বেশে, কখনো পুরোদস্তুর ভদ্রলোক, কখনো আবার বেশ ভাবগম্ভীর। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে না দেখলে হয়তো তাকে চেনাই দায়। প্রথম প্রথম তাকে রাশভারী মনে হতো। কিন্তু পরিচয় হওয়ার পরে দেখেছি কত সহজে মানুষকে আপন করে নিতে পারেন তিনি।

তার বড় বৈশিষ্ট্য- একজন আগাগোড়া নির্মোহ ব্যক্তি তিনি। আশপাশের লোকজন যখন ধান্দা ফিকিরে ব্যস্ত, তিনি তখন মগ্ন কবিতা-ছড়া কিংবা নাটক লেখায়।

জাগতিক বিত্তবৈভব তার কাছে যেন তুচ্ছ!

বলছিলাম বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মাহবুব উল আলমের কথা। চালচলনে যেমন সাদসিধে তেমনি স্পষ্টবাদী, মনেপ্রাণে ঘৃণা করেন ঘুষ-দুর্নীতিকে। ছোট অফিসার অনেক কথা মুখের উপর বলতে পারেন না। তাই বেছে নিয়েছেন কবিতা, ছড়াকে।
বহুরূপী মাহবুব উল আলমদীর্ঘ চলার পথে যেখানে অনিয়ম দেখেছেন সেখানেই কলম তুলে নিয়েছেন। সুনিপুণ হাতে ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের অসংগতি এবং তা দূর করার উপায়। আবার সাফল্যগাথার চিত্রায়ন করেছেন দারুণভাবে। চলতি পথের এসব কাব্যগাথা নিয়ে প্রকাশ করেছেন জাগরণ নামে ছোট্ট একটি কবিতার বই।

এতে ঠাঁই পেয়েছে ৫৯টি কবিতা। এখানে যেমন দেশের সাফল্যগাথা ফুটে উঠেছে তেমনি উঠে এসেছে নানা রকম অসংগতি। স্থান পেয়েছে আন্তর্জাতিক ইস্যুও। জাতি হিসেবে কেমন হওয়া উচিত, নাগরিক হিসেবেই বা কেমন হওয়া উচিত সবটাই ফুটিয়ে তুলেছেন কলমের খোঁচায়।

তার কবিতা পাঠকের মনে জাগরণ সৃষ্টি করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। প্রথম কবিতার নাম ‘বাসনা’ এখানে স্পষ্ট করে লিখেছেন দেশের বিদেশ নীতি কেমন হওয়া উচিত। আটাশ লাইনের কবিতায় চমৎকারভাবে ফুটে উঠেছে একাত্তর থেকে বর্তমান পর্যন্ত। দিয়েছেন দিক-নির্দেশনাও।
বহুরূপী মাহবুব উল আলম“বিদেশি কাউকে প্রভু মানি না
ধারি না কারো ধার,
বন্ধু ভেবে হাত বাড়ালে
প্রতিদান দেবো তার। ”

‘মীর জাফর’ কবিতায় রাজনীতিবিদদের একহাত নিয়েছেন। লিখেছেন,

“ছোট্ট একটি দেশের মাঝে
গড়েছি শত দল
বিদেশের সাথে হাত মিলিয়ে
জোগায়েছি বাহু বল। ”

পেশাদার লেখক নন, কিন্তু পেশাদার লেখককেও হার মানাবে তার কবিতা। ঠিক যেমন পেশাদার শিল্পী না হয়েও তিনি একাধারে মঞ্চ, যাত্রাপালা, টিভি নাটকে তার অভিনয় দারুণভাবে প্রশংসিত। তার লেখা নাটক মহানায়ক হ্যাদা, রক্তে ভেজা দিনগুলি, একাত্তরের হারামজাদা, দারুণভাবে দর্শক নন্দিত।

স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচিত্র ‘মুক্তি’তেও (পিএ কাজল পরিচালিত) তার অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। লেখালেখির পাশাপাশি একজন সফল সংগঠকও বলা যায় তাকে। তার হাতেই প্রতিষ্ঠা পায় পাইকপাড়া স্টাফ কোয়ার্টার উচ্চ বিদ্যালয়। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি দাওয়া আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে ৫৪ দিন কারাগারে থেকেছেন তিনি। তার হাতেই পূর্ণতা পেয়েছে আকাঙ্ক্ষা নাট্যগোষ্ঠীসহ বেশকিছু সামাজিক সংগঠন।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৮
এসআই/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।