ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

পটে আঁকা বাদেকল্পা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
পটে আঁকা বাদেকল্পা  বাদেকল্পা গ্রামের কৃষি জমিতে সেচ

ময়মনসিংহ : ‘ঘুরে এলাম কত দেখে এলাম/ অশান্ত মনে আমি ছুটে এলাম/ আমার গাঁয়ের মতো কভু দেখিনি/সে যে আমার জন্মভূমি’-জনপ্রিয় শিল্পী আব্দুল জব্বারের বিখ্যাত এই গানে চোখের সামনে যেন ভেসে উঠে চোখজুড়ানো আবহমান গ্রাম-বাংলার চিত্র।

দরদী এ শিল্পীর কন্ঠে গাওয়া এ গানের মতোই নয়নাভিরাম, ছিমছাম, প্রকৃতির মাঝে বেড়ে উঠা আর মনমুগ্ধকর এক গ্রামের নাম বাদেকল্পা।

ময়মনসিংহ নগরী থেকে খানিক পথ দূরে এ গ্রামে চোখের সামনে ধরা দেয় বিশাল সবুজে ভরা মাঠ।

বাতাসে ঢেউ খেলানো আদিগন্ত ধানের ক্ষেতে কাকতাড়ুয়া।

কোথাও স্বপ্নের বোরো ফসল ফলাতে উদয়াস্ত ব্যস্ত চাষী। ফসলি জমিতে সেচ দেয়ার কাজও করছেন কেউ কেউ। ঘাম ঝরানো বোরো ফসল নিয়ে তাদের স্বপ্ন-সাধেরও যেন নেই শেষ।   ক্ষেতের পাশেই মাটির ঘর, পরিষ্কার উঠোন।

এ উঠোনে বসেই গোবরে তৈরি শলার লাকড়ি বা মুইঠ্যা তৈরিতে ব্যস্ত গৃহবধূ। ঠিক যেন প্রকৃতিপ্রেমী শিল্পীর পটে আকাঁ ছবির মতো প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর ময়মনসিংহ সদর উপজেলার এ গ্রাম।

ময়মনসিংহের বাদেকল্পা গ্রামবোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক
ভারতীয় উপ-মহাদেশের এক সময়ের বৃহত্তম জেলা ময়মনসিংহ খাদ্য শষ্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত। মাঠের আসল নায়ক কৃষক এখন বোরো আবাদে দিন-রাত খাটছেন। গামলায় ভরে বোরো জমিতে সার ছিটাতে শুরু করেছেন।

ময়মনসিংহের বাদেকল্পা গ্রামবড়শি
সবুজ ধানক্ষেতের পাশেই ডোবা। সেখানে বড়শি দিয়ে তাজা মাছ ধরতে ব্যস্ত অনেকেই। গরম ভাতের সঙ্গে তরতাজা মাছ ভাজা কিংবা মাছের ঝোল মুখরোচক।

ময়মনসিংহের বাদেকল্পা গ্রামকাকতাড়ুয়া
ফসলি জমিতে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে কাকতাড়ুয়া। পশু-পাখির উৎপাত থেকে রক্ষা পেতে জমির মাঝখানে দাঁড় করিয়ে রাখা হয় এ কাকতাড়ুয়া। গ্রামের সবুজ ধান ক্ষেতে এমন কাকতাড়ুয়ার দেখা মেলে।

ময়মনসিংহের বাদেকল্পা গ্রামসেচ
গ্রামের মাঠে ঝলমলে সোনারাঙা রোদ পড়েছে। অফুরান সবুজের সমারোহ চারিদিকে। সকাল থেকেই মাঠে নিবিষ্ট মনে সময় দিচ্ছেন কৃষক। ফসলি জমিতে অনেকে সেচ দেয়ার কাজও করছেন। মাঠে মাঠে দেখা মেলে কৃষকের এমন কর্মযজ্ঞ।

ময়মনসিংহের বাদেকল্পা গ্রামমুইঠ্যা
জ্বালানি চাহিদা মেটাতে গ্রামে গ্রামে পুরোদমে চলছে গোবর শলার তৈরি লাকড়ি বা মুইঠ্যা। গরুর গোবর, পাটখড়ি আর ধানের কুড়া দিয়ে তৈরি করা হয় এ লাকড়ি। এরপর এ লাকড়ি রোদে শুকানো হয়। রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় এ লাকড়ি বা মুইঠ্যা। গ্রামীণ গৃহবধূর হাতে তৈরি গোবরের এ লাকড়ি শহরেও সমান জনপ্রিয়। গ্রামীণ গৃহবধূরা এ লাকড়ি তৈরি করে নিজেদের জ্বালানি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রি করেও সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩১ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০১৭
এমএএএম/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।