ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিচার

কুষ্টিয়ায় পাঁচ দিনব্যাপী লালন স্মরণ-উৎসব

শরীফ বিশ্বাস, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১০
কুষ্টিয়ায় পাঁচ দিনব্যাপী লালন স্মরণ-উৎসব

বাউলসম্রাট ফকির লালন শাহের ১২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলে ১৬ অক্টোবর শনিবার থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালনের আখড়াবাড়িতে  শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী স্মরণ-উৎসব। সন্ধ্যায় তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমীর সভাপতি আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা তরুণ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব হেদায়েতুল্লাহ, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুর রউফ।

লালনের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন বিশিষ্ট লালন গবেষক ম. মনিরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন লালন একাডেমির সাধারণ সম্পাদক তাইজাল আলী খান।

মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ফকির লালন শাহ ছিলেন অসম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব। ফকির লালনকে নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। তিনি সর্বকালীন ও সর্বজনীন। ফকির লালনের গান সবার কাছে গ্রহণযোগ্য। তিনি সঙ্গীতের মাধ্যমে তার দর্শন তুলে ধরেছিলেন।

 প্রধান আলোচক লালন গবেষক ম. মনিরুজ্জামান বলেন, ফকির লালন শাহ এমন এক প্রতিভা, যিনি আমাদের লোকজীবনে জনপ্রিয়। তার গান বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান ছাড়া আর অন্য কারোর গান এতগুলো ভাষায় অনুবাদ হয়নি। লালন সম্পর্কে সর্বপ্রথম কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার আলোচনা করেন। তার সম্পাদিত পত্রিকায় তিনি লালনকে তুলে ধরেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবাসী পত্রিকায় লালনের ২০টি গান প্রকাশ করেছিলেন। এরপর থেকেই লালনকে নিয়ে সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার ‘ছন্দ’ প্রবন্ধে লালনের কয়েকটি গানের পঙক্তি উল্লেখ করে বলেছেন, এই ভাষায় যদি মধুসূদন মেঘনাদবধ রচনা করতেন তাহলে বাঙালির জন্য তা বোঝা অনেক সহজ হতো। ফকির লালন শাহ আমাদের লোকসাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি অনেক বড় কবি ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আর মাজারের পশ্চিম পাশে কালিগঙ্গার তীর ঘেঁষে বসেছে লালনমেলা । লালন একাডেমি ছাড়াও লালন মাজার শরিফ ও সেবা সদন সংস্থা মৃত্যুবার্ষিকী পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।

এ উৎসবে যোগ দিতে এরই মধ্যে দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার ভক্ত-অনুসারী কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় লালনের মাজারে জড়ো হয়েছেন। স্মরণ-উৎসবের পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে লালনের স্মৃতিচারণা, লালন বন্দনা, লালন সঙ্গীত, লালন মেলাসহ আরো নানা আয়োজন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকশিল্পীদের পাশাপাশি জনপ্রিয় শিল্পীদেরও অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে রাতভর চলবে গানের আসর। ২০ অক্টোবর বুধবার মধ্যরাতে শেষ হবে উৎসব। উৎসবের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বাংলালিংক।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২৩১০,  অক্টোবর ১৬, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।