ঢাকা, বুধবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২২ মে ২০২৪, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫

বিনোদন

দর্শক শূন্যতায় বন্ধ হওয়ার পথে মাগুরার সিনেমা হল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০২০
দর্শক শূন্যতায় বন্ধ হওয়ার পথে মাগুরার সিনেমা হল

মাগুরা: মাগুরায় নেই কোনো বিনোদন কেন্দ্র। পৌর শিশু পার্কে শিশুদের জন্য খেলাধুলার জায়গা থাকলেও সেখানে রাখা হয় পৌরসভার ময়লা ফেলার গাড়ি। এছাড়া দুইটি সিনেমা হল থাকলেও ভালমানের সিনেমা না থাকায় দর্শক শূন্যতায় বন্ধ হওয়ার পথে হল দুইটি।

পূর্বাসা সিনেমা হলের টিকিট কাউন্টার ম্যানেজার বকর মোল্ল্যা বাংলানিউজকে বলেন, এখানে প্রায় ২০ বছর হল সিনেমার টিকিট বিক্রি করছি। অনেক দিন হলো সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে গেছে।

তাই এখন বেকার জীবনযাপন করছি। এক সময় সিনেমা হাউজ ফুল দর্শক ছিল এখন ভালো মানের সিনেমা না থাকায় দর্শক আসতে চায় না। তারপর সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন থাকায় ইন্টারনেট ও ইউটিউব থেকে পছন্দ মতো সিনেমা দেখে নেওয়ায় ধীরে ধীরে বন্ধ হয়েছে সিনেমা হলটি।

জানা যায়, আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার-পরিজন নিয়ে সিনেমা হলে ছবি দেখার কদর ছিল বছর কয়েক আগেও। সাধারণ দর্শকের ভিড় ছিল। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার উৎসব ছিল কাউন্টারের সামনে। অনেকে অগ্রীম টিকিট বুক করত কাউন্টার থেকে। ঘাম ঝরিয়ে টিকিট কাটা কষ্টসাধ্য হলেও ভাল ছবি উপভোগ করে তা পুষিয়ে নিতো দর্শক।

পূর্বাসা সিনেমা হলের ম্যানেজার মো. আশরাফুল আলম ফেতু বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের সিনেমা হলটি প্রায় ৩০ বছর হল তৈরি করা হয়েছে। প্রথমে খুব ভালো ব্যবসা হয়েছে। বর্তমানে সিনেমার ব্যবসায় লাভ হয় না। লোকসান হওয়া হলটি লিজ দিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু তারাও লাভ করতে পারেনি। পরে হলের মধ্যে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগী দর্শণার্থীদের পুলিশ ধরে নিয়ে যায়, তারপর থেকে হলটি তালা দিয়ে দিয়েছি।

রিকশাচালক মো. কামাল হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এই শহরে আমি প্রায়  ২৫ বছর হলো রিকশা চালায়। সিনেমা হলে আমি প্রায় ৭০০ এর বেশি সিনেমা দেখেছি। বর্তমানে ভালো ছবি না থাকায় সিনেমা দেখা হয় না।

অন্যদিকে, মধুমিতা সিনেমা হলের ক্যাশিয়ার মো. আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ভালোমানের সিনেমা না থাকায় বিশেষ করে নারী দর্শকরা ঘরে বসে বিভিন্ন সিরিয়াল দেখায় ব্যস্ত থাকে। আর পুরুষ দর্শকরা মোবাইলে ইন্টারনেট থেকে সব ধরনের ছবি দেখে থাকে। এতে আমাদের ব্যবসায় লোকশান হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ভালো মানের সিনেমা না থাকায় দর্শক আসনে চায় না। বিশেষ করে বছরে দুইটি ঈদে ভাল ব্যবসা হয় তাও আবার নায়ক সাকিব খানের সিনেমা হতে হবে। ভাই এখন আর সিনেমার ব্যবসায় ভাত হচ্ছে না। আমি ২২ বছর হলো এই কাজ করছি। এটা বন্ধ হলে কী করে খাব তা নিয়ে চিন্তায় আছি।  

এলাকার সংস্কৃতিমনারা মনে করেন, সিনেমা জগতকে টিকিয়ে রাখতে হলে দর্শককে হলমুখী করার ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতি উপজেলায় সরকারিভাবে অন্তত একটি করে অত্যাধুনিক সিনেমা হল স্থাপন করে স্বপরিবারে দেখার মতো ভালো মানের ও উন্নয়নমূলক শিক্ষণীয় সিনেমা প্রদর্শন করা জরুরি।

অ্যাডভোকেট মকলেছুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটা মানুষের বিনোদনের প্রয়োজন রয়েছে। আমি মনে করি সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে বিনোদনের বিকল্প নেই। তাই অচিরেই মাগুরায় বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা উচিত বলে আমি মনে করি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।