ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

হুমায়ূন আহমেদ নেই, হুমায়ূন আহমেদ আছেন

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
হুমায়ূন আহমেদ নেই, হুমায়ূন আহমেদ আছেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ

নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। ঔপন্যাসিক হিসেবে সর্বাধিক খ্যাতি তার। এছাড়া ছোটগল্পকার, নাট্যকার ও গীতিকার হিসেবেও অধিক জনপ্রিয় তিনি।  পাশাপাশি নাটক ও সিনেমায় নিজস্ব একটা ধারা তৈরি করে গেছেন সাহিত্যাকাশের উজ্জ্বল এই নক্ষত্র।

মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) হুমায়ূন আহমেদের ৭১তম জন্মদিন। ১৯৪৮ সালের এই দিনে পৃথিবীতে এসেছিলেন তিনি।

আর ‘নন্দিত নরকে’ উপন্যাসের মাধ্যমে বাংলা কথাসাহিত্যে একটি নতুন ধারার প্রবর্তণ ঘটান এই ঔপন্যাসিক। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত এটিই ছিল হুমায়ূন আহমেদের প্রথম উপন্যাস।  

‘নন্দিত নরকে’ পাঠকমহলে নন্দিত হওয়ার পর থেকে হুমায়ূনকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হইনি। এরপর থেকে তিনি একের পর এক পাঠকপ্রিয় উপন্যাস উপহার দিতেই থাকেন।

উপন্যাসে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর হুমায়ূন তার বহুমাত্রিক প্রতিভার স্বাক্ষর রাখেন- নাটক, টেলিফিল্ম, চলচ্চিত্রসহ শিল্প-সংস্কৃতির নানা মাধ্যমে। লক্ষনীয় বিষয় হচ্ছে, হুমায়ূন তার ক্যারিয়ারে হাতেগোনা কিছু গান লিখেছেন। তার সবগুলো গানই শ্রোতাদের মুখে মুখে ফেরে। এককথায় বলতে গেলে, তার লেখা একটা গানও শ্রোতাবিমুখ হইনি।

তার উল্লেখযোগ্য গানগুলে হচ্ছে- ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’,  ‘বরষার প্রথম দিনে’,  ‘যদি মন কাঁদে’,  ‘ও আমার উড়াল পঙ্খীরে’, ‘আমার ভাঙা ঘরে ভাঙা চালা’, ‘মাথায় পরেছি সাদা ক্যাপ’, ‘লিলুয়া বাতাস’, ‘বাজে বংশী’,  ‘আমার আছে জল’, ‘চাঁন্নীপসরে কে আমারে স্মরণ করে’।

এর মধ্যে ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’ শীর্ষক গানে কণ্ঠ দিয়ে সুবীর নন্দী ২৪তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এর সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন মকসুদ জামিল মিন্টু। পরের বছরই ‘বরষার প্রথম দিনে’ গানের জন্য সাবিনা ইয়াসমীন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।

হুমায়ূন আহমেদের চিত্রনাট্য ও পরিচালিত সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘আগুনের পরশমণী’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’,  ‘শ্যামল ছায়া’প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

১৯৮০-১৯৯০ এর দশকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্য ধারাবাহিক এবং স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রচনা শুরু করেন। ১৯৮৩ সালে তার প্রথম টিভি কাহিনীচিত্র ‘প্রথম প্রহর’ বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। এটি তাকে রাতারাতি জনপ্রিয় করে তোলে।

তার অন্যতম টেলিভিশন ধারাবাহিকগুলো হচ্ছে- ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘বহুব্রীহি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘নক্ষত্রের রাত’, ‘অয়োময়’, ‘আজ রবিবার’, ‘নিমফুল’, ‘তারা তিনজন’, ‘মন্ত্রী মহোদয়ের আগমন শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘সবুজ সাথী’, ‘উড়ে যায় বকপঙ্খী’,  ‘এই মেঘ এই রৌদ্র’ উল্লেখযোগ্য।

পরবর্তী সময়ে তিনি বহু এক পর্বের নাটক নির্মাণ করেছেন। এরমধ্যে ‘খেলা’, ‘অচিন বৃক্ষ’, ‘খাদক’, ‘একি কাণ্ড’, ‘একদিন হঠাৎ’,  ‘অন্যভুবন’ উল্লেখযোগ্য।

পেশাজীবনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক। পরবর্তীতে সাহিত্যের প্রতি মনোযোগ দিতে অধ্যাপনা ছেড়ে দেন তিনি।

হুমায়ূন আহমেদ তার অসাধারণ সৃষ্টিকর্মের জন্য ‘একুশে পদক (১৯৯৪)’  ছাড়াও দেশ-বিদেশ মিলিয়ে বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।  

২০১২ সালে ১৯ জুলাই মরণব্যাধি ক্যান্সারের কাছে হার মেনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের বেলভিউ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা কথাসাহিত্যের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ।  কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ না থেকেও আছেন, থাকবেন পাঠক ও দর্শক হৃদয়ের ভালোবাসায়- চির অমর হয়েই।

বাংলাদেশ সময়: ০১৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
এফবি/ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।