ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

স্যার রজার মুর যেমন ছিলেন

বৃষ্টি শেখ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৮ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
স্যার রজার মুর যেমন ছিলেন রজার মুর (ছবি: সংগৃহীত)

প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা শেষে একটি অ্যানিমেশন স্টুডিওতে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেছিলেন। কিন্তু কিছু ভুলের কারণে তাকে বহিষ্কার করা হয়। তার পুলিশ বাবা জর্জ আলফ্রেড মুর একটি ডাকাতির ঘটনার তদন্ত করতে গিয়েছিলেন নির্মাতা ব্রায়ান ডেসমোন্ড হারস্টের বাড়িতে। সেখানেই পরিচালকের সঙ্গে ছেলেকে পরিচয় করিয়ে দেন জর্জ।

পরে ১৯৪৫ সালের মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘সিজার অ্যান্ড ক্লিওপেট্রা’র জন্য অতিরিক্ত শিল্পী (এক্সট্রা) হিসেবে সেই তরুণকে নির্বাচন করেন ব্রায়ান। অভিনয়ের সুবাদে নারী দর্শকদের হৃদয় অর্জন করতে সক্ষম হন তিনি।

বলা হচ্ছে সদ্যপ্রয়াত হলিউড তারকা ‘জেমস বন্ড’খ্যাত স্যার রজার মুরের কথা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছুদিন পর জাতীয় পরিষেবার জন্য সশস্ত্র হন মুর। এ সময় তার বয়স ছিলো মাত্র ১৮ বছর। ১৯৪৬ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তিনি দ্বিতীয় লেফটেন্যান্ট হিসেবে রয়েল আর্মি সার্ভিস কর্পসে যোগ দেন। তার সেবা নম্বর ছিলো ৩৭২৩৯৪। রজার সম্মিলিত পরিষেবা বিনোদন বিভাগেরও একজন কর্মকর্তা ছিলেন এবং শেষপর্যন্ত পশ্চিম জার্মানির একটি ছোট ডিপো অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।

১৯৫০ সালে মডেল হিসেবে কাজ শুরু করেন মুর। এ সময় বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপনে দেখা গেছে তাকে। তবে নিজের লেখা বই ‘লাস্ট ম্যান স্ট্যান্ডিং: টেলস ফর্ম টিনসেলটাউন’-এ তিনি লিখেছেন, ১৯৪৯ সালের ২৭ মার্চ নাট্যকার ও ঔপন্যাসিক পেট্রিক হেমিলটনের ‘দ্য গভারনেস’ শো’তে বব ড্রিউ নামে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। সে সময় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়েছিলো সেটি। এতে আরও ছিলেন ক্লাইভ মর্টন এবং বেটি অ্যান ডেভিস।

রজার মুর (ছবি: সংগৃহীত)সুদর্শন এই অভিনেতার সেরা কাজগুলোর মধ্যে টিভি সিরিজ ‘দ্য সেইন্ট’ অন্যতম। এতে তার চরিত্রটির নাম ছিলো সায়মন টেম্পলার— যা দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলো ইউরোপ-আমেরিকায়।

১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত এ সিরিজে তিনি অভিনয় করেন। এ সময়েই তিনি জেমস বন্ড চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব পান। কিন্তু টেলিভিশনের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকায় তা ফিরিয়ে দেন। অবশেষে শন কনারি জেমস বন্ড চরিত্রে আর অভিনয় করবেন না বলে ঘোষণা দিলে ১৯৭৩ সালে জনপ্রিয় এই ব্রিটিশ গুপ্তচরের চরিত্রে দেখা যায় রজার মুরকে। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এই সিরিজের সাতটি ছবিতে তিনি জেমস বন্ড হয়েছেন মুর। এতেই খ্যাতির চূড়ান্ত শিখড়ে পৌঁছে যান তিনি।

জেমস বন্ড সিরিজ থেকে বিদায় নেওয়ার পর পাঁচ বছর তিনি আর অভিনয় করেননি। ১৯৯০ সালে টিভি সিরিজের মাধ্যমে ফের অভিনয় জগতে ফিরে আসেন। ২০১১ সালে করা ‘দ্য প্রিন্সেস ফর ক্রিসমাস’ তার অভিনীত শেষ ছবি।

রজার মুর (ছবি: সংগৃহীত)রজার মুর ২০০৩ সালে ‘স্যার’ উপাধি পান। লম্বা সময় ধরে তিনি ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মরণব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে না ফেরার দেশে চলে গেছেন রজার মুর। মঙ্গলবার (২৩ মে) মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৯ বছর।

১৯২৭ সালের ১৪ অক্টোবর লন্ডনের স্টকওয়েলে জন্মগ্রহণ করেন রজার মুর। রজারের মায়ের নাম ছিলো লিলিয়ান পোপ। যিনি ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে চারবার বিয়ে করেছেন রজার। এছাড়া তিন সন্তানের জনক ছিলেন প্রয়াত এই অভিনেতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
বিএসকে/এসও

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।