ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

বিনোদন

স্বাধীনতা দিবসের বাছাই অনুষ্ঠান

বিনোদন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
স্বাধীনতা দিবসের বাছাই অনুষ্ঠান ছবি: প্রতীকী

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ মার্চ টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রচার হবে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। এর মধ্যে আছে নাটক-টেলিছবি-টক শো, সংগীতানুষ্ঠান আর দেশাত্মবোধক গল্পের পুরনো চলচ্চিত্র। বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য কয়েকটি বাছাই অনুষ্ঠানে খবর প্রকাশ করা হলো—

অপর্ণার ‘জয়ার জয়’
জয়া একটি কলেজে পড়ছে। সাগর নামের এক ছেলের রাজনৈতিক ভাষণ, দেশপ্রেম দেখে ভালো লেগে যায়।

সেই সূত্রে তাদের মধ্যে পরিচয়, ভালোলাগা ও ভালোবাসা। কিন্তু ধর্ম তাদের মাঝে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। তারপরও ভালোই চলছিলো। সাগর জয়ার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে যায়। এই দিকে মেহের আলী দুমুখো সাপ। সে জয়াদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে আবার পাকবাহিনীর হাতে তুলে দেয় জয়ার ভাই আর বাবাকে। মেহের আলী পাকবাহিনীর ভয় দেখাতে থাকে জয়ার মা ও জয়াকে। সেই ভয়ে জয়ার মা জয়াকে মেহের আলীর সঙ্গে পাঠায় যেন ভালো ও নিরাপদে থাকে। কিন্তু এক সময় জানতে পারে মেহের আলী মেয়েদেরকে ধরে পাকবাহিনীদের হাতে তুলে দেয় আবার সে নিজেও অত্যাচার করতে থাকে। জয়ার মা এক ফাদারের কাছে গিয়ে সাহায্য চাইলে ফাদার পাকবাহিনীর মাধ্যমে মেহের আলীর কাছ থেকে জয়াকে উদ্ধার করে ভারতে পাঠায়। আর মেহের আলীকে পাকবাহিনী হত্যা করে। সেই সূত্রে বর্তমান সমাজে মেহের আলীর ছেলে তার বাবাকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করে—এমনি গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ নাটক ‘জয়ার জয়’। শরিফুল ইসলাম শামীম ও খালেদা আহমেদের যৌথ পরিচালনায় নাটকটিতে অভিনয় করেছেন অপর্ণা ঘোষ, শ্যামল মাওলা, ডলি জহুর প্রমুখ। ‘জয়ার জয়’ নাটকটি বাংলাভিশনে ২৬ মার্চ রাত ৯টা ৫ মিনিটে প্রচার হবে।

‘জয়ার জয়’ নাটকের দৃশ্যআসাদের ‘মুখের দিকে দেখি’
বিশেষ নাটক ‘মুখের দিকে দেখি’। মাহমুদ দিদারের গল্প অবলম্বনে নাটকটির চিত্রনাট্য ও পরিচালনা করেছেন সেরনিয়াবাদ শাওন। অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, এফ এস নাঈম, নাদিয়া মীম, নিকুল কুমার মন্ডল, ইফতেখারুল ইসলাম প্রমুখ। ২৬ মার্চ রাত ৯টা ৫ মিনিটে এনটিভিতে প্রচার হবে ‘মুখের দিকে দেখি’।

এর গল্পে দেখা যাবে, মুক্তিযোদ্ধা  ওয়াহেদ উদ্দিন পুরনো বাড়িতে নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেন। টাইপ রাইটারে নিজের জীবনী লেখেন। মাঝেমধ্যে কলের গান শোনেন। পুরনো ল্যান্ডফোনে কথা বলেন। ভাঙ্গা ফনিক্স সাইকেল চালিয়ে বাজারে যান। এভাবেই সময় কাটে তার। একমাত্র ছেলে মিনার অনেক দিন পর বিলাত থেকে বউ নিয়ে এলে ওয়াহেদ উদ্দিনের নৈমিত্তিক জীবনে পরিবর্তন আসে। সন্তানকে পেয়ে খুব উল্লসিত হয়ে পরেন এই ভেবে যে, ছেলে ও ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলা বলা বিলেতি বউ রুজমিলার সাথে চুটিয়ে গল্প করা যাবে। কিন্তু তার এই উচ্ছাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। কারণ মিনার এই পুরনো বাড়ি বিক্রি করে বাবাকে বিলেত নিয়ে যেতে চায়। মিনার-রুজমিলা দু’জন মিলে ওয়াহেদ উদ্দিনের এতো দিনের অভ্যাস পরিবর্তনের জন্য প্রাণান্তকর চেষ্টা চালিয়ে যায়। ল্যান্ডফোন ফেলে হাতে ধরিয়ে দেয় আইফোন, মাথায় উইগ, পাজামা-পাঞ্জাবির বদলে স্যুট-কোট। ডেভেলপার কোম্পানিকে নিয়ে আসে বাড়ি বিক্রির জন্য। ওয়াহেদ উদ্দিন অনড়। এই বাড়ি ছেড়ে কোথাও  যাবেন না তিনি। ছিঁড়ে ফেলে দিলেন বাড়ি বিক্রির ডিড। হতভম্ব মিনার-রুজমিলা চলে যায় বাবাকে ছাড়াই। যাবার সময় রেখে যায় একটি সিডি। রাতে ওয়াহেদ উদ্দিন এই সিডি দেখে বিস্মিত, আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়ে। ভিন্নরুপে আবিষ্কার করে মিনার-রুজমিলাকে।

‘মুখের দিকে দেখি’ নাটকের দৃশ্যশতাব্দী-প্রীতির ‘মুক্তির ছোট গল্প’
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে দুই পা হারায় মতিন। সে তখন ক্লাস নাইনের ছাত্র। স্কুল শিক্ষক বাবার অমতেই একদিন গোপনে যুদ্ধে চলে যায়। অবশ্য মা মমতা বেগম সেদিন মতিনকে সহযোগিতা করেছিলেন যুদ্ধে যেতে। আঁচলের নিচে লুকিয়ে ছেলেকে ভারতের ঢালু বর্ডারে ট্রেনিং ক্যাম্প পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসেন তার মা। ১৬ ডিসেম্বরের ঠিক ক’দিন আগে ময়মনসিংহের হালুয়া ঘাটের তেলিখালী সীমান্তে যুদ্ধরত অবস্থায় মতিনের দুই পায়ে গুলি লাগে। চিকিৎসকের পরামর্শে হাঁটুর নিচ থেকে পা কেটে ফেলতে হয়।   যুদ্ধের সময় মতিনের বাবাকে আলবদররা বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে অমানবিক নির্যাতন করে। তার দুই ছাত্র (আল বদর) তাকে ফিরিয়ে দিলেও ক’দিন পরেই তিনি মারা যান। কিছুদিন পর তার মাও মারা যান। একমাত্র বোন মুক্তি, যার জন্ম ৭১-এর শেষে। মৃত্যুর আগে মা মমতা বেগম মুক্তিকে বলে যায় মতিনকে মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্রে না পাঠিয়ে তার কাছে রাখতে। মাকে কথা দেয় মুক্তি। মুক্তিযোদ্ধা পঙ্গু ভাইকে নিজের কাছে রাখবে। মায়ের কথা মতো বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি নিয়ে আসেন ভাইকে। কয়েক মাস না যেতেই মতিনের উপর বিরক্ত হয়ে মুক্তির ওপর মানসিক নির্যাতন শুরু করে মুক্তির স্বামী রফিক। এতো বড় দেশে বোনের সংসারে থাকার সামান্যতম ঠাঁই নেই যুদ্ধাহত এই মুক্তিযোদ্ধার। চোখের পানি মুছতে মুছতে হুইলচেয়ার ঠেলতে ঠেলতে ভাইকে নিয়ে অজানার পথে হাঁটতে থাকে মুক্তি—এমন গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে নাটক ‘মুক্তির ছোট গল্প’। এটি রচনা করেছেন দৌলত হোসাইন। পরিচালনায় মো. মামুন খান। এতে অভিনয় করেছেন শতাব্দী ওয়াদুদ, সানজিদা প্রীতি, দৌলত, খলিলুর রহমান কাদেরী, ফরহাদ ঠাকুর, সায়কা আহমেদ প্রমুখ। নাটকটি একুশে টেলিভিশনে স্বাধীনতা দিবসের রাতে প্রচার হবে।

‘মুক্তির ছোট গল্প’ নাটকের দৃশ্যসম্রাটের ‘কালবেলা’
বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগকে মুক্তিযুদ্ধে আক্রান্তদের নিয়ে একটি অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়। টিম মেম্বার নুসরাত বাবার তথ্য অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে ধামরাইয়ের পাল পাড়ায় দত্ত বাড়িতে যায়। সেখানে পরিচয় হয় ’৭১-এর বীরাঙ্গনা মালতী দত্তের যুদ্ধশিশু মুক্তি রাণীর সঙ্গে। নুসরাত ও শায়নের সঙ্গে যুদ্ধ নিয়ে আবেগ মিশ্রিত কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন মালতী— এমনই গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ টেলিছবি ‘কালবেলা’। গাজী ফারুকের রচনায় পরিচালনা করেছেন সাদেক সিদ্দিকী। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন সম্রাট, অরিন, আন্না, সাগর, আশিক চৌধুরী, হান্নান শেলী, শাহেনা আক্তার, শম্পা নিজাম, হিরা ও শিশু শিল্পী জারা। ‘কালবেলা’ এটিএন বাংলায় প্রচার হবে রাত ১১টায়।

‘সূর্যোদয়ের গান’ অনুষ্ঠানে অপি করিমঅপি করিমের ‘সূর্যোদয়ের গান
স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ গানের অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন অপি করিম। এতে থাকছে একগুচ্ছ দেশের গান। স্বনামখ্যাত শিল্পী, কুশলী, গীতিকবি ও সুরকারের ছোঁয়ায় নির্মিত গানগুলো নিয়ে ‘সূর্যোদয়ের গান’ নামের একটি অনুষ্ঠান।

আয়োজনে থাকছে পাঁচটি দেশাত্মবোধক গান। গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ারের কথা ও আলী আকবর রুপুর সুরে একটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন এন্ড্রু কিশোর ও কুমার বিশ্বজিৎ। সশস্ত্র বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য এ গানটির চিত্রায়ণে সহযোগিতা করেছেন।

অন্য গানগুলো গেয়েছেন শিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী ও শাম্মী আক্তার, প্রতীক হাসান ও নির্ঝর, কুমার বিশ্বজিৎ, ফাহমিদা নবী ও রফিকুল আলম। বাকি গানগুলো লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, মেজর (অব.) আনিস-উল-ইসলাম, লুৎফর হাসান, মো. জামালউদ্দিন এবং সুর করেছেন হানিফ সংকেত, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, লুৎফর হাসান, মো. জামালউদ্দিন। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সংগীতানুষ্ঠান ‘সূর্যোদয়ের গান’ নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ২৬ মার্চ রাত ৯টা ১৫ মিনিটে এটিএন বাংলায় প্রচার হবে এটি।

ছয়টি নাটক নিয়ে ‘মুক্তির মানুষ
২৫ মার্চ থেকে দীপ্ত টিভিতে শুরু হয়েছে ‘দীপ্ত মিনি সিরিয়াল’। প্রথম সপ্তাহে থাকছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্পের নাটক। নাটকগুলো নির্মাণ করেছেন ছয় তরুণ নির্মাতা। তারা হলেন ওয়াহিদ তারেক, আর বি প্রিতম, ফয়সাল রাজিব, তানিম পারভেজ, আতিক জামান ও ভিকি জাহেদ। প্রত্যেকের গল্পের মূল বিষয় ‘মুক্তির মানুষ’। মূল বিষয় ধরে আলাদা ২২ মিনিটের গল্পের নাটক নির্মাণ করেছেন তারা। নাটকগুলোর প্রযোজক ছিলেন রেদওয়ান রনি। প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা ও রাত সাড়ে ৯টায় দু’বার প্রচার হচ্ছে নাটকগুলো।  

রওনক হাসানের ‘ভোরের প্রসূতি’
লেখা, চিত্রনাট্য তৈরি, অভিনয় ও পরিচালনা— ‘ভোরের প্রসূতি’ নাটকে এমন পরিচয়ে থাকছেন রওনক হাসান। আরও আছেন শারমিন জোহা শশী, নাজিরা মৌ, শারমিন আঁখি, আরিফ হায়দার, টনি ইসলাম, কুসুম প্রমুখ। নাটকে সংগীতায়োজন করেছেন পিন্টু ঘোষ। মাছরাঙা টিভিতে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে প্রচার হবে ‘ভোরের প্রসূতি’।

বন্যার ‘চেতনায় স্বাধীনতা
বন্যা মির্জার উপস্থাপনায় এতে অতিথি হয়ে স্বাধনতা নিয়ে কথা বলবেন কবি আসাদ চৌধুরী। পাশপাশি অনুষ্ঠানে  সকল শ্রেনী পেশার মানুষের মতামত নেওয়া হয়েছে ‘কেমন স্বাধীনতা চাই’ শিরোনামে। জিটিভিতে এটি প্রচার হবে সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে।

একই চ্যানেলে রাত ৮টা ৩০মিনিটে প্রচার হবে বিশেষ নাটক ‘শহীদ মোসাম্মৎ কুলসুম বেগম’ সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত নাটকটি রচনা করেছেন আল মনসুর। কমল চাকমার পরিচালনায় নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অবিনয় করেছেন- শশী, রওনক হাসান, সাজ্জাদ রেজা, ঝুনা চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৭
এসও

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।