ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

তারার ফুল

ফুটবলারদের প্রেয়সীরা

জনি হক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৪
ফুটবলারদের প্রেয়সীরা

ফুটবলারদের কাছে ফুটবলই ভালোবাসা। তবে তাদের অন্তরমহলে ফুটবল ছাড়াও মনের মানুষের বসবাস থাকে।

এসব ফুটবলার ও তাদের প্রেমিকা কিংবা জীবনসঙ্গীনিকে হরহামেশা পাওয়া যায় ফ্যাশন শো ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। এবারের বিশ্বকাপে লিওনেল মেসি, নেইমার কিংবা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো নামি-দামি ফুটবলাররা মাঠে নামার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। ব্রাজিল অভিযানের তোড়জোড় চলছে তাদের স্ত্রী ও বান্ধবীদেরও। প্রেমিককে উৎসাহ দিতে ব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে ব্রাজিলে যাচ্ছেন তারা। চলুন ফুটবলার ও তাদের প্রেয়সীদের গল্প শুনি, মাঠের বাইরে যাদের প্রেমও আলাদাভাবে নজর কাড়ে। তাদেরকে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো সম্বোধন করে ‘ওয়াগস্’ নামে। ডব্লুএজি অর্থাৎ ‘ওয়াইফ অ্যান্ড গার্লফ্রেন্ডস’-এর বহুবচন ওয়াগস্। তারা সবাই মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো সুন্দরী, আর প্রত্যেকেই স্বমহিমায়, জনপ্রিয়তায় উদ্ভাসিত। আর তাদের সুবাদে কেনাকাটার সুনামি নামতে ব্রাজিল জুড়ে।

রোনালদো-ইরিনা
ফুটবল জগতের সবচেয়ে বর্ণময় জুটি এখন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও ইরিনা শায়াক। এখন ওয়াগসদের রানী ভাবা হচ্ছে রোনালদোর বাহুডোরে বাঁধা ইরিনাকে। পর্তুগালের বিখ্যাত এই ফুটবলারের সঙ্গে রুশ সুপারমডেল ইরিনার সম্পর্ক ২০১০ সালের মে থেকে। রিয়াল মাদ্রিদের তুরুপের তাস সিআর সেভেন সারাবছর ব্যস্ত থাকেন ফুটবল নিয়ে। অন্যদিকে মডেলিং ও অভিনয়ের জন্য ইরিনাকে গোটা দুনিয়া ঘুরতে হয়। এ কারণে দু’জনের সম্পর্কের রসায়ন নিয়েও প্রচুর জল্পনা চলতে থাকে। একসময় তো রটেই গিয়েছিল, ইরিনার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে গেছে রোনালদোর। কিন্তু কয়েকদিন পরেই ইরিনা যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে জানিয়েছিলেন, রোনালদোর সঙ্গে সম্পর্ক তিনি রীতিমতো উপভোগ করছেন। তারপর ফুটবল স্টেডিয়াম, টেনিস গ্যালারি, সমুদ্র সৈকতে এ জুটিকে নিয়মিতই খুঁজে পায় পাপারাজ্জিদের ক্যামেরা। এখানেই শেষ নয়, থাইল্যান্ডে ছুটি কাটাতে এসে পাশাপাশি বসে বরশিতে মাছ ধরার ছবি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছিলেন ইরিনা। এ কারণেই রোনালদো-ইরিনাকে বলা হয় ‘পাওয়ার কাপল’। ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার আনতে ইরিনাকে সঙ্গে নিয়েই জুরিখে গিয়েছিলেন রোনালদো। বাতাসে জোর গুঞ্জন রোনালদো-ইরিনা বিয়ের কাজও সেরে ফেলেছেন। এ অনুষ্ঠানে ২৭ বছর বয়সী ইরিনাকে ‘স্ত্রী’ হিসেবে সম্বোধন করে সেই গুঞ্জন উসকে দিয়েছেন রোনালদো নিজেই। কিছুদিন আগে একটি বিখ্যাত সাময়িকীর প্রচ্ছদে ছাপা হয় তাদের ছবি। ইরিনার মাঝেই যেন রিয়াল মাদ্রিদের এই স্ট্রাইকার খুঁজে পেয়েছেন স্বপ্নের রাজকন্যাকে। সুদর্শন, সফল, আকর্ষণীয় রোনালদোর মাঝে ইরিনাও খুঁজে পেয়েছেন স্বপ্নের রাজপুত্রকে। দু’জনই স্ব স্ব ক্ষেত্রে জনপ্রিয়। ছয় বছর বয়স থেকে পিয়ানো বাজাতে পারেন ইরিনা। ৯ বছর বয়সে সঙ্গীত শিক্ষালয়ে ভর্তি হয়ে পিয়ানো বাজানো ও কয়্যারের সঙ্গে গাওয়ার তালিম নিয়েছেন সাত বছর। মা চেয়েছিলেন মেয়ে গানেই পড়াশোনা করুক। পড়াশোনা করেছেন বিপণনে। এরপর একঘেয়েমি কাটাতে বড় বোনের সঙ্গে বিউটি স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এক স্থানীয় মডেলিং এজেন্সি তাকে ডেকে পাঠায়। তারা ২০০৪ সালের মিস চেলইয়াবিনস্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ইরিনাকে উদ্বুদ্ধ করেন এবং তিনি জয়ী হন। আগামী ২৫ জুলাই মুক্তি পাবে ইরিনার প্রথম চলচ্চিত্র ‘হারকিউলিস’। ঝলমলে বিশে^র বাইরে নিজের জন্মভূমি ইয়েমানঝেলিনস্কে একটি প্রসহৃতি হাসপাতাল গড়ার জন্য সহায়তা করছেন ইরিনা।

পিকে-শাকিরা
চার বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ফুটবলে ‘ওয়াকা ওয়াকা’ গাইতে গিয়ে স্প্যানিশ ফুটবলার জেরার্ড পিকের সঙ্গে শাকিরার সম্পর্কের সূত্রপাত। ওই বিশ্বকাপে কলম্বিয়ান এই গায়িকার গান এবং কোমরের দোলা শুধু গোটা বিশ্বে সোরগোল ফেলে দেয়নি, বার্সেলোনা তারকা পিকের হৃদয়েও ঝড় তুলেছিল। গানটির সূত্র ধরে নিজের জীবনের রঙও যে বদলে যাবে, বিশ্বসঙ্গীতাঙ্গনের মহাতারকা শাকিরার নিশ্চয়ই ভাবেননি। এই গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং করতে গিয়ে বন্ধুত্ব হয়ে গেল শাকিরা-পিকের। যা নিয়ে গত বিশ্বকাপের সময়ই মুখোরোচক সব খবর রটেছিল। কারণ ওই বিশ্বকাপের পর থেকে তারা নিয়মিত একান্তে সময় কাটাতে বের হতেন। এক বছর পর সেই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়ে একই ছাদের নিচে থাকতে শুরু করেন দু’জনে। ওই সময়েই নাকি পিকে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, শাকিরা আর তিনি নিজেদের সন্তানকে নিয়েই ব্রাজিল বিশ্বকাপে অংশ নেবেন! তার ভবিষ্যদ্বাণীই সত্যি হচ্ছে। ২০১৩ সালে জানুয়ারিতে তাদের ছেলে মিলানের জš§। সহসা বিয়ের পরিকল্পনা না থাকলেও এখন দিব্যি সুখে আছেন তারা। জেরার্ড পিকের বয়স ২৭, শাকিরার ৩৭। বয়সের ব্যবধান হেরে গেছে তাদের ভালোবাসার কাছে। পিকের প্রেমের টানে শাকিরা তার প্রাক্তন স্বামী আন্তেলিওর সঙ্গে ১১ বছরের সম্পর্কের ইতি টানেন। ফুটবলার হিসেবে পিকে যেমন বিশ্বকাপ, দু’বার ইউরো কাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছেন, তেমনি এখন পর্যন্ত সারাদুনিয়ায় শাকিরার গানের গানের রেকর্ড বিক্রির সংখ্যা অগুনতি। ব্রাজিল বিশ্বকাপের অফিসিয়াল থিম সং গেয়েছেন জেনিফার লোপেজ, পিটবুল ও ক্লদিয়া লেইতে। কিন্তু শাকিরার ‘লা লা লা’ গানের জনপ্রিয়তার ধারেকাছে পৌঁছাতে পারেনি তাদের ‘ওলে ওলা’।

নেইমার-ব্রুনা
ব্রাজিলকে আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদে ভাসাতে প্রস্তুত নেইমার। এটাই হবে তার প্রথম বিশ^কাপ। শেষবার নিজেদের মাটিতে উরুগুয়ের কাছে দেশের হেরে যাওয়া টিভিতে বসে দেখেছেন তিনি। এবার স্বাগতিক দেশ ব্রাজিল। তাই সেই অতৃপ্তি ঘোচাতে তার দিকেই তাকিয়ে থাকবে সমর্থকরা। তবে বছরের শুরুতে বার্সেলোনায় খারাপ সময় কাটানোর পাশাপাশি নেইমারের ব্যক্তিগত জীবনেও বয়ে গেছে ঝড়। শোনা যাচ্ছিল, দীর্ঘদিনের প্রেমিকা ব্রাজিলিয়ান অভিনেত্রী ব্রুনা মারকুইজিনির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ২০ বছর বয়সী মডেল গ্যাব্রিয়েলা লেনজির সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময় কাটাচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান এই তারকা। কিন্তু গত সপ্তাহে যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে দিয়েছেন স্বয়ং ব্রুনা। তেরেজোপোলিসে ব্রাজিলের প্রস্তুতি শিবিরে হঠাৎ হাজির হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে তাদের চুম্বন যেন জানান দিচ্ছিল, নেইমার-ব্রুনা সম্পর্ক আগের মতোই আছে। গত বছর তারা পুত্রসন্তানের মা-বাবা হন। ছেলের নাম ডাভি লুক্কা। মাত্র ১৯ বছর বয়সে বাবা হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খবরের শিরোনামে আসেন নেইমার।

ক্যাসিয়াস-সারা
মাঠের ভেতরে গোল ঠেকানোতে ওস্তাদ স্প্যানিশ গোলকিপার ইকার ক্যাসিয়াস। আর মাঠের বাইরে প্রেমিক হিসেবে তিনি পুরোপুরি সফল। তার ভালোবাসার মানুষটির নাম সারা কারবোনেরো। ৩০ বছর বয়সী সারার সঙ্গে ক্যাসিয়াসের পরিচয় পাঁচ বছর আগে। তখন থেকেই তাদের দুটি আত্মার প্রাণ যেন একই। সারা পেশায় স্প্যানিশ টিভি উপস্থাপিকা ও স্পোর্টস রিপোর্টার। বিশ্বের সবচেয়ে আবেদনময়ী টিভি সাংবাদিকের খেতাব জিতেছিলেন সারা। দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ড ১-০ গোলে স্পেনকে হারিয়ে অঘটন ঘটিয়েছিল। সেই ম্যাচে স্পেনের গোলপোস্টের পেছনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে বিতর্কে জড়ান সারা। ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারানোর পর মাঠেই প্রকাশ্যে সারাকে চুমু দিয়েছিলেন ক্যাসিয়াস। তখনই তাদের প্রেমের হাঁড়ির খবর বেরিয়ে আসে। গত বছরের জুলাইয়ে ক্যাসিয়ান জানান, তিনি বাবা হতে যাচ্ছেন। মাদ্রিদের রুবের ইন্টারন্যাশনাল ক্লিনিকে তাদের ছেলে মার্টিন ক্যাসিয়ান কারবোনেরোর জš§ হয় গত ৩ জানুয়ারি।

ওজিল-ম্যান্ডি
মাঠে গোলের জন্য স্ট্রাইকারকে বল বানিয়ে দিতে পারেন দক্ষতার সঙ্গে, তবে জার্মান তারকা মেসূত ওজিল বাবুর্চি হিসেবেও ভালোং! তথ্যটা দিয়েছেন তার প্রেমিকা জার্মান গায়িকা ম্যান্ডি ক্যাপ্রিস্তো। 'গ্রেস' নামে ম্যান্ডির গানের অ্যালবাম জনপ্রিয় হওয়ার পর তাকে ডাকা হয় ম্যান্ডি 'গ্রেস' ক্যাপ্রিস্তো নামে। সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলার ওজিলের চেয়েও বেশি করে আলোচনায় প্রেমিক ওজিল। সেই কৌতূহলকে আরও উস্কে দিয়েছেন ওজিলের বান্ধবী। নিজের ফেসবুক পেজে তিনি ওজিলের বুটের ছবি পোস্ট করে প্রেমের চিহ্ন এঁকে দিয়েছেন।

২০১২ সালে রিয়াল মাদ্রিদে খেলার সময় থেকে ম্যান্ডির সঙ্গে আলাপ ওজিলের। মাদ্রিদে ম্যান্ডির গানের কনসার্ট চলছিল। সেখানেই প্রথম পরিচয়। এরপর দু'জনকে মাদ্রিদে একসঙ্গে কেনাকাটা করতে দেখে গণমাধ্যমে লেখালেখি শুরু হয়ে যায়। অবশ্য সেদিন শুধু নৈশভোজ করবেন বলেই পরিকল্পনা ছিল। ফেরার পথে বিপণি বিতানে ঢোকেন। তখনই আলোকচিত্রী সাংবাদিকরা তাদের ছবি তুলে ফেলে। তারা চাননি প্রেমের কথা প্রকাশ্যে আসুক। ম্যান্ডি চান নিজের পরিচয়েই বিখ্যাত হতে আগ্রহী তিনি। মেসূত ওজিলের প্রেমিকা হিসেবে লোকে তাকে চিনলে হতাশই হন! 

রুনি-কলিন
বন্ধুর মাধ্যমে কলিনের সঙ্গে ওয়েইন রুনির পরিচয়। স্কুলবালক রুনি ডাব্বা মারলেও ভালো ফল করে কলিন হয়ে গেলেন টেলিভিশনের উপস্থাপিকা। শুরু হলো রুনির ফুটবল জীবন। পর্দায় কলিন সাফল্য পেলেও খেলার মাঠে স্কুলের সেই ব্যর্থ রুনি। হতাশা থেকেই শুরু হয় তার উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন। এ দুঃসময়ে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসেন কলিন। রুনিও দেখা পেলেন সাফল্যের। ছয় বছর জমিয়ে প্রেম করার পর ২০০৮ সালের ১২ জুন বিয়ে করেন রুনি ও কলিন। তারা এখন দুই পুত্রসন্তানের বাবা-মা। একজনের বয়স পাঁচ বছর, অন্যজনের এক বছর হতে চললো। দুই সন্তানের এই জননীর টুইটার অনুসারী ১১ লাখ। রুনির হাতে উল্কিতে লেখা আছে ‘জাস্ট এনাফ এডুকেশন টু পারফর্ম’। এটি তার প্রিয় ব্যান্ড স্টিরিওফোনিকসের অ্যালবামের নাম। স্বামীর এই অনুরাগের কথা মনে রেখে বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ব্যান্ডটিকে এনেছিলেন কলিন।

স্নাইডার-ইয়োলান্তে
গত বিশ^কাপে ব্রাজিলকে বিদায় করে দিয়েছিল হল্যান্ডের হয়ে ওয়েসলি স্নাইডারের হেড থেকে আসা গোল। এই ডাচ ফুটবলার মাঠে আগুন ধরালেও ব্যক্তিজীবনে শান্তশিষ্ট এক মানুষ। দাতব্য সেবায় নিবেদিতপ্রাণ বলা যায় তাকে। ডাচ এই ফুটবলারের স্ত্রী ইয়োলান্তে ক্যাবো ভ্যান ক্যাসবারজেন। ২০০৯ সালে তারা সম্পর্কে জড়ান। পরের বছরের জুলাইয়ে বিশ^কাপ ফুটবল ফাইনালের ছয় দিন পর ইতালিতে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। যে স্পেনের কাছে শিরোপা হারাতে হয়েছিল স্নাইডারের হল্যান্ডকে, সেই স্পেনেই কেটেছে ইয়োলান্তের শৈশব। তবে হল্যান্ডে এসেই টিভিতে কাজ করে তারকাখ্যাতি পেয়েছেন তিনি। হল্যান্ডের প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র ‘স্নোফিভার’ [২০০৪] ও টিভি সিরিজ ‘কস্তা!’য় [২০০৫] দেখা গেছে ইয়োলান্তেকে। পুরুষদের পাঠ্য এফএইচএম সাময়িকীর দৃষ্টিতে ২০০৬, ২০০৭ ও ২০০৯ সালে আকর্ষণীয় ডাচ নারীর খেতাব পেয়েছিলেন ইয়োলান্তে। নিজের টিভি অনুষ্ঠানের ব্যস্ততার ফাঁকে দরিদ্রসেবায় নিয়মিত অবদান রেখে চলেছেন ২৭ বছর বয়সী এই সুন্দরী। উন্নত বিশে^ ঘুরে ঘুরে গিু যৌন হয়রানি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করে থাকেন তিনি।

শোয়াইনস্টেইগার-সারা
আগেরবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে নাস্তানাবুদ করার পেছনে জার্মানির হয়ে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন সেবাস্তিয়ান শোয়াইনস্টেইগার। তার গতির কাছে বিশে^র অনেক ফুটবলারই পাত্তা পায় না। তিনি থাকেন মিউনিখে। ২৯ বছর বয়সী শোয়াইনস্টেইগার ও ২৫ বছর বয়সী এই সুন্দরীর প্রেমের শুরু ২০০৭ সালে। জার্মানির জাতীয় দলের এই তারকা ফুটবলারের সঙ্গে সারার পরিচয় হয়েছিল ইবিজায়। সেই থেকে তারা একই ছাদের নিচে থাকেন। এখনও দিব্যি সুখে আছেন দু’জন। শোয়াইনস্টেইগার ফুটবলে আর সারাহ ফ্যাশন দুনিয়ায় দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছেন। প্রায় ছয় ফুট উচ্চতার এই মডেল বায়ার্ন মিউনিখ এবং জার্মানির সমস্ত ম্যাচে গ্যালারিতে হাজির থাকেন। বছর দুয়েক আগে রাশিয়া ও ইউক্রেনে ইউরোপিয়ান কাপ দেখতে যাওয়ার পর সবার নজর কেড়েছিলেন তিনি। ব্রাজিল বিশ্বকাপেও গ্যালারিতে বসে থাকা সারাকে খুঁজবে আলোকচিত্রীদের ক্যামেরার লেন্স।

মারিও-ক্যাথরিন
জার্মানির ফুটবলার মারিও গোৎজে প্রেম করছেন অ্যান ক্যাথরিনের সঙ্গে। অ্যান পেশায় মডেল ও গায়িকা। আবার তিনি ব্লগও লেখেন। শোয়াইনস্টেইগারের মতো ইবিজাতেই মনের মানুষের দেখা পান মারিও। তার আর অ্যানের মধ্যে প্রচুর মিল। বায়ার্ন মিউনিখের তারকা মারিওকে যেমন প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন পজিশনে খেলান কোচরা, তেমনি অ্যান গানের পাশাপাশি পারদর্শী রান্নাতেও।


জেরার্ড-কার‌্যান
ইংল্যান্ড ফুটবল দলের অধিনায়কের দায়িত্ব এবার স্টিভেন জেরার্ডের কাঁধে। ৩৩ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার ব্যক্তিজীবনেও দায়িত্বশীল পিতা ও স্বামী। বাকিংহ্যামশায়ারের বিলাসবহুল হোটেল ক্লাইভডেন হাউসে ২০০৭ সালের ১৬ জুন তারা বিয়ে করেন। তারা এখন তিন কন্যাসন্তানের গর্বিত মা-বাবা। তারা হলো লিলি-এলা [১০], লেক্সি [৮] ও লর্ডেস [৩]। পরিবারকে নিয়ে মার্সিসাইডের ফর্মবিতে থাকেন জেরার্ড। জেরার্ড মাঠে দক্ষ কাপ্তান আর অ্যালেক্স মডেলিং দুনিয়ার উজ্জ্বল মুখ। ২০০৭ সালে নিজের নামে সুগন্ধি বাজারে আনেন তিনি। ওই বছর এটি ছিল সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া সুগন্ধির মধ্যে অন্যতম। এর তিন বছর পর নিজেই ফ্যাশন ডিজাইনিং শুরু করেন। তার প্রথম ফ্যাশন সংগ্রহশালা অ্যালেক্স জেরার্ড কালেকশন অভাবনীয় সাফল্যের দেখা পায়। তাই পরের বছর নতুন সংগ্রহশালা বাজারে ছাড়েন তিনি। গত বছর লিপসি ভিআইপি কালেকশনের মডেল হন ৩১ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ তারকা। মডেলিংয়ের পাশাপাশি ডেইলি মিরর পত্রিকায় সপ্তাহে একবার ‘অ্যালেক্স কার‌্যানের সঙ্গে কেনাকাটা’ শিরোনামে কলাম লেখেন তিনি। এর আগে ২০০৯ থেকে চার বছর ওকে সাময়িকীতে ফ্যাশন বিষয়ে সাপ্তাহিক কলাম লিখতেন অ্যালেক্স।

খাদিরা-লিনা
জার্মানির হয়ে মাঝমাঠে জাদু দেখাতে প্রস্তুত সামি খাদিরা। ২৭ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার তিন বছর ধরে প্রেম করছেন স্বদেশি মডেল ও টিভি উপস্থাপিকা লিনা জার্কের সঙ্গে। তাদের প্রেমকাহিনী নিয়ে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাজানো হয়েছিল জি-কিউ সাময়িকীর প্রচ্ছদ। সুন্দরী হলেও পড়াশোনায়ও কম যাননি তিনি। তার কাছে আছে মার্কেটিং ডিগ্রি। ২০০৬ সালে জার্মানির নেক্সট টপ মডেল প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর বিশে^র নামিদামি ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি মাইক্রোসফটের কাছ থেকেও ডাক পেতে থাকেন তিনি। ২০১০ সালে নিউইয়র্ক ফ্যাশন উইকে বসন্তকালীন পোশাক পরে মঞ্চে হাঁটতে দেখা গেছে তাকে। একসময় বার্লিন ও নিউইয়র্কে থাকা লিনা এখন বেশিরভাগ সময় কাটান মাদ্রিদে। কারণ সামি যে রিয়াল মাদ্রিদে খেলেন। ফটোশুট, ক্যাটওয়াক ও নাচের পরিবেশনার ফাঁকে ঠিকই সময় বের করে গ্যালারিতে বসে সামির খেলা দেখেন এই ২৬ বছর বয়সী। অবশ্য প্রেমিক ফুটবল খেললে কী হবে, লিনা শৌখিন দাবাড়ু।

আকিলানি-মিশেলা
ইতালির হয়ে এবারের বিশ্বকাপে মাঝমাঠ মাতাবেন আলবার্তো আকিলানি। তিনি বিয়ে করেছেন ইতালিয়ান অভিনেত্রী মিশেলা কাতরোসিওচ্চিকে। সেই থেকে তারা একে অপরের সুখ-দুঃখের সাথী। অরোরা নামের এক ফুটফুটে কন্যাসন্তানও আছে তাদের। ২০০৮ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় মিশেলার। ফেদেরিকো মচ্চিয়া পরিচালিত ‘পার্ডন, বাট আই কল ইউ লাভ’ নামের ছবিটিতে স্কুলের শেষ বছরে অধ্যয়নরত এক মুক্তমনা তরুণীর চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। যে মেয়েটি ৩৭ বছরের এক মধ্যবয়সীর প্রেমে পড়ে। তার মা মেয়ের কিছু স্থিরচিত্র পাঠিয়েছিল অভিনয়শিল্পী নির্বাচন দলের কাছে। তখন মিশেলা স্কুলের পরীক্ষা দিচ্ছে। এ ছবির সাফল্যের পর একই পরিচালকের ‘আমোর ফর্টিন’ ছবিতে স্বল্প উপস্থিতি ও নিজের প্রথম ছবির সিক্যুয়েলেও তিনি অভিনয় করেন। নেরি পারেন্তির ‘ক্রিসমাস ইন বেভারলি হিলস’ [২০০৯] ও ‘উনা ক্যানজোন পার তে’ [২০১০] ছবিতেও দেখা গেছে তাকে।

বালোতেল্লি-নিগুয়েশা
ইতালিয়ান ‘ব্যাডবয়’ মারিও বালোতেল্লি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে বাগদানের খবর জানান। বাগদান কন্যা বেলজিয়ান মডেল বান্ধবী নিগুয়েশা। সপ্তাহের শুরুতে বান্ধবীকে মনের কথা জানান তিনি। উড়োমন বালোতেল্লি মতো পাল্টানোর আগেই ঝটপট রাজি হয়ে যান বান্ধবী নিগুয়েশা। বৃহস্পতিবার ইনস্টাগ্রামে বাগদানের আংটিসহ একটি ছবি পোস্ট করে শুভ সংবাদটি জানান এই এসি মিলান ফরোয়ার্ড। ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘হ্যাঁ’। ইচ্ছেটা অমার মনে ছিল। এখন এটা আমাদের। তোমাকে ভালোবাসি এবং শুভ জন্মদিন। ’ এভাবেই খুশির খবরটা তুলে ধরেন বালোতেল্লি। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামতে আর মাত্র ৫ দিন বাকি দু’বারের চ্যাম্পিয়ন ইতালির।


র‌্যামোস-রুবিও
টেলিভিশন সাংবাদিক হিসেবে স্পেনে পরিচিত মুখ পিলার রুবিও। তবে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা সের্জিং র‌্যামোসের সঙ্গে নিজের সম্পর্ককে ব্যক্তিগত স্তরেই রাখতে পছন্দ করেন তিনি। যদিও নিজের টিভি অনুষ্ঠানে রামোসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ৩৬ বছর বয়সী রুবিও। ওই অনুষ্ঠানে গিয়ে গিটার বাজিয়ে গানও গেয়েছিলেন স্প্যানিশ এই ফুটবলার। তাদের প্রথম পুত্রসন্তান সের্জিও র‌্যামোস রুবির জন্ম এ বছরের ২৬ এপ্রিল। সদ্যোজাত সন্তানের যত্নআত্তির কথা ভেবে ব্রাজিলে যাচ্ছেন না রুবিও। কিন্তু তার ভালোবাসার ছায়া সারাক্ষণই ২৮ বছর বয়সী র‌্যামোসের ওপর।

ল্যাম্পার্ড-ক্রিস্টিন
ইংল্যান্ডের ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের বান্ধবী ক্রিস্টিন লুইস ব্লিকলি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন উত্তর আয়ারল্যান্ডে সংবাদপাঠিকা হিসেবে। এখন অবশ্য তিনি টিভি উপস্থাপিকা হিসেবে সক্রিয়। বিষয়ের কোনো বাছবিচার নেই। ‘ড্যান্সিং অন আইস’ আছেন, আবার যুক্তরাজ্যের ‘দ্য ভয়েস’ অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, ১১ জুন, ১০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।