ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

নান্দনিকতা ধরে রাখতে ২০ নয়, টিএসসি হবে পাঁচতলা ভবন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
নান্দনিকতা ধরে রাখতে ২০ নয়, টিএসসি হবে পাঁচতলা ভবন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র । টিএসসি নামেই বেশ পরিচিত সবার কাছে। পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা ও সাংস্কৃতিক চর্চাকে সামনে রেখেই টিএসসির যাত্রা। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল প্রায় ছয় হাজারের মতো। তবে সময়ের পরিক্রমায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সংখ্যা বহুগুন বাড়লেও এখনো পর্যন্ত বড় কোনো সংস্কার আনা হয়নি টিএসসির অবকাঠোমোয়। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরেই টিএসসি ভবন সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দুই বছর আগে টিএসসিতে একটি বিশতলা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করে কর্তৃপক্ষ। এজন্য নকশাও তৈরি করা হয়। তবে ঐতিহাসিক স্থাপনা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে টিএসসিতে বিশতলা ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছিলেন অনেক শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। তাই ঐতিহাসিক স্থাপনাটির নান্দনিকতা ধরে রাখতে টিএসসিতে বিশতলা নয় পাঁচতলা ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘকাল থেকে টিএসসি আমাদের সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র। বহুতল ভবন নির্মাণের ফলে এখানে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্থাপনার যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্য পাঁচতলা ভবনের নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

গ্রিক স্থাপনার সঙ্গে মিল রেখে নান্দকিতা ধরে রেখে এটি নির্মাণ করা হবে। মূল টিএসসির কোনো ধরনের ক্ষতি হবে না বলে তিনি জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র জানা যায়, বর্তমানে টিএসসির গেমস রুমের পশ্চিম পাশে অবস্থিত সুইমিং পুল এর জায়গায় নতুন ভবনটি নির্মাণ করা হবে। ভবনটির নিচে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ মিলনায়তন থাকবে। সুইমিং পুলের দক্ষিণ পাশের গ্রিক স্থাপনাগুলোর যাতে কোনো ধরনের ক্ষতি সাধন না হয়, সেভাবেই নকশা করা হয়েছে। ভবনটির বিস্তৃতি টিএসসির বর্তমান মূল অডিটোরিয়াম পর্যন্ত থাকবে। যার নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) কাজ চলছে। সরকার থেকে অর্থ পাওয়া গেলে কাজ শুরু হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সুইমিং পুলটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। পুলে কচুরিপানা, বোতল জাতীয় বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক দিয়ে ভর্তি হয়ে আছে। টিএসসির কর্মচারীরা জানান, এটির পরিকল্পনায় ভুল ছিল। অনেক গভীর হওয়ায় পানি রাখতে সমস্যা হয়।

প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ঐতিহাসিক স্থাপনা রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে টিএসসির বিশতলা ভবন নির্মাণের বিরোধিতা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। প্রকৌশল বিভাগের পরিকল্পনা ছিল পুরো টিএসসিকে নতুন করে সাজানো। বিরোধিতার কারণে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী একেএম আফজালুল হক বাংলানিউজকে বলেন, টিএসসির পাঁচতলা ভবনের নকশা অনুমোদন হয়েছে।

জানা যায়, ১৯৬১ সালে কার্জন হলের ক্ষুদ্র পরিসরে টিএসসির কার্যক্রম শুরু হয়। পরে গ্রিসের বিশ্বখ্যাত নকশাকারী প্রতিষ্ঠান ডকসিয়াডিস অ্যাসোসিয়েটস কনসালট্যান্ট লিমিটেডের নকশা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ দশমিক ৭০ একর জায়গায় টিএসসি কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের ফোর্ড ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৬৬ সালে। টিএসসির পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হয় মূলত ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩০০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৮
এসকেবি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।