ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

উচ্চশিক্ষা নিয়ে শঙ্কায় গরিব বর্গাচাষির ছেলে নাজমুল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
উচ্চশিক্ষা নিয়ে শঙ্কায় গরিব বর্গাচাষির ছেলে নাজমুল মেধাবী শিক্ষার্থী নাজমুল হক

কুষ্টিয়া: প্রত্যন্ত গ্রামের গরিব বর্গাচাষি পরিবারে জন্ম নাজমুলের। লেখাপড়ার খরচ চালাতে গিয়ে মাঠে দিনমজুরের কাজ করেছে সে। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের মাজিহাট এলাকার কৃষক আজিজ হোসেন ও গৃহিনী নাসিমা খাতুনের ছেলে নাজমুল হক। হালসা ডিগ্রি কলেজ থেকে সে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।

হতদরিদ্র কৃষক আজিজের এক ছেলে নাজমুল আর ছোট মেয়ে আরজিনা খাতুন। তাদের ঠিকমতো সংসার চলে না, তার ওপরে মেয়েটি প্রতিবন্ধী।

মেয়েটি মাজিহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।

ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালাতে পারেনি তার পরিবার। তবে নাজমুল নিজের প্রচেষ্টায় এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় লেখাপড়া চালিয়ে যায়। অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর প্রচেষ্টায় উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়েছে সে। অভাবের কারণে ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে।

নাজমুলের মা নাসিমা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, ‘সংসার ঠিকমতো না চললেও ছেলেকে উচ্চশিক্ষা দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। সে লেখাপড়া ভালো করছে। পড়াশোনার খরচ যোগাতে নাজমুল মাঠেও কাজ করতো এবং প্রাইভেট পড়াতো।
নাজমুলের মা নাসিমা খাতুন ও প্রতিবন্ধী বোন আরজিনা খাতুন।  ছবি: বাংলানিউজ
তিনি বলেন, ‘নাজমুল ভালো ফলাফলের জন্য তার শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার ছেলের পড়ালেখার জন্য শিক্ষকরা অনেক সহযোগিতা করেছেন। বিনা পয়সায় তাকে প্রাইভেট পড়িয়েছেন। টাকার অভাবে তাকে আমরা বইও কিনে দিতে পারেনি। ’

নাজমুল বাংলানিউজকে জানায়, ‘জীবনের লক্ষ্য হচ্ছে বিসিএস ক্যাডার হয়ে নিজের দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা এবং পরিবারের কষ্ট দূর করা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চাই। এজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে অর্থের অভাবে আমার পড়ালেখা হবে কিনা সেটাও জানি না। ’

হালসা কলেজের উপাধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘নাজমুল এ কলেজের গর্ব। সে মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। সে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। এ কলেজ থেকে তাকে বিভিন্ন সময়ে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে। নাজমুলের পরিবারের কাছ থেকে সাধারণ কোনো পরীক্ষার ফি নেওয়া হতো না। এমনকি এইচএসসি পরীক্ষার ফি কলেজ কর্তৃপক্ষ বহন করেছে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় সময় খোঁজ নিয়ে জানতে পারতাম নাজমুল কলেজে আসেনি।  পরে জানতে পেরেছে লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করার জন্য সে অন্যের বাড়িতে কামলা খাটতে গিয়েছে। তবে অর্থের অভাবে উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা মেধাবী মুখ নাজমুলের। ’

এবছর যশোর শিক্ষা বোর্ডের অধিনে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার তিন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। তার মধ্যে নাজমুল একজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।