ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

ঝুঁকিতে কুড়িগাঁতি বিদ্যালয় ছাড়ছে শিক্ষার্থীরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
ঝুঁকিতে কুড়িগাঁতি বিদ্যালয় ছাড়ছে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান। ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা বেঞ্চে বসে রয়েছে। বেঞ্চের সামনে নির্ধারিত বইয়ের পাতা খোলা। তাদের মনযোগ স্যারের দিকে। কারণ প্রিয় স্যার তাদের পাঠদান করাচ্ছিলেন। শ্রেণিকক্ষের ভেতরের দেওয়ালের ওপরের দিকটা একপাশে রঙিন ছবি লাগানো। জানালা দিয়ে তাপ ঝরানো আলোকছটা ঝলমল করছিল।

কিন্তু ঘরের ওপরের দিকটাতে চোখ পড়তেই গা শিউরে উঠলো। ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের পড়ার শ্রেণিকক্ষ মারাত্মকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

আর সেই ঝুঁকি মাথায় নিয়েই পাঠদান কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। কারণ স্কুল ভবনের এ অবস্থা ঠিক বা মেরামত করার ক্ষমতা তাদের নেই। তবে সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অনেক আগেই অবহিত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

স্কুলটির নাম কুড়িগাঁতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বগুড়ার ধুনট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে এক নির্ভৃত পল্লিতে ১৯৩০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই সময় টিনের দুই চালা ঘর নিয়ে বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়।  

এভাবে দীর্ঘ বছর পার হয়েছে। পরে ২০০৬ সালে নির্মাণ করা হয় এক তলা বিদ্যালয় ভবন। যা তিনটি কক্ষ বিশিষ্ট। এরপর আবার থমকে যায় স্কুলের উন্নয়ন কাজ। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

স্কুলের জরাজীর্ণ অবস্থা শ্রেণি কক্ষগুলোর অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজরদারি নেই বলেও অনেকের অভিযোগ।

স্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন টিনের বানানো চার কক্ষ বিশিষ্ট ঘরটি জরাজীর্ণ। তিনটি কক্ষের দরজায় তালা ঝুলছে। একতলা ভবনের তিনটি ও টিনের বানানো ঘরের জরাজীর্ণ একটি কক্ষ শিক্ষার্থীদের দু’ভাগে বিভক্ত করে পাঠদান কর্মকাণ্ড চলছে।

 সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৫০জন। শিক্ষক রয়েছেন ছয়জন। এসব শিক্ষকদের বসার ঘরের অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। আর সেই ঝুঁকিপূর্ণ খারাপ অবস্থার মধ্যে থেকেই পাঠদান কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র জাহিদ হাসান বাংলানিউজকে বলে, ‘প্রতিদিন সতর্কতার সঙ্গে ও শঙ্কা নিয়ে ক্লাস শুরু করি। তবু ছাদের পলেস্তার খসে পড়ে চোখে বালি যায় ও কমবেশি আঘাত লাগে। স্কুলের ঘরের খারাপ অবস্থার কারণে অনেক ছেলে-মেয়ে অন্য স্কুলে চলে গেছে’।

কুড়িগাঁতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বাংলানিউজকে জানান, বিদ্যালয়ের বেহাল অবস্থার কথা একাধিকবার শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই পাঠদান কর্মকাণ্ড চালানো ছাড়া তো আর কোনো উপায় নেই বলেও জানান এই প্রধান শিক্ষক।  

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (টিও) কামরুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণের অনুমতি পাওয়া গেছে। তবে এখনও অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৮
এমবিএইচ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।