ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রেজাল্ট

এসএসসিতে পাস না করায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১৮
এসএসসিতে পাস না করায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা দিচ্ছেন অভিভাবকরা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হওয়ায় বরিশালের জগদ্বীশ স্বারস্বত বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষ তালাবদ্ধ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা।

এ সময় অভিভাবকরা ক্ষোভে ফেটে পড়লে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

রোববার (মে ০৬) দুপুরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফলাফল দেখতে এসে বেশ কিছু শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হওয়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সালমা কবির জানান, ‘বেশ উৎসাহ নিয়ে পরীক্ষার ফলাফল জানতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আসেন।

দুপুর ১টার পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কক্ষের পাশে দেয়ালে ফলাফল টানিয়ে দেওয়া হলে বেশ কিছু শিক্ষার্থী কান্নায় ভেঙে পড়েন। যার মধ্যে অকৃতকার্য ও আশানুরুপ ফলাফল করতে না পারা শিক্ষার্থীর সংখ্যাই বেশি।

ফলাফল বিপর্যয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবকরাও ক্ষুব্ধ হন। পরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা দিয়ে দেওয়া হয় ও তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

তিনি বলেন, পরীক্ষার আগ মুহুর্তে নিয়মিত ক্লাস হয়নি বিদ্যালয়ে। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক কোচিং ক্লাসের নামে ১৫শ টাকা করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করেন। যার বিনিময়ে কলেজ ছাত্রদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের কোচিং করানো হয়, যারা সৃজনশীলের বিষয়ে কিছুই শিক্ষার্থীদের বোঝাতে পারেনি। তবে প্রধান শিক্ষক শাহ আলম তাকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘ফলাফল খারাপ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা কক্ষে তালা দিলেও তিনি ঘটনার সময় সেখানে ছিলেন না।

আর ফলাফল খারাপ হওয়ার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন, মাত্র চার মাসের মতো হয়েছে আমি যোগদান করেছি। যোগদানের পরেই দেখতে পেয়েছি, এবারে তেমন কোনো শিক্ষার্থীই এ প্লাস পাওয়ার মতো ছিলো না। সে হিসেব করেই পরীক্ষার্থীদের পড়াশুনায় বাড়তি খেয়াল রাখতে হয়েছে। তারপরেও যে ফলাফল হয়েছে তা সন্তোষজনক। আর কোচিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, কোচিং ক্লাস করানো হয়েছে এটা ঠিক। তবে তার জন্য ১৫শ’ টাকা কোনো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়নি।

এদিকে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর মজিদ, এমদাদুল্লাহসহ অন্য শিক্ষকরা জানান, ১৫শ’ টাকার বিনিময়ে যে কোচিং করানো হয়েছে, তা বাহিরের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের এনে করানো হয়েছে। কারণ প্রধান শিক্ষকের হিসেব অনুযায়ী আমরা অজ্ঞ। তাই এ বিষয়ে তারা কিছু বলতে পারছেন না।

তারা জানান, গত বছর এ বিদ্যালয় থেকে ২শ জনের মতো শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। যেখানে ১৮ জন জিপিএ-৫ অর্জন করে। পাশাপাশি অকৃতকার্য হয়েছে মাত্র ১৮ জন। সেখানে এ বছর ১৮৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৪৬ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে আর জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র চারজন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৮
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।