ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ে যেতে প্রয়োজন কারিগরি শিক্ষা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ে যেতে প্রয়োজন কারিগরি শিক্ষা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ/ ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে বা উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ে যেতে হলে বাংলাদেশকে অবশ্যই কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ইস্টওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড (ইডব্লিউএমজিএল)-এর সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।

‘জাতীয় উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব’ শীর্ষক এ গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে যৌথভাবে দৈনিক কালের কণ্ঠ ও টেকনিক্যাল এডুকেশন কনসোর্টিয়াম অব বাংলাদেশ (টেকবিডি)।

কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ প্রাইভেট পলিটেকনিক্যাল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিসুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম মাহবুব, টেকনিক্যাল এডুকেশন কনসোর্টিয়াম অব বাংলাদেশ (টেকবিডি)-এর প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আজিজ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম, ওয়ালটন বাংলাদেশ’র নির্বাহী পরিচালক এস এম জাহিদ হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মালেক, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলী সাজু, মেট্রোসেম গ্রুপের ব্যবস্থপনা পরিচালক মো. শহীদ উল্লাহ, ড্যাফোডিল গ্রুপের চেয়ারম্যান সবুর খান প্রমুখ।
গোলটেবিল আলোচনার অতিথিরা/ ছবি: শাকিল আহমেদশিক্ষামন্ত্রী বলেন, জাপান, সিঙ্গাপুর, চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ইউরোপ-আমেরিকার দেশগুলোতে শিক্ষিত লোকের ৬৫ ভাগ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত। কারিগরি জ্ঞান দিয়েই তারা উন্নতির স্বর্ণশিখরে পৌঁছেছে। সেখানে আমাদের মাত্র ১৪ ভাগ লোক কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত। সুতরাং উন্নত বিশ্বের সমপর্যায়ে পৌঁছাতে হলে আমাদেরও ৬৫ ভাগ লোককে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে।

কারিগরি শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশে এখনো নেতিবাচক ধারণা আছে উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ আরও বলেন, পলিটেকনিক্যালে পড়া কোনো ছেলের সঙ্গে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে অভিভাবকরা আগ্রহী হতেন না। এখনো বিষয়টি প্রায় একই রকম রয়ে গেছে। এই মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে। স্বল্পশিক্ষিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে।

মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি উপলব্ধি করেই আমাদের সরকার কারিগরি শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছে। অতীতে যেখানে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। এখন সেখানে ১৪ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। ২০২০ সালের মধ্যে এটিকে ২০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। এ ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তরাও এগিয়ে আসছেন।

কারিগরি শিক্ষায় বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মুনাফা অর্জনের চেয়ে দেশের সার্বিক কল্যাণে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আপনারা যখন দেশের সার্বিক কল্যাণের কথা চিন্তা করবেন, তখন আলটিমেটলি মুনাফাও আসবে। যদি কেবল মুনাফার চিন্তা মাথায় থাকে, তাহলে দেশও এগোবে না, আপনারাও এগোতে পারবেন না।

শিক্ষাসচিব মো. আলমগীর বলেন, আমাদের দেশে সরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজের সংখ্যা মাত্র ৪৫টি। কিন্তু বেসরকারি পলিটেকনিক্যাল কলেজের সংখ্যা সাড়ে ৪শ’র মতো। সুতরাং বেসরকারি উদ্যোক্তারা কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন-এ কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আশ্বস্ত করছি, যে কোনো প্রয়োজনে আপনারা আমাদের কাছে আসবেন অথবা আমাদের স্মরণ করবেন, আমরা আপনাদের কাছে ছুটে যাব।

কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অশোক কুমার বিশ্বাস বলেন, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুরসহ যে সমস্ত দেশ টেকনোলজিক্যাল অর্থনীতিতে এগিয়ে গেছে, তাদের কারিগরি শিক্ষার গড় হার ৪৪ শতাংশ। সেখানে আমরা কেবল অর্জন করতে পেরেছি ১৪ শতাংশ। দক্ষ লোক ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নতি অসম্ভব। বিদেশ থেকে এক্সপার্ট লোক এনে দেশ উন্নতি করতে পারে না। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন নিজস্ব দক্ষ জনশক্তি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৭
এজেড/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।