ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

শিক্ষা

চক্রান্তের শিকার ঢাবি শিক্ষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৭
চক্রান্তের শিকার ঢাবি শিক্ষক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: নিজ বিভাগ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করে নিজেই চক্রান্তের শিকার উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবু মুসা মো. আরিফ বিল্লাহ।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) ঢাবির এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগের এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করার অভিযোগ এনে শাস্তি প্রদান করা হয়।

যদিও অভিযোগটি প্রথমে কটুক্তির অভিযোগ ছিলো ,পরে পরিবর্তন করে ইভটিজিং করার অভিযোগ করা হয় বলে দবি করেন আরিফ বিল্লাহ।

তবে এই অভিযোগটি কটুক্তির ছিল বলে বাংলানিউজের কাছে স্বীকার করেছেন বিভাগের ছাত্র উপদেষ্টা সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আহসানুল হাদী। তিনি বলেন, ‘ইভটিজিং ছিল না, তিনি বিভিন্ন মন্তব্য করেন। ’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্ত্যব্যে আরিফ বিল্লাহ বলেন, আমি বিভিন্ন সময়ে বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি, অন্যের বই নিজের নামে প্রকাশ করা, ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাবের আর্থিক হিসাব সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছি। গত ৯ অক্টোবর আমি উপাচার্য বরাবর সাবেক প্রক্টর অধ্যপক সাইফুল কর্তৃক আমার আলমারি নিয়ে যাওয়া নিয়ে অভিযোগ দিয়েছি। এর পরে ১০ অক্টোবর আমার বিরুদ্ধে ছাত্রীকে কটুক্তি করার অভিযোগ এনে তড়িঘড়ি করে ১২ অক্টোবর বিভাগের মিটিং ডাকা হলো। সেখানে সেটি ইভটিজিং হিসেবে দেখিয়ে একতরফা ভাবে আমাকে ক্লাস থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এসময় আমি দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করেছি। মিটিং এর আগেই ডিপার্টমেন্টের নামে ভুয়া মেইল আইডি দিয়ে আমার নামে মিথ্যা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়।

অভিযোগকে পরিকল্পিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৈঠকে চেয়ারম্যান আবদুস সবুর একটা দরখাস্ত সবাইকে পাঠ করে শোনান। যেখানে কটুক্তি করেছে এমন কোনো শব্দ ছিলোনা। তখন আমি দরখাস্তের একটা কপি চাইলে আমাকে কোনো কপি দেওয়া হবেনা বলে জানান। আমি কপি চেয়েছি কারণ পরে এই দরখাস্ত না জানি আবার পাল্টে দেওয়া হয়। আমাকে কপি দেওয়া হয়না। এই সময় বিভাগের চেয়ারম্যান বলেন, এই দরখাস্তে মেয়ে তো শাস্তির জন্য আবেদন করেননি। এই সময় পেছনে বসা  সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান বলেন, শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। নিচ থেকে ২ নাম্বার লাইনে বাম পাশে শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। এই সময় আমি বললাম আপনি পেছন থেকে কিভাবে দেখলেন কোথায় শাস্তির কথা উল্লেখ আছে। এই সময় চেয়ারম্যান বৈঠক মূলতবি করে করেন।  

সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা অভিযোগের কথা বলতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তিনি বলেন, বিভাগে একজন ছাড়া সবাই আমার ছাত্র। আমার পদোন্নতির সময় আসলে বিভিন্ন অভিযোগ এনেছে তারা। আমার অধ্যাপক হওয়ার আবেদন করার আবেক্ষাধীন বিষয়টি আটকে দেওয়া হয়। বিভাগের শিক্ষকদের মত উপেক্ষা করে এখন উপাচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছে আমি নাকি ইভটিজিং করেছি।

সূত্র জানায়, এ অভিযোগটি করেছে বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের এক ছাত্রী।

ওই ব্যাচের একধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শ্রেণীকক্ষে এই রকম কোনো ধরনের ইভটিজিং কটুক্তির ঘটনা ঘটেনি। তবে ক্লাস চলাকালীন সময়ে চার-পাঁচ জন ছেলে-মেয়ের একটি গ্রুপ নিয়মিত পেছনে বসত। দেরি করে ক্লাসে আসত। ফেসবুকিং করতো। এসময় শিক্ষক আরিফ বিল্লাহ তাদেরকে পড়ায় মনোযোগ দিতে বলেন। পেছনের সারি থেকে সামনের দিকে নিয়ে বসান। ক্লাসে মনোযোগী হতে বলেন। বিভাগের শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ বিরোধকে কাজে লাগিয়ে এই ঘটনাকে ইভটিজিং  এর অভিযোগ সাজানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০১৭
এসকেবি/বিএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।